মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কাজ থেকে অবসর নিলেও নিজের প্রতিষ্ঠা করা ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’-এর মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে উদ্ভাবন ও গবেষণার কাজে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করে থাকেন। কিন্তু নিজের মেয়ে ফোবি গেটসের নতুন চালু করা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তিনির্ভর শপিং অ্যাপ ‘ফিয়া’তে কোনো অর্থ বিনিয়োগ করেননি বিল গেটস। অর্থ বিনিয়োগের পরিবর্তে মেয়েকে ব্যবসাবিষয়ক বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। ফিয়া শপিং অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের খুচরা দাম তুলনা করতে সাহায্য করে। এর ফলে ক্রেতারা সহজেই কম দামে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারেন।

নিজের মেয়ের নতুন শপিং অ্যাপে ইচ্ছা করেই বিনিয়োগ না করার কথা জানিয়েছেন বিল গেটস। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি জানান, বিনিয়োগ করলে ব্যবসাটি নিবিড়ভাবে তদারকি করতেন তিনি। একজন বিনিয়োগকারী হিসেবে কাজ করার পরিবর্তে তিনি ফোবিকে কর্মীদের বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেন এবং তহবিল গঠনের বিষয়টি অন্যদের ওপর ছেড়ে দেন।

আরও পড়ুনবিল গেটসের যেসব ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হয়নি০৫ মার্চ ২০২৫

বিল গেটস সব সময়ই তাঁর সন্তানদের নিজেদের পথ খুঁজো বের করতে উৎসাহ দেন। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেন, ‘ফিয়ার ওয়েব ব্রাউজার ও অ্যাপ লাইভ হওয়ার পরপরই আমি ভেবেছিলাম, সে নিশ্চয়ই এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করবে। ভাগ্যক্রমে তা হয়নি। আসলে কেনাকাটার বিষয়ে আমি ঠিক টার্গেট ব্যক্তি নই। ফোবি আমার চেয়ে বেশ আলাদা। সে মানুষের সঙ্গে খুব ভালো আচরণ করে। আমরা যখন পারিবারিক ছুটিতে বেড়াতে যাই, তখন আমরা সৈকতে মানুষের থেকে দূরে থাকি। অন্যদিকে ফোবি সমুদ্রসৈকতে গিয়ে মানুষের সঙ্গে দেখা করবে। আমাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে তাদের আমাদের সঙ্গে নিয়ে আসবে।’

আরও পড়ুননিজের যে সিদ্ধান্তের জন্য অনুতপ্ত বিল গেটস২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ফোবি তাঁর স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রুমমেট এবং জলবায়ুকর্মী সোফিয়া কিয়ান্নির সঙ্গে মিলে বিনা মূল্যের এআই-চালিত শপিং অ্যাপ ফিয়া চালু করেছেন। ৪০ হাজারের বেশি খুচরা বিক্রেতা ও প্ল্যাটফর্মের দাম তুলনা করে বিভিন্ন পণ্য কেনার সুযোগ মিলে থাকে ফিয়ার মাধ্যমে।

গত মাসে এক পডকাস্টে বিল গেটস তাঁর সম্পদের ১ শতাংশের কম অংশ তাঁর সন্তানদের দেওয়ার পরিকল্পনা কথা জানিয়েছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেন, উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার চেয়ে সন্তানদের নিজের প্রচেষ্টায় সফল হওয়া উচিত।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

আরও পড়ুনবিল গেটস, স্টিভ জবসদের সন্তানেরা কে কোথায়, কী করেন তাঁরা?১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ন য় গ কর ব ল গ টস

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন বাস্তবায়ন দরকার: তামাং

বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের এখন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং রূপান্তরমূলক নির্বাচন বাস্তবায়ন করা দরকার বলে মনে করছেন ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেকটোরাল অ্যাসিস্ট্যান্স (ইন্টারন্যাশনাল আইডিয়া)-এর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আঞ্চলিক পরিচালক লিনা রিক্কিলা তামাং।

কোন কোন সংস্কারের পর জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হবে, সেসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের চলমান কর্মকাণ্ডের মধ্যে ‎‎রবিবার (২৭ এপ্রিল) ঢাকায় নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসিরউদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিনা রিক্কিলা তমাং তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন।  

সিইসির সঙ্গে সাক্ষাৎতে তাদের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন রিক্কিলা তামাং।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় অস্ট্রেলিয়া

নির্বাচ‌নে সমঝোতার ভিত্তিতে একক প্রার্থী দে‌বে পাঁচ ইসলামী দল

সেখানে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা এখন একটি মুক্ত, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, পাশাপাশি প্রতিনিধিত্বমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান।”

“এটি যেন বাস্তবেই রূপান্তরমূলক সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে পুনর্গঠনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়,” প্রত্যাশা রিক্কিলা তামাংয়ের। 

সাক্ষাৎকালে সিইসির সঙ্গে নির্বাচন প্রস্তুতি ও নির্বাচন ব্যবস্থাপনা সংস্কারসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বলে তুলে ধরে রিক্কিলা তামাং বলেন, “আমরা বুঝতে পেরেছি যে, এখনো কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন, বিশেষ করে এমন কিছু সংস্কার আছে, যেগুলো আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। আমাকে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশনকে বিদ্যমান আইনি কাঠামোর মধ্যেই কাজ করতে হয় এবং তারা আইনের বাইরে যেতে পারে না।”

“কী কী মূল বিষয় অগ্রাধিকার পাবে, তা অনেকাংশে নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্যের ওপর, তারা কীভাবে বাস্তবায়নের বিষয়ে একমত হয়,” যোগ করেন তামাং।

তিনি বলেন, “আমাদের জানানো হয়েছে, আসন্ন জুলাই সনদে যা কিছু সম্মত হবে, তার ওপর ভিত্তি করে নির্বাচন কমিশন পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারবে।”

নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন গঠন করে নির্বাচনের বিদ্যমান আইন পর্যালোচনার ভিত্তিতে সংস্কারের জন্য সুপারিশমালা তৈরি করে তার ওপর রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ ও সরাসরি আলোচনা করছে জাতীয় ঐতমত্য কমিশন।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি। সব কমিশনের সুপারিশমালা ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়ে ৩৫টির মতামত এসেছে। তার ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছে ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে ১৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষ হয়েছে। 

প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা করা রোডম্যাপ অনুযায়ী চলতি বছরের শেষ মাস ডিসেম্বর থেকে পরের বছরের জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অবশ্য একাংশের রাজনৈতিক দল বলছে, পুরো সংস্কার করার পর নির্বাচন দেওয়া হোক; বিএনপিসহ আরেক অংশ বলছে, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে ভোট দেওয়া হোক; সেটি ডিসেম্বর বা তার আগেই হতে পারে। 

ঢাকা/হাসান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ