নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মামলার রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 27th, April 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার বিচার ১১ বছরেও শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনে এই মানববন্ধনে অংশ নেন নিহতদের স্বজন ও আইনজীবীরা। আজ রোববার আলোচিত এই হত্যার ১১ বছর হলো।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন, মামলার বাদী নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আওলাদ হোসেন, মাহবুবুর রহমান, নিহত তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবু আল ইউসুফ, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সরকার হুমায়ুন কবির, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ফারহানা মানিক প্রমুখ।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সাত খুনের ঘটনা নারায়ণগঞ্জের কলঙ্কিত অধ্যায়। আওয়ামী লীগের গডফাদার ও সাবেক সংসদ শামীম ওসমান এবং তাঁর অন্যতম সহযোগী নূর হোসেন বাংলাদেশের একটি প্রশিক্ষিত বাহিনীকে টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার, প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করান। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেনের (মায়া) জামাতা র্যাব-১১–এর সিইও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) তারেক সাঈদ ও অন্যরা আওয়ামী লীগের মদদপুষ্ট ছিলেন। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের কারণে ৮ বছরেও মামলাটির আপিল নিষ্পত্তি হয়নি। মামলাটি বিলম্বিত করা হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে মামলাটির শুনানির ব্যবস্থা করে রায় কার্যকর করার দাবি জানান তিনি।
মামলার বাদী নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বলেন, সাত খুনের ফলে সাতটি পরিবার তাদের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের ১১ বছর আজ। অথচ এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ঝুলে আছে। দ্রুত রায় কার্যকরে উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, প্রধান বিচারপতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার লামাপাড়া এলাকা থেকে সিটি করপোরেশনের তৎকালীন প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাঁদের সাতজনের মরদেহ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম এবং আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। ২০১৬ সালের ১৬ জানুয়ারি ওই মামলায় নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা (অব্যাহতিপ্রাপ্ত) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ, মেজর আরিফ হোসেন, কমান্ডার এম এম রানা ও সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেনসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন। পরে রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ উচ্চ আদালত আপিল করে। ২০১৭ সালের ২২ আগস্ট নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা বহাল রাখা হয়। বর্তমানে মামলাটি আসামিপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ডেথ রেফারেন্স শুনানির অপেক্ষায় আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নজর ল ইসল ম ন র য়ণগঞ জ ল ইসল ম র সরক র র ক র যকর আইনজ ব আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
পদ্মার খেয়াঘাট ইজারা বন্ধ দাবি চরের বাসিন্দাদের
পদ্মা নদীতে খেয়াঘাট ইজারা দেওয়ার প্রথা বাতিলের দাবিতে রাজশাহীতে সমাবেশ করেছেন চরের বাসিন্দারা। গতকাল রোববার বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে তারা এ দাবি জানান। গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের চর আলাতুলি ইউনিয়নের সহস্রাধিক মানুষ এতে অংশ নেন।
চরের বাসিন্দারা বলছেন, চর আষাড়িয়াদহ ও চর আলাতুলি ইউনিয়নে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। পদ্মা নদী পাড়ি দিতে তারা খেয়াঘাটের ঘাটিয়ালদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। তারা বাড়তি টোল আদায় করছে। পণ্য পরিবহনে নেওয়া হয় অতিরিক্ত টাকা।
বক্তারা বলেন, ইজারার শর্তে জনপ্রতি ৫ টাকা নেওয়ার কথা বলা থাকলেও অতিরিক্ত টোল আদায় করে। মাঝিকেও টাকা দিয়ে নদী পার হতে হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও চরের বাসিন্দা ইমাম হোসেনের ভাষ্য, ঘাটের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলতে গেলে হত্যা করার হুমকি দেওয়া হয়। চর আষাড়িয়াদহ ইউপি পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম ভোলা বলেন, এ অঞ্চলে ঘাটের কোনো প্রয়োজন নেই।
মানববন্ধন শেষে তারা বিভাগীয় কমিশনারকে স্মারকলিপি দেন। এটি গ্রহণ করে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান তাদের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, কমিটি করে মতামত নেওয়া হবে। এর পর প্রতিবেদনটি স্মারকলিপিসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠালে তারা সিদ্ধান্ত নেবে।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মু. রেজা হাসান বলেন, ইজারার মেয়াদ ১১ মে শেষ হবে। এর পর ইউনিয়ন পরিষদের ঘাট চালাবে।