নৌকার ভাস্কর্য ভেঙে আওয়ামী লীগ ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু ছাইদ শিকদার। রবিবার (২৭ মার্চ) সকালে পিঞ্জুরী ইউনিয়নের কাকডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ির সামনের পুকুর পাড়ে এ কাণ্ড ঘটান তিনি।

আবু ছাইদ শিকদার ৩০ বছর ধরে পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। আবু ছাইদ শিকদার সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লার ভাগ্নে। 

এলাকাবাসী জানান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু ছাইদ শিকদার কাকডাঙ্গা গ্রামের নিজ বাড়ির সামনের পুকুর পাড়ে ইট, বালু, সিমেন্ট ও রড দিয়ে একটি নৌকার ভাস্কর্য তৈরি করান। আজ রবিবার সকালে তিনি নিজে উপস্থিত থেকে নৌকার ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলেন। এসময় স্থানীয় জনগণ উৎসুক হয়ে ঘটনাটি দেখেন।

আরো পড়ুন:

টেকনাফে নৌকাডুবি: ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার, বিজিবি সদস্য নিখোঁজ

টেকনাফ উপকূলে রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাডুবি, নিখোঁজ ৪০

পিঞ্জুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা কাজী মুক্তা মোবাইল ফোনে বলেন, ‍“আবু সাইদ শিকদার মামা প্রয়াত সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লার প্রভাব খাটিয়ে পিঞ্জুরী ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিনি ব্যাপক দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এখন আওয়ামী লীগের এই দুর্দিনে আবু সাইদ শিকদারের এমন কাণ্ডে আমরা হতভাগ হয়েছি।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা নৌকার ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে আবু ছাইদ শিকদার বলেন, “যার দল করি, তিনি দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পালিয়ে গেছেন। আদর্শ্যচ্যুত হয়েছেন, তাই তিনি পালিয়েছেন। ওই দল আমি আর করব না। আওয়ামী লীগ আর করব না। এ কারণে নৌকার ভাস্কর্য ভেঙে ফেলেছি।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ন ক র ভ স কর য ভ ঙ ন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা

পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে ঢাকায় ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ সময় রোববার দুপুর দেড়টার দিকে তিনি ইতালির রাজধানী রোম ত্যাগ করেন। সোমবার ভোর ৩টায় তাঁকে বহনকারী ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করে।

শনিবার পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। বিশ্বনেতাদের সঙ্গে ড. ইউনূসও পোপের শেষকৃত্যে যোগ দেন। এর আগে শুক্রবার তিনি কাতারের দোহা থেকে রোমে যান।
পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া শেষে শনিবার ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ক্যাথলিক চার্চের শীর্ষস্থানীয় দুই নেতা কার্ডিনাল সিলভানো মারিয়া তোমাসি এবং কার্ডিনাল জ্যাকব কুভাকাড। দুই কার্ডিনাল পোপ ফ্রান্সিসের আজীবন দারিদ্র্য বিমোচন এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম, যুদ্ধ এবং পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন পৃথিবীর স্বপ্নের কথা স্মরণ করেন। তারা ড. ইউনূসের কাজের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তাঁকে পোপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে জীবন উৎসর্গ করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ড. ইউনূস পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গে তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করে বলেন, পোপ ধর্ম-বর্ণনির্বিশেষে সবাইকে আপন করে নিতে পারতেন। তিনি অসাধারণ মানুষ ছিলেন। এ ছাড়া জেনেভায় জাতিসংঘ অফিসের ভ্যাটিকানের সাবেক স্থায়ী পর্যবেক্ষক কার্ডিনাল তোমাসি শনিবার ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া সফর শেষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন তিনি।

এর আগে বিকেলে ভ্যাটিকানের আন্তঃধর্মীয় সংলাপবিষয়ক দপ্তরের প্রধান কার্ডিনাল কুভাকাড রোমে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হোটেলে সাক্ষাৎ করেন। ভারতের কেরালা রাজ্য থেকে কার্ডিনাল হওয়া কুভাকাড জানান, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশে ক্যাথলিক চার্চের উদ্যোগে একটি আন্তঃধর্মীয় সংলাপের আয়োজন করা হবে, যেখানে বিভিন্ন ধর্মীয় নেতা অংশ নেবেন।

ড. ইউনূস বাংলাদেশের বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে অব্যাহত সংলাপের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতির প্রতি দেশের প্রতিশ্রুতি এবং জাতি, ধর্ম-বর্ণ, লিঙ্গনির্বিশেষে সব নাগরিকের অধিকার রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।

এদিকে শনিবার ড. ইউনূসের সঙ্গে রোমে তাঁর হোটেলে সাক্ষাৎ করেন উরুগুয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিও লুবেটকিন। পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার পর তাদের এই সাক্ষাতে তারা পারস্পরিক আগ্রহের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষ করে বর্তমান বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি এবং লাতিন আমেরিকা ও এশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ