ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) গতকাল শনিবার দিবাগত রাতে আবারও গোলাগুলি হয়েছে। এ নিয়ে ধারাবাহিকভাবে তৃতীয় রাতের মতো গোলাগুলি হলো। ভারতীয় সেনাবাহিনী আজ রোববার এ কথা জানিয়েছে।

গত মঙ্গলবার কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সম্পর্ক গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে তলানিতে এসে ঠেকেছে। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তান আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন দিচ্ছে। তবে পাকিস্তান ওই হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। এ নিয়ে ভারতের যেকোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দেশটি।

পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজতে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী বড় ধরনের অভিযান চালাচ্ছে। ভারতীয় পুলিশের দাবি, পলাতক বন্দুকধারীদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক।

আজ রোববার ভারতীয় সেনাবাহিনী দাবি করে, নিয়ন্ত্রণরেখায় পাকিস্তানি সেনারা বিনা উসকানিতে গুলি ছুড়েছেন। জবাবে ভারতীয় সেনারা পাল্টা গুলি ছুড়েছেন।

পেহেলগামের ঘটনায় নয়াদিল্লি এরই মধ্যে দুই দেশের মধ্যকার ঐতিহাসিক সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে, পাকিস্তানের সঙ্গে তাদের প্রধান স্থলসীমা বন্ধ করে দিয়েছে, কূটনৈতিক সম্পর্ক কমিয়েছে ও পাকিস্তানিদের ভিসা প্রত্যাহার করেছে।

আরও পড়ুনযেদিকে তাকাই, শুধু অবিশ্বাস: ভারতের বিভিন্ন শহরে ভয়ে ঘরবন্দী কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা৩ ঘণ্টা আগে

জবাবে ইসলামাবাদ ভারতীয় কূটনীতিক ও সামরিক উপদেষ্টাদের বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছে, ভারতীয় নাগরিকদের ভিসা বাতিল করেছে এবং নিজেদের অংশের প্রধান সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে। তবে শিখ তীর্থযাত্রীদের ভিসা বহাল রাখা হয়েছে।

এদিকে জাতিসংঘ দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশকে ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে, যেন গঠনমূলক পারস্পরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধান করা সম্ভব হয়।

আরও পড়ুনসিন্ধু পানি চুক্তি কী, ভারত কি এটি বাতিল করতে পারে১৮ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবিতে পরীক্ষা ছাড়াই শূন্যপদে নিয়োগের অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত

একটি জাতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ‘বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ ঢাবি উপাচার্যের' শীর্ষক সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন‌। ওই সংবাদটি অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো ‘প্রকাশিত সংবাদ বিষয়ে ঢাবি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য' শীর্ষক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একটি জাতীয় দৈনিকে রবিবার (২৭ এপ্রিল) প্রকাশিত ‘বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ ঢাবি উপাচার্যের’ শীর্ষক সংবাদের প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। সংবাদে পরীক্ষা ছাড়াই শূন্য পদে নিয়োগের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর।

আরো পড়ুন:

শেরে বাংলাকে ‘সুপার স্টার মুসলিম জাতীয়তাবাদী` ঘোষণা

‘শহীদ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াচ্ছে না অন্তর্বর্তী সরকার’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর উপাচার্যসহ প্রশাসনিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন আনা হয়। সে সময় উপাচার্য দফতরসহ বিভিন্ন দফতর থেকে ফ্যাসিস্ট সরকারের সহায়তাকারী ও পূর্বের প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলির জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জোর দাবি উঠে। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ফ্যাসিস্ট সরকারের সহায়তাকারী এবং পূর্বের প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপাচার্য দফতর থেকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে।

পরবর্তীতে লোকবল সংকট, দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ততা ও কাজের দক্ষতা বিবেচনা করে উপাচার্যের বিভাগের কর্মচারী ফিরোজ শাহকে উপাচার্য দফতরে বদলি করা হয়েছে এবং তাকে প্রটোকলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ, ১৯৭৩ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে উপাচার্য যেকোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকে যেকোনো সময় যেকোনো বিভাগ/দপ্তর/ইনস্টিটিউটে বদলি/প্লেসমেন্ট দিতে পারেন উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ ক্ষমতাবলে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই ফিরোজ শাহকে উপাচার্য দফতরে বদলি করা হয়েছে। এটি কোন নতুন নিয়োগ বা পদোন্নতি নয়। একই বেতন স্কেলভুক্ত এক পদ থেকে অন্য পদে স্থানান্তর মাত্র। এ ধরনের অনেক পূর্ব নজির আছে। যেকোনো সময় তাকে উপাচার্য মহোদয়ের নিজ বিভাগে বা অন্যত্র পুনরায় বদলির সুযোগ রয়েছে।

সংবাদটি সত্যনিষ্ঠভাবে উপস্থাপন না হওয়ায় জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে বলে জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ