পুলিশের সুধীসমাবেশে বীর মুক্তিযোদ্ধার বক্তব্যে জামায়াত নেতার বাধা
Published: 27th, April 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ আয়োজিত সুধীসমাবেশে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বাধা দিয়ে থামিয়ে দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য। গতকাল শনিবার বিকেলে জেলা শহরের শহীদ সাটু অডিটরিয়ামে এ ঘটনা ঘটে।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধা হলেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ইউনিটের সাবেক সহকারী কমান্ডার মো.
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সার্বিক আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে সুধীসমাবেশের আয়োজন করে জেলা পুলিশ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ শাহজাহান। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে বক্তব্য দিচ্ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. তরিকুল আলম।
ঘটনাস্থলে অবস্থান করে দেখা যায়, বক্তব্য দিতে গিয়ে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টকে না মেলানোর আহ্বান জানান মো. তরিকুল আলম। এ সময় সামনের সারিতে বসা জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান উত্তেজিত হয়ে আঙুল উঁচিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলমের দিকে তেড়ে আসেন। চিৎকার করে এর প্রতিবাদ জানিয়ে বক্তব্য থামাতে বলেন। এ সময় আরও কেউ কেউ চেঁচামেচি শুরু করেন। একজন তাঁকে মাইক্রোফোন দিয়ে দিতে বলেন। এ সময় পুলিশের এক সদস্যকে তরিকুল আলমের হাত থেকে মাইক্রোফোন নিয়ে নিতে দেখা যায়।
এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলম বলেন, ‘আমি কী বলতে চেয়েছিলাম, তা বলতে দেওয়া হলো না। আমার বক্তব্য শেষ করতে দেওয়া হলো না।’ এই বলে তিনি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন।
সামনের সারিতে বসা জামায়াত নেতা লতিফুর রহমান উত্তেজিত হয়ে আঙুল উঁচিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল আলমের দিকে তেড়ে আসেন। তাঁকে বক্তব্য থামাতে বলেনউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তোলা নারীর মৃত্যু, পরিবার বলছে আত্মহত্যা
যুক্তরাজ্যের প্রিন্স অ্যান্ড্রু এবং কুখ্যাত যৌন নিপীড়ক ও নারী পাচারকারী জেফরি এপস্টেইনের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনা নারী ভার্জিনিয়া জিউফ্রির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ৪১ বছর বয়সী এই নারী আত্মহত্যা করেছেন।
যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত জেফরি এপস্টেইন ও তাঁর সাবেক প্রেমিকা জিসলেন ম্যাক্সওয়েলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালো ও প্রকাশ্য অভিযোগকারীদের একজন ছিলেন জিউফ্রি। তিনি দাবি করেছিলেন, তাঁর বয়স যখন ১৭ বছর ছিল, তখন তাঁকে ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্স অ্যান্ড্রুর কাছে নেওয়া হয়েছিল। তবে প্রিন্স অ্যান্ড্রু এসব অভিযোগ জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন।
জিউফ্রির পরিবারের পক্ষ থেকে গতকাল শুক্রবার একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘তিনি (জিউফ্রি) যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একজন সাহসী যোদ্ধা ছিলেন এবং নির্যাতনের চাপ সহ্য করাটা তাঁর পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছিল না। জীবনভর যৌন নিপীড়ন ও পাচারের শিকার হয়ে তিনি আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।’
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত বৃহস্পতিবার পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায় নিজের খামারবাড়িতে মারা গেছেন এই নারী। তিনি তিন সন্তানের মা ছিলেন।
পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ বলছে, শুক্রবার রাতে নিরগ্যাবি এলাকার একটি বাড়িতে এক নারীর অচেতন অবস্থায় থাকার খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যায়।
পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৪১ বছর বয়সী ওই নারীকে ঘটনাস্থলেই মৃত ঘোষণা করা হয়।’
জিউফ্রির মৃত্যুর কারণ জানতে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ‘এটি সন্দেহজনক মৃত্যু নয়।’
তিন সপ্তাহ আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দেন জিউফ্রি। সেখানে তিনি একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হওয়ার কথা লিখেছিলেন। যদিও পরিবার পরে জানায়, এটা প্রকাশ করার ইচ্ছা তাঁর ছিল না। স্থানীয় পুলিশ পরে দুর্ঘটনার তীব্রতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে।
প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিজ্ঞতা প্রকাশ্যে আনার পর আলোচনায় এসেছিলেন জিউফ্রি। তিনি মি টু আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
জিউফ্রি অভিযোগ করেছিলেন, এপস্টেইন ও জিসলেন ম্যাক্সওয়েল তাঁকে কিশোর বয়সে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর কাছে পাচার করেছিলেন।
আরও পড়ুনকিশোরীদের নিয়ে এপস্টেইনের ব্যক্তিগত দ্বীপে সময় কাটান প্রিন্স অ্যান্ড্রু০৬ জানুয়ারি ২০২৪যদিও প্রিন্স অ্যান্ড্রু সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ২০২২ সালে তিনি জিউফ্রির সঙ্গে আদালতের বাইরে রফাদফা করেন। এর অংশ হিসেবে এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে প্রিন্স অ্যান্ড্রু দুঃখ প্রকাশ করেন। তবে তিনি কোনো দোষ স্বীকার বা ক্ষমা প্রার্থনা করেননি।
মার্কিন নাগরিক জিউফ্রি বলেছিলেন, ২০০০ সালে ব্রিটিশ অভিজাত সমাজের পরিচিত মুখ ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। এরপর তিনি এপস্টেইনের সঙ্গে পরিচিত হন এবং বহু বছর ধরে তাঁর ও তাঁর সহযোগীদের মাধ্যমে নির্যাতনের শিকার হন।
যুক্তরাজ্যের বর্তমান রাজা তৃতীয় চার্লসের ছোট ভাই প্রিন্স অ্যান্ড্রু। প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও প্রিন্স ফিলিপ তাঁর মা-বাবা। যৌন অপরাধের মামলায় বিচারের অপেক্ষায় থাকা জেফরি এপস্টেইন ২০১৯ সালে আত্মহত্যা করেছেন।