লোডশেডিং সীমিত রাখার চেষ্টা করা হবে: জ্বালানি উপদেষ্টা
Published: 26th, April 2025 GMT
ভোক্তাদের শোষণ করার জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে করা চুক্তিগুলোতে বাড়তি দাম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই ট্যারিফ পর্যালোচনা করতে একটি কমিটি কাজ করছে। ‘জ্বালানি–সংকট: উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে শনিবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এসব কথা বলেন। তিনি আশ্বাস দেন এবারের গ্রীষ্মে লোডশেডিং সীমিত রাখার চেষ্টা করা হবে।
রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এ সেমিনারের আয়োজন করে ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স, বাংলাদেশ (এফইআরবি)।
বিদ্যুৎ উপদেষ্টা বলেন, বকেয়া বিল নিষ্পত্তি করা হয়েছে। তাই কয়লা, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), জ্বালানি তেলের মতো প্রয়োজনীয় জ্বালানি আমদানি করা যাবে। আশা করা হচ্ছে, পরিস্থিতি সামলানো যাবে। তবে খরচও কমাতে হবে। লোডশেডিংয়ে গ্রাম ও শহরের মধ্যে পার্থক্য থাকবে না।
বকেয়া শোধ করতে গিয়ে ভর্তুকি বেড়েছে, এটি আরও বাড়বে কি না; সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, চলতি অর্থবছরে বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্পে কাটছাঁট করা হয়েছে। এতে অনেক অপ্রয়োজনীয় খরচ কমানো হয়েছে। সাশ্রয় করা অর্থ বকেয়া শোধে কাজে লেগেছে। আগামী বছর তো বকেয়ার দায় নেই। তাই যতটুকু আমদানি হবে, ততটুকুর বিল। ভর্তুকি বাড়বে না, আরও কমবে।
সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, সমুদ্রে তেল–গ্যাস অনুসন্ধানে দরপত্র জমা না দেওয়ার বিষয়ে কয়েকটি বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে পেট্রোবাংলার কমিটি কথা বলেছে। তাদের মতামতের ভিত্তিতে উৎপাদন অংশীদারিত্ব চুক্তি (পিএসসি) সংশোধন করা হচ্ছে। এরপর নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হবে।
কাতারের জ্বালানিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, বকেয়া শোধ করায় দাম কমানোর বিষয়ে বলা হয়েছিল। কাতার বলেছে, বিদ্য মান চুক্তিতে কিছু করা যাবে না। তবে ভবিষ্যতে আরও এলএনজি আমদানি করা হলে, তারা কম দামে দেবে।
শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, বেশি দামে গ্যাস নেওয়ার জন্য ৬০০ থেকে ৭০০ আবেদন জমা পড়েছে। তারা প্রতি ইউনিট ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দিয়ে গ্যাস নিতে চায়। অথচ সবাই বলেছে, বিনিয়োগ ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। আর বলছে বৈষম্য, কিসের বৈষম্য। যার প্রয়োজন সে যদি বেশি দামে নেয়, তাহলে কিসের বৈষম্য। গ্যাসের দাম বেশি হলে তারা বিকল্প জ্বালানি দেখবে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা এম শামসুল আলম বলেন, পুরোপুরি আমদানির দিকে চলে যাচ্ছে জ্বালানি খাত। কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের পুরো সক্ষমতা ব্যবহার না করে বেশি খরচের তেলচালিত কেন্দ্র চালানো হচ্ছে। জ্বালানি শুধু উন্নয়নের বিষয় নয়, ন্যায়ের বিষয়, যা প্রতিষ্ঠা করা যুদ্ধের মতো।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, জ্বালানি নীতির সংস্কার দরকার। যেখানে জ্বালানি রূপান্তরের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে থাকবে।
সেমিনারে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন পিডিবির চেয়ারম্যান মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ব ল ন উপদ ষ ট উপদ ষ ট আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সরকার শিগগির স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করবে: প্রেস সচিব
দেশের কারখানাগুলোয় স্বচ্ছন্দে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল বৃহস্পতিবার কাতারের দোহায় সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
শফিকুল আলম বলেন, ‘অনেকে বলেছেন, গ্যাসের অভাবে তাঁরা কারখানা স্থাপন করতে পারছেন না। তাই আমরা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করতে চাই, যাতে পর্যাপ্ত গ্যাস (বিদেশ থেকে) আনা যায়।’
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দোহা সফরকালে কাতার এনার্জির সঙ্গে একটি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানান শফিকুল আলম। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কারখানাগুলোয় গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে শিগগির স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনালটি স্থাপন করা হবে।
প্রধান উপদেষ্টার দোহা সফর সম্পর্কে তাঁর প্রেস সচিব বলেন, এই সফর অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসূ হয়েছে। তিনি বলবেন, এটি সবচেয়ে সফল ও অত্যন্ত আকর্ষণীয় সফরগুলোর একটি।
শফিকুল আলম আশা প্রকাশ করেন, এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনাম বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে। অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসবেন।
দেশের অর্থনীতির উত্থান-পতনের কথা তুলে ধরে শফিকুল আলম বলেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ৩২০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ ছিল। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার তা কমিয়ে ৬০ কোটি মার্কিন ডলারে নিয়ে এসেছে।
অবশিষ্ট ঋণ কয়েক মাসের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলে উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব।