পটুয়াখালীতে বসতঘর থেকে ছাত্রদল নেতার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
Published: 27th, April 2025 GMT
পটুয়াখালী সদর উপজেলায় সরোয়ার আহমেদ তালুকদার (২৮) নামের এক ছাত্রদল নেতার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাত আটটার দিকে উপজেলার টাউনকালিপুর ইউনিয়নের তালুকদারবাড়ির নিজ বসতঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
সরোয়ার আহমেদ কালিকাপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সদর থানার পুলিশ তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
সরোয়ারের চাচা ইউনুছ তালুকদার (৬০) কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেল চারটার পরে সরোয়ার মোটরসাইকেলে করে বাড়ি আসেন। এ সময় তিনি একাই ছিলেন। এরপর তাঁকে আর ঘরের বাইরে দেখা যায়নি। সন্ধ্যায় পর সরোয়ারের খোঁজে তিনি তাঁর ঘরে যান। এ সময় ঘরের আড়ার সঙ্গে তাঁকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে চিৎকার দেন।
সরোয়ারের ফুফাতো ভাই জুবায়ের আহমেদ (২৩) বলেন, সরোয়ার রাজনীতির পাশাপাশি একটি কোম্পানির ডিলার ছিলেন। সারা দিন ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। গতকাল তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ নিজ বসতঘরে দেখেন চাচা ইউনুছ তালুকাদার। এটি পরিকল্পিত হত্যা ছাড়া কিছুই নয়।
সরোয়ার আহমেদের বাবা ১৫ বছরে আগে মারা গেছেন জানিয়ে তাঁর প্রতিবেশী নয়ন মৃধা বলেন, সরোয়ারের মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। এক ছোট ভাই ও মাকে নিয়ে তাঁর সংসার। গতকাল সরোয়ারের মা নানাবাড়িতে যান। ওই ঘটনার সময় ঘরে অন্য কেউ ছিলেন না। সরোয়ারের সঙ্গে ইতিমধ্যে কারও বিরোধ হয়নি বলে তিনি জানান।
পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ আহম্মেদ বলেন, নিহত ব্যক্তির স্বজনদের কাছ থেকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। সুরতহালে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে পরিকল্পিত হত্যা দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন এবং নিবিড় তদন্ত ছাড়া আপাতত হত্যা হয়েছে বলার সুযোগ নেই। সে রকম কিছু পেলে অবশ্যই আমলে নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নদীতে ড্রেজার, বিলীনের ঝুঁকিতে কৃষিজমি-রাস্তাঘাট
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নে ধলাই নদী থেকে ড্রেজার মেশিনে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় অন্তত ১৮টি পরিবারের বসতঘর নদীতে পুরোপুরি ও আংশিক বিলীন হয়েছে। এ ছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে বিস্তীর্ণ কৃষিজমি, রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর।
সরেজমিনে দেখা যায়, রহিমপুর ইউনিয়নের ধর্মপুর গ্রামের গা ঘেঁষে ধলাই নদী প্রবাহিত। নদী থেকে ইজারাগ্রহীতারা দীর্ঘদিন ধরে বালু তুলে আসছেন। ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলায় ধলাই নদীর তলদেশ গভীর হয়ে উঠেছে। এতে বর্ষা মৌসুমে পানির প্রবল স্রোতে নদীর তীর ধসে পড়তে শুরু করে। গত কয়েক বছরে এভাবে নদীর তীর ধসে ওই গ্রামের আইন উদ্দীন, হাজী দুর্নদ মিয়া, হাবিল মিয়া, শামসুল ইসলাম, মো. দুর্নদ, আলমাছ মিয়া, আনোয়ার মিয়া ও মাহমুদ মিয়ার বসতঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অনেকের বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক বাড়ির আংশিক অংশ নদীর ওপর শূন্যে ভাসছে। অনেকের বাড়ি নদীতে বিলীনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
নদীভাঙনে বাড়িঘর হারিয়ে গ্রামের কুটি মিয়া, সোনা মিয়া অন্যত্র গিয়ে ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা সরকারের কোনো ধরনের সহায়তা পাননি। এছাড়া বালু তোলার প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেকে বালু ব্যবসায়ীদের হুমকি-ধমকি ও মামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ধর্মপুরের ধলাই নদী থেকে একটি চক্র অব্যাহতভাবে বালু তুলেছে। গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে নতুন একটি চক্র সেখান থেকে বালু তুলতে শুরু করে। স্থানীয়দের অভিযোগের পর উপজেলা প্রশাসন সম্প্রতি ওই স্থান থেকে বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।
ইউএনও মাখন চন্দ্র সূত্রধর জানান, ধলাই নদীতে স্রোতে অনেকের বসতঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে সেখান থেকে বালু তোলা বন্ধ করা হয়েছে।