বাংলাদেশ সফরে আসা চীনা কমিউনিস্ট পার্টির একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার রাতে রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে এ বৈঠক হয়।
প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠকের পর বিএনপির মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের বৈঠকটি ছিল একটা পলিটিক্যাল পার্টির সঙ্গে আরেকটা দেশের পলিটিক্যাল পার্টির মিটিং। আমাদের সঙ্গে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সম্পর্ক অনেক পুরোনো। মাঝখানে ১৫ বছর ওই যোগাযোগটা ছিল না। কারণ, ফ্যাসিস্ট সরকার সেটা অ্যালাউ করেনি। এখন আবার সেটা রিভাইভ করেছি। ফলে চায়নিজ কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও গভীর থেকে গভীরতর হচ্ছে। আমাদের দুই পার্টির সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে।’

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির দক্ষিণ-পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ব্যুরোর কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিভাগের পেং জিউ বিনের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধিদল বৈঠকে ছিলেন। চীনের প্রতিনিধিদলের অন্য সদস্যরা হলেন চেন জুয়ানবো, চেন ইয়াংপেই, ঝাং গুইউ, চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং দূতাবাসের রাজনৈতিক বিভাগের পরিচালক ঝাং জিং এবং লিউ হংরু।                                    
মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতিনিধিদলে ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবীর, মিডিয়া সেলের সদস্য মাহমুদা হাবিবা ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার।

বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না, প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি যে প্রশ্ন করেছেন রিগার্ডিং ইলেকশন এটা তো আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি খুব ভালো করে জানেন, চায়নিজ কমিউনিস্ট পার্টি বা চায়নিজ গভর্নমেন্ট তারা অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। তবে তারা জেনেছে যে নির্বাচনের ব্যাপারে পরিস্থিতি কী, দেশে বর্তমান পরিস্থিতি কী…আমরা সেটা তাদের ব্রিফ করেছি।’
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে চীন কী আশা করছে, জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা (চীন) সব সময় বাংলাদেশে একটা স্থিতিশীলতা চায়, একটা শক্তিশালী বাংলাদেশ দেখতে চায়, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দেখতে চায় এবং দেশে একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশ দেখতে চায়।

পরে চীনের রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীনা কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের অংশ হিসেবে আজকে বিএনপির সঙ্গে বৈঠক করেছে। এই বৈঠকে অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দুই দেশের সম্পর্কের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি, দুই দলের মধ্যে সম্পর্কের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে…কীভাবে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র সদস য ব এনপ র আম দ র ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ধোঁয়ায়-দূষণে ধুঁকছে গ্রামটি

একটি গ্রামেই গড়ে উঠেছে ৩৬টি ইটভাটা। দিনরাত ইট পোড়ানো হয় এসব ভাটায়। ইট নিতে সারাক্ষণ চলাচল করে যানবাহনগুলো। এতে ধুলা-ধোঁয়ায় প্রায় সময় আচ্ছন্ন থাকে গ্রামটি। এ চিত্র লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর রমিজ ইউনিয়নের চর আফজল গ্রামের।

চর আফজল গ্রামে বাসিন্দা রয়েছেন প্রায় ১৬ হাজার। অপরিকল্পিত ইটভাটার কারণে বেকায়দায় রয়েছেন তাঁরা। তবে শুধু এই গ্রাম নয়, পুরো চর রমিজ ইউনিয়নের বাসিন্দাদেরই ইটভাটার কারণে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চর আফজল গ্রামের আকাশজুড়ে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। এক-দুটি বাড়ির পরেই রয়েছে ইটভাটা। গ্রামের ৭৫ বছর বয়সী বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, ইটভাটার কারণে গাছপালাও মরে যাচ্ছে। আগুনের তাপে গাছগুলো লাল হয়ে যায়। আরেক বাসিন্দা কৃষক নজরুল মিয়া বলেন, লোকালয়ের মধ্যে থাকা ভাটায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে রবি শস্যের। এখন আর এ এলাকায় তেমন রবিশস্য হয় না।

বসতবাড়ির পাশে ও ফসলি জমিতে ইটভাটা করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইটভাটার মালিক নুরুল ইসলাম, মো. আলমগীর ও কামরুল ইসলাম বলেন, ইটভাটাগুলো আগেই করা হয়েছে। তখন গ্রামে মানুষের বসতি কম ছিল।

২০২৪ সালে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগরের সব অবৈধ ইটভাটা বন্ধের আদেশ চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট করেন আইনজীবী সালাহ উদ্দিন। তিনি জানান, রিটে রামগতি উপজেলার ৪৮ এবং কমলনগর উপজেলার ১০টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের আদেশ চাওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত অবৈধ ইটভাটাগুলো বন্ধের আদেশ দিয়েছেন। এরপরও এসব ইটভাটা বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন।

জানতে চাইলে রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাইকোর্টের আদেশের পর আমরা বেশ কিছু ইটভাটা ভেঙে দিয়েছি। প্রশাসনের লোকজন চলে আসার পর তাঁরা আবারও ইটভাটা মেরামত করে কার্যক্রম শুরু করেছেন। এ জন্য তাঁদের বিরুদ্ধে ২০টি মামলা করা হয়েছে এবং ইটভাটাগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ ইটভাটা বন্ধের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ