ডিপ্লোমার পর পড়ালেখা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল, এখন শিক্ষকতা করি অস্ট্রেলিয়ায়
Published: 27th, April 2025 GMT
আমাদের গ্রামটা সুন্দরবনের কাছে। নাম রাজাপুর। বাগেরহাট জেলার শরণখোলা থানায় পড়েছে। একটু প্রত্যন্ত অঞ্চলে হওয়ায় বিদ্যুৎ পৌঁছেছিল বেশ দেরিতে। এ অঞ্চলে ভালো পড়ালেখার সুযোগ তেমন ছিল না। তার ওপর ছোটবেলায় এক দুর্ঘটনায় পড়ে আমার ডান পায়ে একটা স্থায়ী সমস্যা তৈরি হয়। তখনই স্বাভাবিক গতিতে হাঁটা বা দৌড়ানোর সক্ষমতা হারিয়েছিলাম। সেই আমিই এখন দেশ থেকে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার দূরে অস্ট্রেলিয়ার একটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াই। পেছনে ফিরে তাকালে অবাক লাগে, কীভাবে এতটা পথ পাড়ি দিলাম!
অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পাওয়া ছাত্র হয়েও এসএসসিতে রেজাল্ট যখন খারাপ হলো, খুব ভেঙে পড়েছিলাম। তলানিতে ঠেকেছিল আত্মবিশ্বাস। দ্রুত পেশাজীবনে পা রাখার তাড়নায় এক সহপাঠীর কাছ থেকে তথ্য পেয়ে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ভর্তি হই। বিষয় ছিল কম্পিউটার প্রকৌশল। অথচ আমার নিজেরই তখন কোনো কম্পিউটার ছিল না। কলেজের ল্যাবেই বিকেল পর্যন্ত পড়ে থাকতাম। এই পরিশ্রম বৃথা যায়নি। প্রোগ্রামিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মাইক্রোপ্রসেসর, ডিজিটাল সিস্টেমের ওপর দক্ষতা অর্জন করে ফেলি।
আর দশজন ডিপ্লোমা প্রকৌশলীর মতো আমারও ইচ্ছা ছিল, ডিগ্রি নেওয়ার পর ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ডুয়েট) পড়ব। কিন্তু দুর্ভাগ্য, আমাদের অঞ্চলে সিডরের কারণে একটা বড় অর্থনৈতিক ধাক্কা লাগে। অর্থের অভাবে মাঝপথেই থেমে যায় ডুয়েটের ভর্তি কোচিং। এই ট্রমা কাটিয়ে উঠে খুলনাতেই ‘ম্যানগ্রোভ ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হই।
মাত্র ৪৭ জন শিক্ষার্থী, আর অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমাদের যাত্রা শুরু। তবু কত বাঁকা কথা যে শুনতে হয়েছে। ‘কোচিং সেন্টার খুলেছ!’, ‘সময়ের অপচয় করছ’ ইত্যাদি কত কথা। জানিয়ে রাখি, আমাদের সেই প্রতিষ্ঠানই এখন বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট হিসেবে বেশ পরিচিত। তিন হাজার শিক্ষার্থী এখানে পড়ে। বিভিন্ন পদে কাজ করার পর ২০১৫ সালে আমি ম্যানগ্রোভ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছিলাম।
ইউনিভার্সিটি অব নিউ সাউথ ওয়েলসের বিজনেস স্কুলের একটি প্রকল্পে এখনো গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করছি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রামে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় বাংলাদেশের
অস্বস্তি পরিবেশে স্বস্তি ফেরাতে পারে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম টেস্ট জয়। দেশের ক্রিকেটে যা ঘটে যাচ্ছে তাতে অস্বস্তি চারিদিকে। মাঠে পারফরম্যান্স নেই। অথচ মাঠের বাইরে নানা বিতর্কে জর্জরিত ক্রিকেট। সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট হার।
এরপর ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে তাওহীদ হৃদয়ের শাস্তি ঘিরে নানা বিতর্ক। এরপর বিসিবির ফান্ড ট্রান্সফার ঘিরে বিতর্ক। তাতে দমকা হাওয়াতে ক্রিকেটাঙ্গন থেকে ক্রিকেটাই হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম তৈরি হয়েছে।
এসব অস্বস্তি পরিবেশে ক্রিকেটারদের ২২ গজে মনোযোগ রাখার কাজটা কঠিন। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মান বাঁচানোর লড়াইয়ে সেই কঠিন কাজটাই তাদের করতে হবে চট্টগ্রামের ২২ গজে। যে জন্য কঠিন প্রস্তুতি নেওয়ার কথা বললেন বাংলাদেশের কোচ ফিল সিমন্স, ‘‘এই ব্যাপারটি (ঢাকার অস্থিরতা) কোচিং স্টাফ হিসেবে আমাদের নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে যে, ওরা যেন এসব থেকে দূরে থাকে, মনোযোগে যেন ব্যাঘাত না ঘটে, বাইরের এসব আলোচনার কথা আপনি বলছেন…। আমরা একটি টেস্ট ম্যাচ খেলতে যাচ্ছি। আগামীকালের আগে আজকে সন্ধ্যায় আমাদের চূড়ান্ত মিটিং যখন হবে, তখন এই ব্যাপারটিতে গুরুত্ব দিতে হবে যেন ওদের মনোযোগে ব্যাঘাত না ঘটে। এটা আগামী পাঁচদিনের ব্যাপার, এই পাঁচদিনে শুধু বাংলাদেশ ক্রিকেটই ভাবতে হবে, বাইরের কোনো কিছু নয়।”
আরো পড়ুন:
ফর্মে থাকা এনামুলে আত্মবিশ্বাসী গাজী আশরাফ
টেস্টে ম্যাচ প্রতি ৮ লাখ টাকা, তবুও শান্তদের ফর্মে খরা!
প্রায় ২১ বছর পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ হার এড়াতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ইতিবাচক মানসিকতায় ম্যাচটি খেলার কথা বললেন কোচ, ‘‘আমরা জানি, প্রথম ম্যাচে দল হিসেবে ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি এবং নিজেদের সমস্যায় ফেলেছি। এখন আমাদের ভাবনা হলো, ইতিবাচক ব্র্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চাই। এমন না যে, সারা দিন ব্যাটিং করে ২০০ রান করব।”
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল