দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বৈষম্য ভারতে, শিকড় নিষ্ঠুর বর্ণপ্রথায়
Published: 27th, April 2025 GMT
আজ থেকে প্রায় তিন দশক আগে, নব্বইয়ের দশকের গোড়ার দিকে হাতে গোনা কয়জন অর্থনীতিবিদই উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন, ভবিষ্যতে শিশুমৃত্যুর হার ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে কমবে। অথচ তখন ভারতের মাথাপিছু দেশজ উৎপাদন শুধু বেশিই ছিল না, বরং বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ছিল দ্রুততর। এমনিতে ভারতে শিশুমৃত্যুর হার নিচের দিকেই থাকে, কিন্তু বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবধান বাড়তে শুরু করলে প্রথম প্রথম ভাবা হতো, এই পার্থক্য ভারতের অনুকূলেই যাবে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঘটল ঠিক উল্টোটা। বাস্তবে ভারতের উল্লম্ফন ঘটল বটে, তবে তা সামনে নয়, পেছনের দিকে।
শেষ পর্যন্ত দুই দশক আগে বিষয়টি যখন ধীরে ধীরে বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করল, প্রথমে তা একধরনের স্বল্পমেয়াদি অসংগতি বলে মনে করা হলো। কারণ, ভাবা হতো, ভারত মাথাপিছু দেশজ উৎপাদনে উচ্চতর অবস্থানে থেকে ও উচ্চ গতির আর্থিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে এবং সামাজিক সুরক্ষায় বড় মাপের ব্যয় করে ও শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের বদৌলতে আজ হোক কাল হোক, বাংলাদেশকে টপকে যাবে। কিন্তু হায়! ভাবলেই সেটি বাস্তব হয়ে যায় না। যা আশা করা হচ্ছিল, প্রকৃতপক্ষে তার বিপরীতই ঘটল। তথ্য–উপাত্ত সাক্ষ্য দিচ্ছে, মানব উন্নয়নের কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ সূচকে বাংলাদেশ ভারতকে অতিক্রম করেছে। এটি শুধু শিশুমৃত্যুর হারেই নয়, বরং সাধারণভাবে শিশু উন্নয়ন থেকে শুরু করে জন্মের সময় বেঁচে থাকার প্রত্যাশিত আয়ু (প্রচলিত শব্দচয়নে গড় আয়ু), স্কুলশিক্ষায় অংশগ্রহণ, লিঙ্গসমতাসহ আরও অন্য সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। কিছু ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশের তুলনায় পেছনে পড়েছে লজ্জাজনকভাবে, যেমন স্যানিটারি বা পাকা পায়খানার ব্যবহার যার বড় দৃষ্টান্ত। বাংলাদেশে ২০১১ সালের মধ্যেই উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগ কার্যত শূন্যে চলে আসে, যদিও ভারতে তা ব্যাপক আকারেই আছে।
আনইকুয়াল বইয়ের প্রচ্ছদ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইমরান খানের ওপর গুলি চালানো নাভিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানের ওপর হামলার প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তিকে দুটি পৃথক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১৫ লাখ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। গুজরানওয়ালার একটি সন্ত্রাসবিরোধী আদালত গত শনিবার এ সাজা ঘোষণা করেছেন।
পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর পিটিআইয়ের বিক্ষোভের সময় এ হামলার ঘটনা ঘটে। নাভিদ বশীর নামের এক বন্দুকধারীর গুলিতে ইমরান খান, সিনেটর ফয়সাল জাভেদসহ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় পিটিআইয়ের একজন কর্মী নিহত হন। পুলিশ ঘটনাস্থলেই প্রধান হামলাকারীকে গ্রেপ্তার করে।
ইমরান খান তখনকার ফেডারেল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ জোট সরকারকে ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। ঘটনাটির প্রথম এফআইআর ৭ নভেম্বর ওয়াজিরাবাদের সিটি থানায় দায়ের করা হয় এবং ১৯৯৭ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় একটি যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠন করা হয়।
সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের বিচারক মোহাম্মদ নাঈম সেলিম গত শনিবার শুনানি শেষে মামলার রায় ঘোষণা করেন। আদালত প্রধান অভিযুক্ত নাভিদকে হত্যা ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে দুটি পৃথক যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। অপর দুই অভিযুক্ত তৈয়ব জাহাঙ্গীর বাট ও ওয়াকাস খালাস পান।
গুজরানওয়ালা কেন্দ্রীয় কারাগারের সুপারিনটেনডেন্টের উদ্দেশে জারি করা সাজা কার্যকরের ওয়ারেন্ট অনুযায়ী, নাভিদকে পাকিস্তান দণ্ডবিধির (পিপিসি) ৩০২বি ধারা (পরিকল্পিত হত্যা) এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনের (এটিএ) ৭এ ধারা (সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য শাস্তি) অনুযায়ী পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।