দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত ন্যাশনাল অ্যানাটমি অলিম্পিয়াডে এমবিবিএস ক্যাটেগরিতে চ্যাম্পিয়নের মুকুট পরলেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী সালমান তারেক। প্রতিযোগিতায় বিডিএস ক্যাটেগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী জেবুন্নেসা রিয়া। 
গত শুক্রবার সকালে নগরের ফয়’স লেকের সি ওয়ার্ল্ডে ৮০ জন প্রতিযোগীর লড়াইয়ে এ দু’জন চ্যাম্পিয়ন হন।
এ ছাড়া এমবিবিএস ক্যাটেগরিতে প্রথম রানারআপ হন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী লাবিবা ফাইরুজ এবং দ্বিতীয় রানারআপ হন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আবরার বিন শফি। বিডিএস ক্যাটেগরিতে রানারআপ হয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটের শিক্ষার্থী নাহমির ইসলাম চৌধুরী। বিজয়ীদের হাতে সম্মাননা স্মারক, ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেন অতিথিরা। 
মেডিকেলভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়াই স্যাব-এর একাডেমিক প্ল্যাটফর্ম ‘হেলথ স্কুল’ ও  স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান এপিক হেলথ কেয়ারের যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ন্যাশনাল অ্যানাটমি অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। 
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেন। গেস্ট অব অনার ছিলেন সরকারের স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের প্রধান জাতীয় অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান। কি নোট স্পিকার ছিলেন ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ভাস্কুলার সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. সাকলায়েন রাসেল ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষার। বিশেষ অতিথি ছিলেন এপিক হেলথ কেয়ারের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার এসএম লোকমান কবির, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এসএম আবু সুফিয়ান, পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মো. আনোয়ার হোসেন। অলিম্পিয়াড সঞ্চালনা করেন ওয়াই স্যাবের  প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সুলতানা রুমা আলম। উপস্থিত ছিলেন হেলথ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ডা. হামিদ হোছাইন আজাদ। 
প্রধান অতিথি ডা. শাহাদাহ হোসেন বলেন, ‘অ্যানাটমি অলিম্পিয়াড দেশে প্রথম হচ্ছে এবং এটি হচ্ছে চট্টগ্রামে আর আমি এই চট্টগ্রাম শহরের মেয়র। আমি একজন চিকিৎসক। তাই চিকিৎসক হিসেবে এটি আমার জন্য গর্বের। আমার জন্য প্রথম অভিজ্ঞতাও। তাই আমি আয়োজকদের কাছে আশা করব, এমন সৃষ্টিশীল আয়োজন আগামীতেও যেন অব্যাহত থাকে।’
ডা. সাকলায়েন রাসেল বলেন, এনাটমি অলিম্পিয়ার্ডে চিকিৎসা পেশায় উৎসাহমূলক অনেক কথাই আলোচন হয়েছে। এখানে চিকিৎসা পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে নির্দেশনা এবং নানা কৌশলের কথাও আসছে। তাই আমি মনে করি মেডিকেল শিক্ষার্থীরা এই আয়োজন থেকে চিকিৎসা পেশা নিয়ে মৌলিক অনেক ধারনা অর্জন করতে পারছেন।
বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডা. আব্দুন নূর তুষার বলেন, চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিতদের গুরুত্বপূণ একটি অনুষঙ্গ মেডিকেল এথিকস। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এনাটমি অলিম্পিয়াডের মত একটি অনুষ্ঠানে মেডিকেল এথিকস নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। এই আলোচনা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক বেশি উপকারী। এটি তাদের শিক্ষা এবং পেশা জীবনে অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।   
এপিক হেলথ কেয়ারে চেয়ারম্যান প্রকৌশলী লোকমান হাকিম বলেন, এটি একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন। এ আয়োজনে পাশে থাকতে পেরে আমরা ধন্য মনে করছি। আগামীতেও এমন সৃজনশীল আয়োজনে এপিক পাশে থাকবে। একই সঙ্গে আগামীতে আয়োজনটি বড় পরিসরে করার পরিকল্পনা করা হবে।  
প্রসঙ্গত, মেডিকেল ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়াই স্যাব এর একাডেমিক প্ল্যাটফর্ম ‘হেলথ স্কুল’ প্রতিযোগীতায় এবার প্রথম পর্যায়ে দেশের ৮ বিভাগের ১২০টি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত চলে বাছাই পর্ব। নির্বাচিত ৮০ জনকে নিয়ে শুক্রবার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রস ক র ল কল জ র শ ক ষ র থ ম ড ক ল কল জ র অল ম প য় ড অ য ন টম অন ষ ঠ প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ফারুকের

জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার ওপর প্রকাশ্যে গুলি চালানো নারায়ণগঞ্জের এস এম রানাকে বিসিবিতে নিয়ে এসেছিলেন ফারুক আহমেদ। বিসিবির টাকায় তাঁকে র‍্যাডিসন হোটেলেও রাখা হয়েছিল। গত অক্টোবরে ফারুক-রানাকে প্রকাশ্যে মেলামেশা করতে দেখা গেছে। ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই সমালোচনার মুখে পড়েন বিসিবি সভাপতি। বিপিএলে স্পট ফিক্সিং ইস্যু, রাজশাহী ও চট্টগ্রামে বিতর্কিত ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়োগ, মধুমতি ও মেঘনা ব্যাংকে অস্বাভাবিকভাবে ১১৮ কোটি টাকার এফডিআর করা এবং সম্প্রতি তাওহিদ হৃদয়ের নিষেধাজ্ঞা ও তামিম ইকবালের চাপ প্রয়োগের ইস্যুতে নতজানু হওয়ার ঘটনায় বিতর্কিত হচ্ছেন ফারুক।

জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক বিসিবির প্রথম ক্রিকেটার সভাপতি। তাঁর কাছে তাই প্রত্যাশাও বেশি ছিল ক্রীড়ামোদীদের। অথচ কিছু বিতর্কিত ঘটনায় জড়িয়ে পড়া এবং একরোখা স্বভাবের কারণে আট মাসেই অজনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন তিনি। বেশির ভাগ পরিচালকের অভিযোগ, রেগে গেলে সভাপতির আচরণ শালীন থাকে না। তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীরা মনে করেন, মেজাজ হারিয়ে দিন দিন শত্রুতা বাড়াচ্ছেন ফারুক। তাঁর সাংগঠনিক ক্যারিয়ারকে যেটা প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করেন ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টরা। 

গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ফারুকের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়ান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রেস সচিব মাহফুজুল আলম। মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিসিবি সভাপতি ফারুকের সঙ্গে কয়েকজন বিতর্কিত লোকের ওঠাবসার কারণে ঝামেলার সূত্রপাত। বিশেষ করে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো রানাকে বিসিবিতে সম্পৃক্ত করা, আওয়ামী লীগ সম্পৃক্ত জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার খন্দকার সাইদুর রহমান এফিকে নিরাপত্তার দায়িত্বে রাখায় ক্ষুব্ধ ছিল মন্ত্রণালয়। এ দু’জনের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ফারুক কয়েক মাস আগে বলেছিলেন, ‘রানার সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততা ছিল নারায়ণগঞ্জের ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে। সে যে আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালিয়েছে, তা জানা ছিল না। এ ব্যাপারে অবগত হওয়ার পরই বাদ দেওয়া হয়েছে। খন্দকার সাইদুর রহমান এফি জাতীয় দলের ক্রিকেটার হিসেবে বিসিবিতে এসেছে। যখন জেনেছি তার ব্যাপারে আপত্তি আছে, তাকেও বাদ দিয়েছি।’

বিসিবি সভাপতি হওয়ার পর ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে এফডিআর সরিয়ে নিরাপদ ব্যাংকে নেওয়ার কথা বলেছিলেন ফারুক। গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে সবুজ ও হলুদ তালিকাভুক্ত ১৩টি ব্যাংক– মধুমতি ব্যাংক (হলুদ), ইস্টার্ন ব্যাংক (সবুজ), ব্র্যাক ব্যাংক (হলুদ), মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক (হলুদ), প্রাইম ব্যাংক (সবুজ), সিটি ব্যাংক (সবুজ), মেঘনা ব্যাংক (সবুজ), পূবালী ব্যাংক (হলুদ), অগ্রণী ব্যাংক (লাল), বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক (হলুদ) ও সিটিজেন ব্যাংকে (হলুদ) ২৩৮ কোটি টাকা নতুন করে এফডিআর করা হয়েছে। এই ব্যাংকগুলো থেকে ২ থেকে ৫ শতাংশ বাড়তি মুনাফা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। এফডিআর করার ফলে অংশীদার ব্যাংক থেকে ১২ কোটি টাকা স্পন্সর পাওয়া নিশ্চিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। মধুমতি ব্যাংক ও মেঘনা ব্যাংক ঢাকা ও জাতীয় লিগের স্পন্সর ছিল। নতুন করে এফডিআর করায় সভাপতিকে কেউ দোষারোপ করছে না। সমস্যা হয়েছে, মধুমতি (৬৬ কোটি টাকা) ও মেঘনা (৫২ কোটি টাকা) ব্যাংকে ১১৮ কোটি টাকা এফডিআর করা নিয়ে। ১১টি ব্যাংকে রাখা হয়েছে ১২২ কোটি টাকা, কিন্তু দুই ব্যাংকে কেন প্রায় অর্ধেক টাকার এফডিআর? একজন পরিচালকের কাছে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে নাম গোপন রাখার শর্তে তিনি বলেন, ‘সাধারণত মোটা অঙ্কের টাকা এফডিআর করা হলে কমিশন পাওয়া যায়। এই কমিশন বৈধ। সভাপতি সেটি নিয়েছেন কিনা, জানি না। তবে যেটুকু শুনেছি, মধুমতি ও মেঘনা ব্যাংকে সভাপতির বন্ধু আছেন। সে কারণে সেখানে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে।’ বিপিএল ও আন্তর্জাতিক সিরিজের টিকিট বিক্রির পার্টনারও মধুমতি ব্যাংক। এ বিষয়ে ফারুকের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘পুরোপুরি স্বচ্ছতার ভিত্তিতে কাজগুলো করেছি। সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দিয়েছিলাম, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে এফডিআর নিরাপদ ব্যাংকে নেওয়া হবে। বোর্ড সভায় অনুমোদন নিয়ে কাজটি করা হয়েছে। এ ছাড়া ফিন্যান্স ও লজিস্টিক কমিটির চেয়ারম্যানরা স্বাক্ষর করেছেন। মূলত আমার ইমেজ ক্ষুণ্ন করতে এ ধরনের কাজ করা হচ্ছে।’ তবে বিসিবি পরিচালক মাহবুবুল আনাম বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাক্ষর করি কোনো কিছু অনুমোদন করার পর। তখন ফিন্যান্স কমিটির সভাপতি ছিলেন সভাপতি নিজে। নিজস্ব ক্ষমতাবলে এফডিআর ১৩টি ব্যাংকে নিয়েছেন। তিনি সেটি পারেনও। যে ব্যাংকগুলোতে নেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে বিসিবি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে। এ কারণে নেওয়া হয়েছে।’

কে এই এসএম রানা
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, গত ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সামনে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালানোর সময় আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান ও তাঁর সহযোগীদের সঙ্গে ছিলেন এসএম রানা। এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় করা মামলার আসামি রানাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তিনি জামিন পেয়েছেন। এ ছাড়া ফতুল্লা থানায়ও ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা আছে। 

অভিযোগ রয়েছে, শামীম ওসমানের শ্যালক তানভীর আহমেদ টিটু, বিসিবির বর্তমান চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন, নগরীর নিতাইগঞ্জ বাপ্পী চত্বর এলাকার এসএম রানা মিলে ভূমিদস্যু সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন। এই সিন্ডিকেট জমি দখলসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল। শামীম ওসমান পরিবারের সহযোগিতায় রানা নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সহসভাপতি ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যকরী সদস্য হন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না ফারুকের
  • বান্দরবানে প্রথমবারের মতো ২১ কি.মি. হিল ম্যারাথন অনুষ্ঠিত
  • ‘বাঘা’ শরীফের বাজিমাত
  • বিদেশিরা বিনিয়োগ করলেও অগ্রাধিকার পাবে দেশ: বন্দর চেয়ারম্যান