আরাকানের রোহিঙ্গা সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছে জামায়াতে ইসলামী। রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ সফরে আসা চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বৈঠকে এ প্রস্তাব দেয় দলটি।

নিজ ভূমিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে চীনের সহায়তা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো.

তাহের বলেন, জামায়াত আরাকানে রোহিঙ্গা সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা নিয়ে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছে। চীন এখানে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের বড় ধরনের অংশীদারিত্ব রয়েছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিনিধিরা বলেছেন, জামায়াতের প্রস্তাবের বিষয়ে বেইজিং সরকারকে বলবেন।

বৈঠকে সংস্কার এবং নির্বাচন নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডা. তাহের। তিনি বলেন, চীনা প্রতিনিধিরা জানতে চেয়েছিল, নির্বাচন কখন কীভাবে হতে পারে। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের যে সময়সীমা দিয়েছেন, তা জামায়াত সমর্থন করে কি-না? চীনা প্রতিনিধিরা বলেছেন, বেইজিং অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে একই নীতি থাকবে।

জামায়াত নায়েবে আমির বলেন, চীন বাংলাদেশে বৃহত্তম বিনিয়োগকারী। তিস্তা পানি প্রকল্প, দ্বিতীয় সেতু, গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পে দেশটিকে বিনিয়োগের অনুরোধ করা হয়েছে। আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। এই অঞ্চলে কেউ যেন কারও প্রতি রক্তচক্ষু দেখাতে না পারে। নিরাপত্তা ভারসাম্যের বিষয়ে মতবিনিময় হয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিতে অনুরোধ করা করা হয়েছে। 

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর প্রধান পেং জিউবিনের নেতৃত্বে দলটির নেতারা বৈঠকে অংশ নেন। 

জামায়াতের প্রতিনিধিদলে ছিলেন- সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান, এহছানুল মাহবুব যোবায়ের, প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ, প্রতিনিধি দলে ছিলেন নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, নুরুল ইসলাম বুলবুল। 

ইসলামী আন্দোলন সঙ্গে বৈঠক 

জামায়াতের আগে চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গেও বৈঠক করেন চীনা প্রতিনিধিরা। চলমান রাজনীতি, তারুণ্যের ভাবনা, সংস্কার, বিনিয়োগ আলোচনা হয়েছে বলে ইসলামী আন্দোলনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ নিয়ে ইসলামী আন্দোলনের অবস্থান ও প্রত্যাশা নিয়ে মতবিনিময় হয়েছে।

দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীর নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেন আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ড. বেলাল নূর আজিজী, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি আতিকুর রহমান মুজাহিদ প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র প রস ত ব ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

সমকালে সংবাদ প্রকাশের পর লম্বাশিয়া পাহাড়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করল প্রশাসন

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চুনতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের লম্বাশিয়া পাহাড় ধ্বংস করছে স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। লম্বাশিয়া পাহাড়টি বালু প্রকৃতির, যার ফলে এ পাহাড় ঘেঁষে যাওয়া সাতগরিয়া ছড়ার পানির পথ পরিবর্তন করে দেয় বালুখেকোরা। আস্তে আস্তে ভেঙে পড়ে পাহাড়। শ্যালো মেশিন দিয়ে উত্তোলন করা হয় বালু। এভাবেই চলছে দেড় যুগ ধরে। 

এ ছড়ায় শ্যালো মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের কারণে এক কিলোমিটারজুড়ে পাহাড়ের ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। রোববার দৈনিক সমকালে ‘লম্বাশিয়া পাহাড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই’ শিরোনাম সংবাদ প্রকাশ হয়। এ সংবাদ প্রকাশের এক দিন পর রোববার দুপুরে লোহাগাড়া উপজেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় অবৈধভাবে উত্তোলিত বালুর ঢিবি নষ্ট করে দেওয়া হয়। বালু উত্তোলনের জন্য ব্যবহৃত অবৈধভাবে মজুদ করা পানি কেটে বের করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত রাস্তা কেটে গর্ত তৈরি করে দেওয়া হয়, রাস্তার মাঝে পিলার পুঁতে কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া হয়। 

লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাজমুন লায়েল ও সহকারী বন সংরক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়। সঙ্গে ছিলেন চুনতির রেঞ্জ অফিসার মো. আবীর হাসান, সাতগড় বিটের বিট অফিসার মহসিন আলী ইমরানসহ থানা পুলিশ ও বনবিভাগের সদস্যরা।

২০২৩ সলের ২৪ ডিসেম্বর দৈনিক সমকালে ‘অবৈধ বালু উত্তোলন চলছেই, কিলোমিটার জুড়ে ক্ষতচিহৃ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। ওই সংবাদ প্রকাশের পরও বনবিভাগ ও প্রশাসন রাস্তায় কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। তখনই বন্ধ হয়ে যায় অবৈধ বালু উত্তোলন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আরেক দল দূর্বৃত্ত কাঁটাতার তুলে আবারও অবৈধ বালু উত্তোলন করে। 

 

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ