রাইজিংবিডি: আমার সাংবাদিকতা জীবনের প্রথম পাঠশালা
Published: 27th, April 2025 GMT
২০১৩ সাল, আমার মফস্বল সাংবাদিকতা জীবনের সূচনালগ্ন। লেখালেখির অভ্যাস আগে থেকেই ছিল কিন্তু সংবাদ সংগ্রহ, যাচাই, লেখা ও প্রকাশের প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হই রাইজিংবিডির মাধ্যমে। এটি শুধু আমার প্রথম কর্মস্থলই নয়, এটি ছিল আমার সাংবাদিকতার প্রথম পাঠশালা।
রাইজিংবিডির মফস্বল ডেস্কের সিনিয়রদের সহযোগিতা এবং নির্দেশনা আমাকে পেশাগতভাবে বেড়ে উঠতে দারুণভাবে সহায়তা করেছে। শাহ আব্দুল মতিন টিপু ভাই হয়ে উঠেছিলেন আমার প্রথম দীক্ষাগুরু। আর মাহাবুবুল আলম সোহাগ ও কামরুজ্জামান ভাই ছিলেন সাহস জোগানোর প্রেরণা।
তৎকালীন উপদেষ্টা সম্পাদক উদয় হাকিমের নেতৃত্বে যে পেশাদার ও দূরদর্শী পরিবেশ পেয়েছি, তা আজও আমার পথচলায় আলোকবর্তিকা হয়ে আছে।
মফস্বল সাংবাদিকতা মানেই অসংখ্য চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক চাপ, সামাজিক প্রতিবন্ধকতা, এমনকি ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ঝুঁকিও মোকাবিলা করতে হয়। তবু এই পেশার একটাই সৌন্দর্য- সত্য বলার সুযোগ।
স্থানীয় মানুষের জীবন, সমস্যা, সাফল্য ও সংগ্রাম জাতীয় পাঠকের সামনে তুলে ধরার দায়িত্ব যেন এক নীরব যুদ্ধ, আর সেই যুদ্ধে আমার প্রথম হাতিয়ার ছিল রাইজিংবিডি।
এই প্ল্যাটফর্মে বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন করতে পেরেছি। যেগুলোর কিছু সমাজে আলোড়ন তুলেছে। বদল এনেছে বাস্তবতায়। এ থেকেই শিখেছি, সাংবাদিকতা কেবল তথ্য পরিবেশনের কাজ নয়, এটি সমাজ বদলেরও একটি শক্তিশালী মাধ্যম।
রাইজিংবিডির প্রকাশক, নির্বাহী সম্পাদক, বার্তা সম্পাদক এবং মফস্বল সম্পাদক- প্রতিটি স্তরে এমন এক অসাধারণ টিম কাজ করে, যারা শুধু পেশাদারই নন বরং মমতাময় সহকর্মী। তাদের বন্ধু-সুলভ আচরণ, সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব এবং কাজের প্রতি আন্তরিকতা যেকোনো মফস্বল সাংবাদিককে উৎসাহিত করে তোলে। আমি ভাগ্যবান, এই টিমের সঙ্গে পথচলার সুযোগ পেয়েছি।
আজও আমি শিখছি, প্রতিদিন। রাইজিংবিডির সঙ্গে সেই প্রথম পদক্ষেপ আমাকে যে ভিত্তি দিয়েছে, তা আজও দৃঢ়ভাবে টিকে আছে আমার কাজের প্রতিটি স্তরে। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা চিরন্তন।
ঢাকা/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র প রথম আম র প ব দ কত
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪ নং সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শতবর্ষ পূর্তি মানে শুধু সময়ের হিসাব নয়,এটি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আলোকিত করার এক দীর্ঘ ইতিহাস। সেই ইতিহাসের গৌরবময় একশ বছর পূর্ণ করল ৪৪ নং সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এ উপলক্ষে বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জনাব রোকসানা বেগমের নেতৃত্বে, সকল শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হলো বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বের করা হয় একটি বর্ণাঢ্য র্যালি। ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে শতাধিক শিক্ষার্থী সারিবদ্ধভাবে অংশ নেয়। বিদ্যালয়ের আশপাশের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে র্যালিটি পুনরায় বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।
শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে ভেসে ওঠা শিক্ষা, শৃঙ্খলা ও ভবিষ্যৎ গড়ার প্রত্যয়দীপ্ত স্লোগান পুরো এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে দেয় উৎসবের আবহ। র্যালি শেষে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক ফজিলা ইয়াসমিন। তিনি বিদ্যালয়ের শুরুর দিনের স্মৃতি স্মরণ করে বলেন, “এই বিদ্যালয় শুধু একটি প্রতিষ্ঠান নয়—এটি এই এলাকার স্বপ্নের ঠিকানা। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে অসংখ্য শিক্ষার্থী সমাজের নানা ক্ষেত্রে আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছে।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক রোকসানা বেগম, আজমিনা খাতুন, নুরজাহান আক্তার রত্না, শায়লা শারমিন, গোলাম হোসেন ও মফিজুল ইসলাম সহ স্কুল অ্যাডহক কমিটির সদস্য সাইমুম ইসলাম,প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইয়াসমিন আক্তার ও খাদিমুন্নাহার।এছাড়াও বিপুলসংখ্যক অভিভাবক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
পরে শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গান, নৃত্য ও আবৃত্তিতে ফুটে ওঠে শিক্ষা, দেশপ্রেম, শৈশব ও আগামীর স্বপ্ন। শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা উপভোগ করেন অতিথি, শিক্ষক ও অভিভাবকেরা। অভিভাবকদের মুখে দেখা যায় গর্বের ঝিলিক।
বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রোকসানা বেগম বলেন, ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যালয় একশ বছরের দীর্ঘ পথচলা অতিক্রম করেছে। এই পথচলা আমাদের জন্য যেমন গর্বের, তেমনি দায়িত্বেরও। প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আলোকিত করার যে দায়িত্ব আমরা বহন করে আসছি, তা আরও নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।
শিক্ষার্থীদের মেধা, মনন ও মূল্যবোধ গঠনে আধুনিক শিক্ষার পাশাপাশি মানবিক শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শতবর্ষের এই শিক্ষা ঐতিহ্য আগামী প্রজন্মের জন্য আলোর বাতিঘর হয়ে থাকবে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, শতবর্ষ ধরে সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এ অঞ্চলে প্রাথমিক শিক্ষার ভিত গড়ে তুলেছে। ভবিষ্যতেও মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে আধুনিক পাঠদান, সহশিক্ষা কার্যক্রম, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক চর্চা আরও জোরদার করা হবে।
অভিভাবকরা আলোচনায় বলেন, এই বিদ্যালয় থেকেই শিক্ষা নিয়ে এলাকার বহু শিক্ষার্থী আজ ডাক্তার, প্রকৌশলী, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা ও সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।
শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মিলিত অংশগ্রহণে শতবর্ষ পূর্তির এই উৎসব পরিণত হয় এক স্মরণীয় মিলনমেলায়। দীর্ঘ পথচলার গর্ব হৃদয়ে ধারণ করে নতুন শতকে আরও এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ে শেষ হয় ৪৪ নং সনমান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন।