ক্রিকেটে কি আগ্রহ হারাচ্ছে দর্শক? বিমুখ হচ্ছে মাঠে গিয়ে খেলা দেখার? বাংলাদেশ ক্রিকেট আগের চেয়ে পিছিয়ে যাচ্ছে কি? সিলেট টেস্টের খাঁ খাঁ গ্যালারি দেখার পর গত কয়েক দিন এই প্রশ্নগুলোই ঘুরছে অনেকের মনে। চট্টগ্রামে জাকের আলী অনিককে পেয়ে তাই সেই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাওয়া, ‘ভালো পারফরম্যান্স করা উচিত আমাদের। ভালো পারফরম্যান্সের ওপর আর কিছু নেই। আমাদের সবার লক্ষ্য থাকবে চট্টগ্রাম টেস্টে ভালো পারফর্ম করা।’
অনিকের বিশ্বাস, চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচটিতে যদি তারা প্রত্যাশামতো খেলতে পারেন, তাহলে দর্শকদের আগ্রহ ফিরবে ক্রিকেটে। সিলেটে টেস্টের প্রথম দিন মাত্র শ তিনেক দর্শক মাঠে ছিলেন। সেই টেস্টের প্রথম দুই দিন টিকিট বিক্রি হয়েছিল মাত্র ৬৭১টি। গেল বছর দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজে মিরপুর আর চট্টগ্রাম মিলে টিকিট বিক্রি হয়েছিল ১২ লাখ টাকার। এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট হারার পর দর্শকের আগ্রহ তলানিতে এসে ঠেকেছে। সেখানে জাকের আলীর ‘ভালো পারফরম্যান্স করতে হবে’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামের গ্যালারি ভরা বেশ চ্যালেঞ্জিং।
তা ছাড়া দুই দলেরই তারকা উপস্থিতি ভীষণ কম। তাসকিন নেই এই সিরিজে, লিটন দাসও বিশ্রামে। তারকাদের মধ্যে নাহিদ রানাও গিয়েছেন পিএসএল খেলতে। বাকিদের মধ্যে মুশফিকুর রহিমের একটি বিশাল সমর্থক গোষ্ঠী রয়েছে, তবে সিলেট টেস্টে তাঁর পারফরম্যান্স এতটাই অপ্রত্যাশিত ছিল যে হতাশ হয়েছেন দর্শক। যদিও জাকের আলীর বিশ্বাস, এই টেস্টেই হাসবে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ হাতে ব্যাট, ‘দলে তো উনি (মুশফিকুর রহিম) একা খেলছেন না। উনারই যে রান করতে হবে, রান সবারই করতে হবে। হয়তো উনি করছেন না, এটা যে কারও সঙ্গেই হতে পারে। তিনি অবশ্যই রানে ফিরবেন।’
তবে জিম্বাবুয়ের কাছে সিলেটে ওভাবে হারাতে যে দর্শকদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়েছে, সেটি মেনে নিয়েছেন জাকের। দলকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতেও কিছু সময় লাগবে বলে জানান তিনি। ‘যেহেতু সিনিয়র ক্রিকেটাররা যাবেন (অবসরে), স্বাভাবিকভাবেই তরুণ ক্রিকেটারদের মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগতে পারে। আমার মনে হয়, কয়েক দিন সময় লাগবে। আর সবকিছুই রিকভার করা যাবে।’
সিলেট টেস্টে ২৮ আর ৫৮ রানের ইনিংস খেলে প্রতিরোধের একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অনিক। তবে দলের ব্যাটিং যে মোটেই ভালো ছিল না, সেটি অস্বীকার করেননি তিনি। ‘হার তো যে কোনো দলের বিপক্ষেই হতে পারে। আমাদের প্রক্রিয়া ঠিক থাকা উচিত, যার সঙ্গেই খেলি না কেন। ব্যাটিং নিয়ে মূলত বলছি আমি। ব্যাটিংয়ের কারণে আমরা ভুগছি। শট সিলেকশন কীভাবে আরও ভালো করা যায়। সব সময় তো আর বোলাররা জেতাবে না। বেশির ভাগ ম্যাচ বোলাররা জেতায় আমাদের।’
জিম্বাবুয়ের বোলিং ধার নয়, বরং নিজেদের ব্যাটিং ভুলেই সিলেট টেস্ট হারতে হয়েছে বলে মনে করেন জাকের আলী। ‘আমরা যেহেতু ভুল করি, এ জন্য হারি। সাধারণ ব্যাপার, যেহেতু প্রথম টেস্টের ফলাফল আমাদের পক্ষে যায়নি, আমরা আমাদের প্রসেসে আছি। ম্যাচের পর আমাদের কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। চট্টগ্রাম টেস্টে আমাদের ফোকাস থাকবে যেন ব্যাটিংটা ভালো হয়।’ ব্যাটিংটা ভালো হলে অন্তত চট্টগ্রামে টিকিট ছাপানোর টাকা তোলার জন্য আফসোস করতে হবে না বিসিবিকে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রফরম য ন স জ ক র আল আম দ র প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
মুদ্রার ওপিঠ দেখে ফেললেন রিশাদ
পিএসএলের এবারের আসরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বাজে ম্যাচটা খেললেন রিশাদ হোসেন। আগের ম্যাচে খরুচে বোলিংয়ে দুই উইকেট পেয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) তার দল লাহোর কালান্দার্সের হতশ্রী পারফরম্যান্সের দিনে উইকেটশূন্য থাকলেন এই টাইগার লেগ স্পিনার।
গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার প্রথমে বোলিং করে লাহোর কালান্দার্সকে চেপে ধরে পেশোয়ার জালমি। ৪৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে বসে শাহিন আফ্রিদিরা। আলজার্রি জোসেফ ধ্বংসযজ্ঞ চালান লুক উড, অনূর্ধ্ব-১৯ তারকা আলি রাজা এবং হুসাইন তালতকে সঙ্গে নিয়ে। এরপর লাহোরকে কিছুটা সামাল দেন সিকান্দার রাজা, যিনি ৭ নম্বরে নেমে ৩৭ বলে ৫২ রান করেন। তার ইনিংসের ওপর ভর করেই লাহোর শেষ পর্যন্ত ১৯.২ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে ১২৯ রানে।
ছোট লক্ষ্য তাড়ায় পেশোয়ার জালমি শুরুতেই ধাক্কা খায়। দলীয় ৭ রানে ২ উইকেট হারায়। তবে অধিনায়ক বাবর আজম দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে দলকে সামাল দেন এবং মৌসুমের প্রথম ফিফটি করেন। তিনি ৩০ বলে ৪৫ রান করেন এবং ফিফটি স্পর্শ করতে আরও ৭ বল নেন। তবে ম্যাচের সেরা পারফরমার হিসেবে আবির্ভূত হন হুসাইন তালত। তিনি ৫১ বলে অপরাজিত ৩৭ রান করার পাশাপাশি ২.২ ওভারে ১৮ রানে ২ উইকেটও নেন। তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে পেশোয়ার জালমি ২০ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় নিশ্চিত করে।
গতকাল ব্যাট হাতে আটে ব্যাটিং করেন রিশাদ। ক্যামিও ইনিংস খেলার সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশের তারকা থেমেছেন মিয়ম্রাণ হয়েই। ১৩ বলে করেন ১৩ রান। হাঁকিয়েছেন একটি করে চার ও ছক্কা।
ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও ছিলেন ছন্নছাড়া। দুই ওভার বল করে খরচ করেছেন ১৮ রান। পারেননি সুযোগও তৈরি করতে। তাতেই উইকেটশিকারির তালিকায় শীর্ষ থেকে নেমেছেন চার নম্বরে। ৪ ম্যাচে টাইগার স্পিনারের উইকেট সংখ্যা আগের মতোই, আটটি। ১২ উইকেট নিয়ে শীর্ষে জেসন হোল্ডার।
এই জয়ে পিএসএল টেবিলে চার নম্বরে উঠেছে বাবরের দল পেশোয়ার। ৫ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট চার। সমান পয়েন্ট নিয়ে তিনে রিশাদদের লাহোর। শীর্ষে ১০ পয়েন্ট নিয়ে ইসলামাবাদ ইউনাইটেড। আগামীকাল (২৬ এপ্রিল) রাত নয়টায় মুলতান সুলতানসের বিপক্ষে লড়বে লাহোর।
ঢাকা/নাভিদ