Prothomalo:
2025-04-27@17:17:00 GMT

নবী প্রেমের প্রতিদান কী

Published: 27th, April 2025 GMT

নবীজির (সা.) দীর্ঘদিনের খাদেম ছিলেন আনাস ইবনে মালিক (রা.)। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবীজি(সা.)কে জিজ্ঞেস করল, ‘কেয়ামত কবে হবে?’ নবীজি(সা.) বললেন, ‘তুমি তার জন্য কী প্রস্তুতি নিয়েছ?’ সে বলল, তেমন কিছু না, তবে আমি আল্লাহ ও তার রাসুলকে ভালোবাসি।’ নবীজি (সা.)বললেন, ‘তুমি যাকে ভালোবাসো, (পরকালে) তার সঙ্গে থাকবে।’

অন্য হাদিসে আছে, নবীজি (সা.

) যখন বললেন ‘তুমি কী প্রস্তুতি নিয়েছ?’ লোকটি মাথা নিচু করে ফেলল। তারপর বলল, ‘আল্লাহর রাসুল, রোজা, নামাজ ও সদাকার মতো বড় কোনো প্রস্তুতি তো নিতে পারিনি। কিন্তু আমি আল্লাহ ও তার রাসুল(সা.)কে ভালোবাসি।’ নবীজি (সা.) বললেন, ‘যাকে তুমি ভালোবাসো, তার সঙ্গেই থাকবে।’

আনাস (রা.) বলেন, ‘তুমি যাকে ভালোবাসো তার সঙ্গে থাকবে’, এই কথা শুনে আমরা এত খুশি হলাম, যা আর কিছুতে হইনি। আমি নবীজি(সা.)কে এবং আবু বকর (রা.) ও ওমর(রা.) কে ভালোবাসি। আশা করি, তাদের ভালোবাসার কারণে আমি তাদের সঙ্গে থাকব, যদিও তাদের মতো আমল করতে পারিনি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩,৬৮৮ ও ৭,১৫৩; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৬৩৯)

আরও পড়ুনতওবা যেভাবে করা যায়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি আল্লাহর নবীজি(সা.)র কাছে এসে বলল, ‘আল্লাহর রাসুল, সেই ব্যক্তি সম্পর্কে কী বলেন, যে একটি জাতিকে ভালোবাসে, অথচ তাদের সঙ্গে মিলিত হয়নি?’ তিনি বললেন, (না, এমন হবে না) মানুষ যাকে ভালোবাসে তার সঙ্গেই থাকবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,১৬৯ ও ৬,১৭০; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৬৪০ ও ২,৬৪১)

আরও পড়ুনজীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি (সা.)১৩ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আল ল হ বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের অগ্রগতির প্রতিবেদন ২৭ আগস্ট দাখিলের নির্দেশ

চূড়ান্ত ছাড়পত্রের পর মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের অগ্রগতি জানিয়ে আগামী ২৭ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ-সংক্রান্ত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের পর বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ আদেশ দেন।

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধান, গমনেচ্ছু কর্মীদের হয়রানি বন্ধ ও ভবিষ্যতে এ ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় করণীয় নির্ধারণে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় গত বছরের ২ জুন ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করে। এক রিট আবেদনের ধারাবাহিকতায় ওই কমিটির প্রতিবেদনটি আদালতে দাখিল করা হয়।

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) থেকে ক্লিয়ারেন্স কার্ড সংগ্রহ করার পরও ১৭ হাজার ৭৭৭ কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠাতে না পারার ব্যর্থতার দায় সম্পূর্ণরূপে সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর ওপর বর্তায় বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ আদালতে রিটের পক্ষে আবেদনকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ নিজে শুনানি করেন। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের পক্ষে আইনজীবী খালেদ হামিদ চৌধুরী এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান শুনানিতে ছিলেন।

পরে আইনজীবী খালেদ হামিদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, চূড়ান্ত ছাড়পত্রের পর ১৭ হাজার ৭৭৭ কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি। এ বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার অগ্রগতি জানিয়ে আগামী ২৭ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর গাফিলতি সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ অংশে বলা হয়, মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশের জন্য মোট ৫ লাখ ৩২ হাজার ১৬২ জন কর্মীর কোটা বরাদ্দ করে। ওই কোটার বিপরীতে ২০২২ সালের আগস্ট থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো শুরু হয় এবং গত বছরের ৩১ মে পর্যন্ত চালু ছিল। বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) থেকে ক্লিয়ারেন্স কার্ড ইস্যু করার পর ১৭ হাজার ৭৭৭ কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি, যা বিএমইটি ক্লিয়ারেন্স কার্ডপ্রাপ্ত কর্মীর ৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। উল্লিখিত সময়ে ৫ লাখ ২৭ হাজার ৯৯৯ জন কর্মীর নিয়োগানুমতি মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিএমইটি এর ডেটাবেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ওই সময়ে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো বিএমইটি থেকে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৭২৯ জনের স্মার্টকার্ড গ্রহণ করেছে। অর্থাৎ কোনো কোনো রিক্রুটিং এজেন্সি মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগানুমতি গ্রহণ করেও ৩৪ হাজার ২৭০ জন কর্মীর অনুকূলে বিএমইটিতে স্মার্ট কার্ডের জন্য আবেদন করেনি। এ ক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর গাফিলতি বা শিথিলতা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়।

এ ছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে কর্মী পাঠাতে ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ; যেসব কর্মী বিদেশ যেতে পারেননি, তাঁদের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ অবিলম্বে ফেরত দিতে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া এবং রিক্রুটিং এজেন্সি থেকে মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয়ের (৭৮ হাজার ৯৯০টাকা) অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার অভিযোগগুলো আইনানুগভাবে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ রয়েছে।

এর আগে গত বছরের ২ জুন মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে ‘৩০ হাজার যুবকের স্বপ্ন ভেঙে ২০ হাজার কোটি টাকা লুট’ শিরোনামে একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। ‘মালয়েশিয়ায় চাকরি: অব্যবস্থাপনায় তিন হাজারের বেশি কর্মী টিকিট পায়নি’—এমন শিরোনামে একই দিন একটি ইংরেজি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদন দুটি যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ একই বছরের ৩ জুন রিট করেন। এর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ১৬ জুলাই হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। চূড়ান্ত ছাড়পত্রের পর মালয়েশিয়ায় কর্মী যাওয়ার ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কার্যক্রম ও পদক্ষেপের বিষয়ে হালনাগাদ প্রতিবেদন ছয় মাস মাস পরপর আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

এর ধারাবাহিকতায় প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সচিবের পক্ষে আদালতে ওই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয় বলে জানান রিট আবেদনকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মালয়েশিয়ায় যেতে না পারা ১৭ হাজার ৭০০ কর্মীর বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থতা ও দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, নির্ধারিত ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার অতিরিক্ত টাকা যাঁদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে, তাঁদের সমুদয় অর্থ ফেরত দিতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে বলা হয়েছে। যাঁরা যেতে পারেননি, সরকার তাঁদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মালয়েশিয়ায় নেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা–ও জানাতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ