বাংলাদেশের গেমারদের জন্য বিশেষ ফিচার ঘোষণা করেছে পাবজি মোবাইল। অচিরে বাংলাদেশে চালু হতে যাচ্ছে নিজস্ব সার্ভার। ফলে লো ল্যাটেন্সি আর স্মুথ গেমিং অভিজ্ঞতা পাবেন গেমাররা।
শুধু তাই নয়, দেশের প্রথম অফিসিয়াল ‘পাবজি মোবাইল ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৫’ প্রতিযোগিতার নিবন্ধন চলছে। ১০ লাখ টাকার প্রাইজপুল টুর্নামেন্টের নিবন্ধন ২৫ এপ্রিল শেষ হবে। নিবন্ধন বিষয়ে জানা যাবে পাবজি মোবাইল বাংলাদেশের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে ফি লাগবে না।
পাবজি মোবাইল বাংলাদেশের গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করবে। ইতোমধ্যে দেশের গেমিং অবকাঠামো উন্নয়ন, তরুণ ও শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি এবং বিদেশে দেশের প্রতিভা বিকাশে উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানানো হয়।
পাবজি মোবাইলের লক্ষ্য বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে গেমিং ও ই-স্পোর্টসের ইতিবাচক দিক অবহিত করা এবং এ খাতে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য উদ্দীপনামূলক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা। তারই অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি দেশে ই-স্পোর্টস শিক্ষা ও সচেতনতা বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। যার অন্যতম আকর্ষণ হলো ‘ওয়ার্ল্ড অব ওয়ান্ডার ক্রিয়েশন (ওয়াও) প্ল্যাটফর্ম’। যেখানে কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গেমারদের জন্য অভিনব প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে। আগ্রহী গেমাররা নিজেদের কাস্টম ম্যাপ তৈরি, শেয়ার ও খেলার সুযোগ পাবেন। ডিজিটাল গেমিং দুনিয়ার প্রতি আগ্রহী তরুণদের মধ্যে নতুনত্ব, উদ্ভাবনী চিন্তাধারা ও ভার্চুয়াল সম্পৃক্ততা তৈরিতে যা সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে বলে উদ্যোক্তারা জানান।
ক্রিয়েটর, স্ট্রিমার, রিভিউয়ার, ইনফ্লুয়েন্সার ও সাধারণ গেমার— সবাই ‘ওয়াও’ প্ল্যাটফর্মে নিজের গেমিং অভিজ্ঞতা শেয়ার, সুচিন্তিত মতামত ও বাংলাদেশের গেমিং কমিউনিটির অংশীজন হতে পারবেন। ভবিষ্যতে যারা গেম ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট শিখতে আগ্রহী, তারা এর সুফল নিতে পারবেন।
পাবজি মোবাইলে রয়েছে ই-স্পোর্টস ইকোসিস্টেম, যেখানে স্থানীয় থেকে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। আগ্রহীরা এতে অংশ নিতে পারবেন। পুরস্কার জয়ের সঙ্গে বৈশ্বিক মঞ্চে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা সম্ভব।
পাবজি মোবাইলের সাউথ এশিয়া পাবলিশিং লিড বলেন, নতুন আবহে এবার বাংলাদেশে শুরুটা আনন্দের। ই-স্পোর্টস ও গেমিংয়ে বাংলাদেশ খুবই সম্ভাবনাময়। স্থানীয়দের সঙ্গে টেকসই গেমিং পরিবেশ গড়তে কাজ করছি। পাবজি মোবাইল বাংলাদেশে দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করবে। ডিজিটাল অগ্রযাত্রায় আমরা বাংলাদেশের অংশীজন হতে আগ্রহী।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ল য টফর ম ই স প র টস

এছাড়াও পড়ুন:

পাঠাগারে ‘নাস্তিকদের’ বই, ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে লুটের অভিযোগ

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে ‘অভয়ারণ্য’ পাঠাগারের চার শতাধিক বই লুটের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এসময় তারা জাফর ইকবাল, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামসহ বিভিন্ন লেখকের প্রায় চার শতাধিক বই লুট করেন।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে উপজেলার বাঁশহাটি এলাকায় অভয়ারণ্য পাঠাগারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পাঠাগার কর্তৃপক্ষ প্রশাসন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানা গেছে, বাংলাদেশ যুব খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী ওরফে রিশাদ আমীন অভয়ারণ্য পাঠাগার নিয়ে গত ২৪ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে দিনে-দুপুরে যুবককে হত্যা, অর্থ ও স্বর্ণালংকার লুট  

কক্সবাজারে আবারো গুলি ছুড়ে গরু লুট

সেখানে তিনি লিখেন, ‘ধনবাড়ীতে নাস্তিক্যবাদের কোনো জায়গা হবে না। এটাই ফাইনাল বক্তব্য আমাদের। নাস্তিক বানানোর এক কারখানার সন্ধান পেয়েছি আমরা। অতিদ্রুত আপনাদের কারখানায় তালা লাগিয়ে ধনবাড়ী ছাড়ুন। অনেকদিন অবৈধভাবে সরকারি জায়গা দখল করে ভণ্ডামি করেছেন আপনারা। আর এই সুযোগ পাচ্ছেন না। কথা ক্লিয়ার।’

ওইদিন রাত ৮টার দিকে খেলাফত মজলিসের যুব সংগঠনের ২০-২৫ নেতাকর্মী পাঠাগারে হামলা চালায়। এসময় পাঠাগারটির সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ পাঠাগারে উপস্থিত ছিলেন। তারা পাঠাগারে থাকা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, হুমায়ুন আহমেদ, হুমায়ুন আজাদ, জাফর ইকবালসহ কয়েকজন লেখকের চার শতাধিক বই রিকশায় করে নিয়ে যায়।

পাঠাগার থেকে বই নেওয়ার পর যুব খেলাফত মজলিসের নেতা ফেসবুকে আরেকটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘জয়বাংলা কর্মসূচী। বি:দ্র: যাদের বোঝা দরকার তারা বুঝতে পারছে।’

অভয়ারণ্য পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ বলেন, “বৃহস্পতিবার রাতে ২০-২৫ জন হুজুর পাঠাগারে প্রবেশ করে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। এসময় তারা ভেতরে ঢুকেই বলে, ওই, সব বই ব্যাগে তুল। এঁনে কোনো বই থাকব না। জাফর ইকবাল নাস্তিক, জাফর ইকবালের সব বই নে। এখান থেকে মানুষ নাস্তিকের বই পড়ে। এসময় মব সৃষ্টিকারী আরেকজন বলে, তোদের এ পাঠাগার থাকবো না। তোদের এখানে জাফর ইকবালের বই থাকবো ক্যা, প্রথম আলোর বই থাকবো ক্যা। এটা উপর থেকে নির্দেশ আছে ভেঙে দেওয়ার, পুড়িয়ে দেওয়ার।’’

দুর্জয় বলেন, “এই বলে বইগুলো সব নিতে থাকে তারা। পুড়িয়ে দেওয়ার কথা বলতে থাকে। তখন থানার কয়েকজন সদস্য সাদা পোশাকে এখানে আসেন। তারাও তাদেরকে নানা প্রশ্ন করেন। তখন হামলাকারীরা বুঝতে পারে তারা থানার লোক। তখন গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতিতে তারা পুড়িয়ে না দিয়ে চার শতাধিক বই লুটপাট করে।”

“এর আগে, ২০২২ সালেও অভয়ারণ্য পাঠাগারে রাতের অন্ধকারে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। তখন বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তখন আমরা জানতাম না কে আগুন দিয়েছিল। থানা কর্তৃপক্ষ আর বিষয়টি নিয়ে আগায়নি।”- যোগ করেন তিনি।

পাঠাগারের সভাপতি সুপ্তি মিত্র বলেন, “রাতে তারা পাঠাগারের বই লুটপাট করে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। তারা বইগুলো পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু, পুলিশের উপস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে বইগুলো নিয়ে গেছে। এখনও বইগুলো উদ্ধার হয়নি। তবে জানতে পেরেছি বইগুলো ইউএনও অফিসে রয়েছে।”

অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা যুব খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রব্বানী ওরফে রিশাদ আমীন বলেন, “পাঠাগারটির সদস্যরা ইসলামবিদ্বেষী লেখা ফেইসবুকে পোস্ট করত। পাঠাগারে হুমায়ুন আজাদ, হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবালসহ বিভিন্ন লেখকের বই ছিল যেগুলোতে নারীদের অধিকার আর ইসলাম বিদ্বেষী লেখা ছিল। সেসব বই নিয়ে ইউএনও অফিসে জমা দিয়েছি।”

এ বিষয়ে ধনবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম শহিদুল্লাহ বলেন, ‘‘কিছু লোকজন পাঠাগার থেকে হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবালসহ কয়েকজন লেখকের বই নিয়ে এসে ইউএনও অফিসে রেখেছে। তাদের দাবি, ওই লেখকরা নাস্তিক। কতগুলো বই নিয়েছে সেটা জানি না। রবিবার ইউএনও কার্যালয়ে বসে বিষয়টির সমাধান করা হবে।’’

ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহীন মাহমুদ বলেন, ‘‘পাঠাগার থেকে বই নিয়ে গেছে এমন একটি অভিযোগ পেয়েছি। রবিবার দুপক্ষকে ইউএনও কার্যালয়ে আসতে বলা হয়েছে।’’

ঢাকা/কাওছার/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ