সোনারগাঁয়ে বাবাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার অভিযোগ সন্তানদের বিরুদ্ধে
Published: 27th, April 2025 GMT
সোনারগাঁয়ে পিরোজপুর ইউনিয়নের আষাঢ়িয়াচর এলাকায় নিজ বাবাকে পিটিয়ে মারাত্মক জখম ও রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে ছেলে মেয়েদের বিরুদ্ধে।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে বাড়ির সামনে প্রকাশ্যে রাস্তায় ফেলে আষাঢ়িয়াচর গ্রামের ৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধ আব্দুর রহিমকে উপর্যুপরি লাথি মেরে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে রক্তাক্ত করে ছেলে জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও মেয়ে হালিমা আক্তার।
বৃদ্ধ আব্দুর রহিমককে ছেলে মেয়েদের মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে ছেলে মেয়েদের বিচারের দাবি তোলেন নেটিজেনরা।
এলাকাবাসী জানায়, আষাঢ়িয়াচর গ্রামের ৭০বছর বয়সী বৃদ্ধ আব্দুর রহিম প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে তাদের সংসারে অশান্তি শুরু হয়। সম্প্রতি আব্দুর রহিম তাদের বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন।
এ নিয়ে ছেলে মেয়েদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। রবিবার দুপুরে বৃদ্ধ বাবাকে একা পেয়ে বাড়ির বিক্রির কারণ জানতে চান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ছেলে জহিরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও মেয়ে হালিমা আক্তার বাড়ির সামনে পিটিয়ে আহত করে।
আহত আব্দুর রহিমের ডাক-চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে আসলেও মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল জলিলসহ এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হলে ছেলে মেয়েরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
পিরোজপুর ইউনিয়ন বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল জলিল বলেন, তাদের গ্রামে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা এই প্রথম। নেট দুনিয়ায় বাবাকে ছেলে মেয়েদের মারধরের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় এলাকাবাসী হিসেবে আমরা লজ্জিত।
মারধরের সময় তাদের বাধা দিতে গিয়ে তিনি হুমকির শিকার হয়েছেন। পরবর্তীতে সন্তানদের কাছ থেকে বাবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ছেলে জহিরুল ইসলাম বলেন, তাদের বাড়ি তার বাবা বিক্রি করে দিতে চান। এ বাড়ি বিক্রি করে দিলে তাদের বসবাসের কোন স্থান থাকবে না। বাড়িটি বিক্রি না করার জন্য তার বাবাকে অনুরোধ করেন। অনুরোধ না শোনার কারনে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন।
তবে তার বাবাকে মারধরের জন্য তারা অনুতপ্ত। সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সন্তানদের বিরুদ্ধে বাবাকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা শুনেছি। এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ এল ক ব স ম রধর র ল ইসল ম স ন রগ
এছাড়াও পড়ুন:
সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর লম্বাশিয়া পাহাড়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করল প্রশাসন
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের লম্বাশিয়া পাহাড় ধ্বংস করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। লম্বাশিয়া পাহাড়টি বালু প্রকৃতির, যার ফলে এ পাহাড় ঘেঁষে যাওয়া সাতগরিয়া ছড়ার পানির পথ পরিবর্তন করে দেয় বালুখেকোরা। আস্তে আস্তে ভেঙে পড়ে পাহাড়। শ্যালো মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা হয় বালু। এভাবেই চলছে দেড় যুগ ধরে।
এ ছড়ায় শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে এক কিলোমিটারজুড়ে পাহাড়ের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। রোববার দৈনিক সমকালে ‘লম্বাশিয়া পাহাড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই’ শিরোনাম সংবাদ প্রকাশ হয়। এ সংবাদ প্রকাশের এক দিন পর রোববার দুপুরে লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় অবৈধভাবে উত্তোলিত বালুর ঢিবি নষ্ট করে দেওয়া হয়। বালু উত্তোলনের জন্য ব্যবহৃত অবৈধভাবে মজুদ করা পানি কেটে বের করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত রাস্তা কেটে গর্ত তৈরি করে দেওয়া হয়, রাস্তার মাঝে পিলার পুঁতে কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া হয়।
লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল ও সহকারী বন সংরক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। সঙ্গে ছিলেন চুনতির রেঞ্জ অফিসার মো. আবীর হাসান, সাতগড় বিটের বিট অফিসার মহসিন আলী ইমরানসহ থানা পুলিশ ও বনবিভাগের সদস্যরা।
২০২৩ সলের ২৪ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে ‘অবৈধ বালু উত্তোলন চলছেই, কিলোমিটার জুড়ে ক্ষতচিহৃ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের পরও বনবিভাগ ও প্রশাসন রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। তখনই বন্ধ হয়ে যায় অবৈধ বালু উত্তোলন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আরেক দল দূর্বৃত্ত কাঁটাতার তুলে আবারও অবৈধ বালু উত্তোলন করে।