বরগুনায় আপন শ্যালিকাকে (স্ত্রীর ছোট বোন) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ২ শিশুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় ইলিয়াস পাহলান নামের (দুলাভাই) একজনকে ফাঁসি। এছাড়াও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম লাইলাতুল ফেরদৌস আজ রোববার দুপুরে এ আদেশ প্রদান করেন। একইসঙ্গে আসামির শ্যালিকা রিগানকে ধর্ষণ চেষ্টার অপরাধে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দন্ডিত করা হয়। এছাড়া ভিকটিম রিগানকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে গুরতর জখমের অভিযোগে আরও ১০ বছর কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী রিগানের সঙ্গে তার স্বামীর পারিবারিক কলহের জের ধরে মামলা চলছিল। যে কারনে রিগান একমাত্র শিশু কন্যা তাইফাকে নিয়ে বাবার বাড়ি বসবাস করতেন। এ সুযোগে ২০২২ সাল থেকে রিগানের প্রতি কু-নজর পড়ে আপন বড় বোনের জামাই ইলিয়াস পাহলানের। অনৈতিক কাজের জন্য একাধিকবার উত্ত্যক্ত করেও আসছিল রিগানকে। তবে রিগান দুলাভাইয়ের অনৈতিক এ প্রস্তাবে রাজি হননি। এ কারনে শ্যালিকা রিগানের প্রতি ক্ষুব্দ ছিল ইলিয়াস।

২০২৩ সালের ৩ আগস্ট রিগানের মা বেড়াতে যান দুলাভাই ইলিয়াসের বাড়িতে। তাই বাড়িতে একা থাকতে নিরাপত্তাহীনতার কারনে প্রতিবেশী হাফিজুল (১৩) ও ৩ বছরের শিশু কন্যা তাইফাকে নিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। 

এদিকে শ্বাশুড়ি বাড়িতে নেই নিশ্চিত জেনে ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট গভীর রাতে দরজা ভেঙে রিগানের বাড়িতে প্রবেশ করে দুলাভাই ইলিয়াস। এরপর চেষ্টা চালায় রিগানকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতে। কিন্তু রিগান এতে বাধা দেয় এবং একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেন। এ সময় ইলিয়াস রিগানের হাত থেকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রথমে রিগানকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় পাশে ঘুমানো হাফিজুলের ঘুম ভেঙে যায় এবং ইলিয়াসকে বাধা দিলে তাকে কুপিয়ে ঘটনাস্থলেই হত্যা করেন। পরে রিগানের ৩ বছরের শিশু কন্যাকেও কুপিয়ে চলে যায়। 

হাফিজুল একই উপজেলার আয়লা-পাতাকাটা ইউনিয়নের গোলাম খবিরের ছেলে। ওইদিন হাফিজুল খালার বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলো।

পরদিন সকালে প্রতিবেশীরা গিয়ে হাফিজুলের মরদেহ এবং রিগান ও তার মেয়েকে গুরুত্বর জখম অবস্থায় দেখতে পায়। পরে বরগুনা থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হাফিজুলের মরদেহ উদ্ধার এবং রিগান ও মেয়ে তাইফাকে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রিগান ও তার মেয়েকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হলে, সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মেয়ে তাইফা মারা যান।

এদিকে ঘাতক ইলিয়াস রাতে কুপিয়ে বরগুনা শহরের আবাসনে গিয়ে তার নিজের বাসায় ঘুমান। সকালে হত্যার খবর পেয়ে অন্যান্য আত্মীয় স্বজনের সাথে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় পুলিশ তাকে সন্দেহ করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার কথা স্বীকার করে ইলিয়াস এবং হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র (দা) ওই বাড়ির পুকুর থেকে উদ্ধার করে দেয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বরগ ন বরগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পহেলগাম হামলা: পাঁচ সন্দেহভাজনের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল ভারত

পেহেলগামে ২৬ জন পর্যটককে হত্যার কয়েক দিন পর গতকাল শুক্রবার রাতে জম্মু ও কাশ্মিরজুড়ে পাঁচ সন্দেহভাজনের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী। তবে হামলার ঘটনার পর এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি তারা।

কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, শোপিয়ান, কুলগাম ও পুলওয়ামা জেলায় অভিযান চালায় নিরাপত্তা বাহিনী। গত কয়েক দিনে সন্দেহভাজনদের ওপর দমন অভিযান আরও জোরদার করা হয়েছে।

শোপিয়ানের চোপোটিপোরা গ্রামে শাহিদ আহমেদ কুট্টের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে লস্কর কমান্ডার বলে দাবি করছে ভারত। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কুট্টে গত তিন-চার বছর ধরে সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপ সমন্বয় করার ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

কুলগামের মাতালম এলাকায় আরেক সন্দেহভাজন জাহিদ আহমেদের বাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলওয়ামার মুররান এলাকায় বিস্ফোরক দিয়ে আহসান উল হক নামে একজনের বাড়ি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতের দাবি, আহসান ২০১৮ সালে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদী প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং সম্প্রতি উপত্যকায় ফিরে আসেন।

এহসান আহমেদ শেখ নামে একজন সন্দেহভাজনের দোতলা বাড়িও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তিনি লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য বলে দাবি করা হচ্ছে, যিনি ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে সক্রিয় ছিলেন।

পঞ্চম সন্দেহভাজন হারিস আহমেদের বাড়িও বিস্ফোরক পেতে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলওয়ামার কাচিপোরা এলাকার ওই বাসিন্দা ২০২৩ সাল থেকে সক্রিয় বলে দাবি করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে, পেহেলগাম হামলার মূল সন্দেহভাজন আদিল হুসেন ঠোকর এবং আসিফ শেখের বাড়ি বিস্ফোরণে ধ্বংস করা হয়।

বৃহস্পতিবার অনন্তনাগ পুলিশ পেহেলগাম হামলায় জড়িত সন্দেহে ঠোকর এবং আরও দুইজনের স্কেচ প্রকাশ করেছিল। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অন্য দুই সন্দেহভাজন—হাশিম মুসা ওরফে সুলেমান এবং আলি ভাই ওরফে তালহা আপন ভাই। তারা পাকিস্তানি নাগরিক এবং তাদের গ্রেপ্তারের জন্য ২০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকেলে ভারতের জম্মু ও কাশ্মির রাজ্যের পেহেলগামের বৈসরণ তৃণভূমিতে পর্যটকদের ওপর অতর্কিতে গুলি চালায় একদল সন্ত্রাসী। এই হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়, যাদের মধ্যে একজন নেপালি নাগরিকও ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গুলির শব্দ শুনে পর্যটকরা প্রাণে বাঁচার জন্য ছুটোছুটি শুরু করেন, কিন্তু খোলা প্রান্তরে কোথাও লুকানোর সুযোগ ছিল না।

হামলার পর, সেনাবাহিনী, সিআরপিএফ এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ যৌথভাবে ওই এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে।

পহেলগাম হামলার কঠোর জবাবে ভারত সরকার ইন্দাস পানি চুক্তি স্থগিত করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যারা এই বর্বর হামলার পেছনে রয়েছে, তাদের এবং তাদের মদতদাতাদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৩ মাসে ১৪৫ কোটি টাকা মুনাফা পদ্মা অয়েলের
  • ইসরায়েলের বিমানঘাঁটিতে হুথির হাইপারসনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
  • গাজায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণ অব্যাহত, নিহত আরো অর্ধশতাধিক
  • লম্বাশিয়া পাহাড়ে ধ্বংসযজ্ঞ চলছেই
  • পেহেলগাম হামলা: পাঁচ সন্দেহভাজনের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল ভারত
  • পহেলগাম হামলা: পাঁচ সন্দেহভাজনের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল ভারত
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারালেন ২১২ ফিলিস্তিনি সাংবাদিক
  • বন্দরে অটোচালক মাসুদ হত্যা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বাদীকে হুমকি
  • ক্রস বর্ডার ই-কমার্স ও বাংলাদেশের সম্ভাবনা