যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে বেড়াতে গিয়েছিলেন এক পর্যটক। কিছু জিনিস কেনাকাটা করতে হোটেলের পাশের একটি দোকানে ঢোকেন। প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে বেরিয়ে আসার সময় দেখেন, বিক্রি হচ্ছে লটারির টিকিট। নিজের ভাগ্য যাচাই করে দেখাই যাক—এই ভাবনা থেকে একটি লটারির টিকিট কিনে ফেলেন তিনি।

হোটেলে ফিরে লটারির ফলাফল দেখতে গিয়ে কিছুক্ষণের জন্য তিনি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কারণ, আর কেউ নয়, তিনিই জিতেছেন লটারি, পুরস্কার ৩১ লাখ ৮৮ হাজার ১০৪ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকার বেশি!

ওই পর্যটক নিজের ডাকনাম ‘ট্রাভেলিং ট্রেজার’ বলেছেন। তিনি ইলিনয় লটারি কর্মকর্তাদের বলেছেন, ‘আমি এর আগেও শিকাগোতে এসেছি। কিন্তু আগে কখনো এখানকার জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখার সুযোগ পাইনি। তাই এবার আমি যতটুকু সম্ভব ঘুরে বেড়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতে চেয়েছিলাম।’

 ওই ব্যক্তি উইলিস টাওয়ারের স্কাই ডেক দেখেছেন, সিনেমার শুটিং হয়, এমন কিছু জায়গাও ঘুরে দেখেছেন। ঘুরে বেড়ানোর এই সময়ে তিনি নর্থ কাম্বারল্যান্ড অ্যাভিনিউয়ের একটি দোকানে ঢুকে দেখেন, স্থানীয় ফাস্টপ্লে আল্টিমেট ডায়মন্ড জ্যাকপট টিকিট বিক্রি হচ্ছে, পুরস্কারের অঙ্কও বেশ বড়। নিজের ভাগ্য যাচাই করতে তিনি একটি টিকিট কিনে ফেলেন।

সেদিনের বর্ণনায় লটারিজয়ী ওই ব্যক্তি বলেন, ‘এক সন্ধ্যায় হোটেলে ফেরার আগে আমি কাছের একটি দোকানে ঢুকি। আমি দেখতে পাই, আল্টিমেট ডায়মন্ড জ্যাকপট খেলায় সে মুহূর্তে বেশ বড় অঙ্কের পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ভাগ্য যাচাই করতে আমি একটি টিকিট কিনে ফেলি। হোটেলে ফিরে আমি যখন লটারির ফলাফল দেখি, দেখতে পাই, আমিই পুরস্কার জিতেছি, পুরস্কারের অংশ ৩০ লাখ ডলারের বেশি। ওই মুহূর্তে আমি একই সঙ্গে হতবাক এবং বিস্মিত হয়েছিলাম। আমি নড়তে পারছিলাম না।’

পুরস্কারের অর্থ দিয়ে কী করবেন, সে পরিকল্পনাও করে ফেলেছেন ট্রাভেলিং ট্রেজার। তিনি বলেন, ‘শুরুতে আমি একটি বাড়ি কিনতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এখন বাড়ির দাম যা বেড়ে গেছে, তাই বাড়ি কেনা সম্ভব হয়নি। আমি সম্প্রতি দেখতে পাই, আমি যে অ্যাপার্টমেন্টটি ভাড়া নিয়েছি, আমার বাড়ির মালিক সেটি বিক্রি করে দিতে চলেছেন, আমাকে তো এখন একটা চেষ্টা করতেই হবে। আমার নিজেকে অসম্ভব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। লটারিতে পুরস্কার জয়ের এর থেকে ভালো সময় আর হতে পারত না।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ক র

এছাড়াও পড়ুন:

কাগজ আমদানিতে ৫ শতাংশ কর কমানোর দাবি

প্রকাশনা, মোড়কজাত ও ওষুধ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল পেপার ও পেপার বোর্ড আমদানিতে প্লাস্টিক শিল্পের অনুরূপ শুল্ক কর (সিডি) ৫ শতাংশ বা তার ও কম করার দাবি জানিয়েছে এ খাতের চারটি সংগঠন। তারা বলছে, এতে ব্যবসায় শৃঙ্খলা ফিরবে, কর ফাঁকি ও দুর্নীতি কমবে। ফলে রোধে শুল্ক হার কমালে রাজস্ব আয় বাড়বে।

রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ খাতের চার সংগঠন যৌভাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানিয়েছে। সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিআইএ), বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ), মেট্রোপলিটন প্রেস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এবং চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপ। 

এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিপিআইএর সভাপতি শফিকুল ইসলাম ভরসা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল, বিপিআইএর সহ সভাপতি খোরশেদ আলম, বিপিএমএর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম প্রমুখ।  

শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, ব্যক্তিগত বা কোম্পানি আয়করের ওপর অডিট আপত্তির বিপরীতে আপিল ট্রাইবুনালে আপিল দায়ের করতে হলে আপত্তিকৃত মোট টাকার ওপর ১০ শতাংশ সরকারি কোষাগারে জমা করার বিধান রয়েছে। উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হয়। এছাড়া ভ্যাট কমিশনারের দাবি করা মূসকের বিপরীতে ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করতে গেলে বিধিবদ্ধ জমা ১০ শতাংশ ও উচ্চ আদালতে আয়কর রেফারেন্সের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ করে জমা দিতে হয়। 

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল সমকালকে বলেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে আয়করের ওপর অযাচিত অডিট আপত্তি দিয়ে থাকেন। মূলত ব্যবসায়ীদের হয়রানি করতে এটাকে মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।

ব্যবসায়ীদের হয়রানি থেকে মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ করে এনবিআরের উদ্দেশে তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ করে অর্থ জমা দেওয়ার বিধান চালু করলে অসাধু কর্মকর্তাদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমে আসবে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবে। 

লিখিত বক্তব্যে শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর অভ্যন্তরে এবং কমলাপুর আইসিডিতে আমদানি করা এফসিএল কন্টেইনারের কমন ল্যান্ডিং ডেট এর অষ্টম দিন থেকে প্রযোজ্য স্ল্যাবের চারগুণ হারে স্টোর রেন্ট আরোপ করেছে। ঈদের ছুটির দুই-এক দিন আগে থেকে আসা কনটেইনার এবং ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দরে আসা কনটেইনার নির্ধারিত ৪ দিনের মধ্যে খালাস করা সম্ভব ছিল না। এ ছাড়াও বন্দর বা আইসিডি থেকে মালামাল খালাসে বন্দর কর্তৃপক্ষ ছাড়াও আরও অন্যান্য এজেন্সির সম্পৃক্ততা থাকে এবং এসব ডকুমেন্টেশন প্রসেসিংয়ে অনেক সময় লেগে যায়।

আমদানিকারকদের ওপর এরূপ অযৌক্তিক উচ্চহারে স্টোররেন্ট আরোপের ফলে শিল্প উৎপাদন বা অভ্যন্তরীণ ব্যবহার উভয় ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য বেড়ে যাবে। এতে ব্যবসায়ীরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক স্টোর রেন্ট আরোপের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান তিনি।

এ সময় ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যিকভাবে আমদানি করা ডুপ্লেক্স বোর্ড ও আর্টকার্ডের মূল্য বিশ্ববাজারে কমে যাওয়ায় প্রকৃত বিনিময় মূল্যে শুল্কায়নের অনুরোধ জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ