শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) উপাচার্য, ডিনসহ সব বিভাগীয় চেয়ারম্যানের পদত্যাগ করেছেন। গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়।

ফেসবুক পোস্টে জানানো হয়, ‘ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অযৌক্তিক দাবির প্রতিবাদে সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও ইনস্টিটিটিউটের পরিচালকরা যৌথভাবে তাদের প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন।’

উপাচার্য ছাড়াও দায়িত্ব ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্স রিসার্চের (আইএআর) নির্বাহী পরিচালক এবং ইমেরিটাস অধ্যাপক এম রিজওয়ান খান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নুরুল হুদা, অর্থনীতি বিভাগের প্রধান মো.

ওমর ফারুক, স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন অধ্যাপক হাসান সারওয়ার, আইরিকের পরিচালক অধ্যাপক খন্দকার আবদুল্লাহ আল মামুন, ইইই বিভাগের প্রধান মো. কে. মাশুকুর রহমান, ফার্মেসি বিভাগের প্রধান তাহমিনা ফয়েজ, সিডিআইপির পরিচালক সুমন আহমেদ, ডেটা সায়েন্স প্রোগ্রামের পরিচালক জান্নাতুন নূর, বিজিই প্রোগ্রামের পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও আইএনএসের পরিচালক অধ্যাপক আবু সাকলায়েন।

এর আগে গতকাল সকাল থেকে তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তাদের আন্দোলন শুরু হয়। পরে দাবি আদায়ে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীদের ৩ দাবি হলো—

১. বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অমানবিক আচরণ ছাড়াও ইউআইউ রিফর্ম ১.০ ও জুলাই বিপ্লবে বাধা দেওয়া, এক ছাত্রীর বাবা মারা যাওয়ার পর তার কাছে কাউন্সিলর থেকে ডেড সার্টিফিকেট চাওয়া, আইসিইউ ফেরত শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অস্বীকৃতি জানানো, বিশ্ববিদ্যালয়ে একক সিন্ডিকেট তৈরির অভিযোগে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল হুদার পদত্যাগ।

২. মিডটার্ম পরীক্ষার সময় ১৫ মিনিট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি আবারও আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

৩. ইউআইউ রিফর্ম ১.০–এ যেসব দাবি মানা হয়েছিল, সব দাবি অনতিবিলম্বে বাস্তবায়ন করতে হবে। বিশেষভাবে ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার ফি মিড টার্মে কোর্সপ্রতি ২ হাজার টাকা ও ফাইনাল পরীক্ষায় ৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপ চ র য পদত য গ র পদত য গ পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ