ইরানের বন্দরে বিস্ফোরণে নিহত ৪, আহত ৫১৬
Published: 26th, April 2025 GMT
ইরানের বন্দর আব্বাসের কাছে শহীদ রাজয়ি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫০০ জনের বেশি। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ কথা জানিয়েছে।
বিস্ফোরণের সঠিক কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। বন্দরটির শুল্ক কার্যালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় টিভিতে জানানো হয়, সম্ভবত বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থ সংরক্ষণ ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ফলে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, বন্দরের এলাকা থেকে ঘন কালো ধোঁয়া উড়ছে এবং সেখানে জ্বলতে থাকা বহু কনটেইনারের আগুন নেভাতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।
স্থানীয় জরুরি সেবা বিভাগের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় টিভি জানিয়েছে, কমপক্ষে ৫১৬ জন আহত হয়েছেন। অনেককেই কাছের চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে নেওয়া হয়েছে।
ইরানের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির রিলিফ অ্যান্ড রেসকিউ অর্গানাইজেশনের প্রধান বাবাক মাহমুদি পরে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে জানান, ‘উদ্ধারকারীরা অন্তত চারজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।’
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান বিস্ফোরণের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। তিনি ‘পরিস্থিতি ও কারণ খতিয়ে দেখতে’ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসকান্দার মোমেনিকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন।
শহীদ রাজয়ি বন্দর ইরানের রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে অবস্থিত। এটি ইরানের সবচেয়ে উন্নত কনটেইনার বন্দর বলে জানিয়েছে ইরনা। এটি বন্দর আব্বাস শহরের ২৩ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং হরমুজ প্রণালির উত্তরে অবস্থিত। এই প্রণালি দিয়ে বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ তেল পরিবহন করা হয়।
রাজয়ি বন্দর ইরানের হরমোজগান প্রদেশে অবস্থিত। প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান মেহরদাদ হাসানজাদে রাষ্ট্রীয় টিভিকে জানান, শহীদ রাজয়ি বন্দরের সংরক্ষিত কয়েকটি কনটেইনার বিস্ফোরণের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কাছের চিকিৎসাকেন্দ্রে পাঠাচ্ছি।’
ফার্স বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, বিস্ফোরণের শক্তি এতটাই তীব্র ছিল যে ৫০ কিলোমিটার দূর থেকেও তা অনুভূত হয়েছে। তাসনিম বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, বিস্ফোরণে বন্দরের বেশির ভাগ ভবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল প্রোডাক্টস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিস্ফোরণের সঙ্গে কোনো পরিশোধনকেন্দ্র, জ্বালানি ট্যাংক, বিতরণকেন্দ্র বা তেলের পাইপলাইনের কোনো সম্পর্ক নেই। তারা আরও জানিয়েছে, বন্দর আব্বাসের তেল স্থাপনাগুলো স্বাভাবিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, এ ধরনের বিস্ফোরণ ইরানে বিরল ঘটনা। কয়েক মাস আগেই ইরানের পূর্বাঞ্চলের তাবাসে একটি কয়লাখনিতে গ্যাস লিকেজের কারণে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনায় ৫০ জনের বেশি নিহত হয়েছিলেন। আজ বিস্ফোরণের সময় ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা ওমানে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় ব্যস্ত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লার বাণিজ্য মেলার ভাল্লুক-বানর এখন সাফারি পার্কে
কুমিল্লা নগরীর একটি বাণিজ্য মেলার সার্কাস থেকে একটি ভাল্লুক ও দুইটি বানর উদ্ধার করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন আইনে এসব প্রাণি উদ্ধার করে গাজীপুর সাফারি পার্কে সংরক্ষণের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে নগরীর জাঙ্গালিয়া এলাকার ‘কুমিল্লা কুটির শিল্প ও বাণিজ্য মেলা’ থেকে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা লিজার নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা লিজা জানান, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ওই বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করা হয়। মেলায় সার্কাস প্রদর্শনের জন্য আনা ভাল্লুক ও বানর খাচায় বন্দি করে রাখা হয়। এ ধরনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে। পরে শনিবার ঢাকা থেকে ইউনিটের একটি দল অভিযান পরিচালনা করে একটি ভাল্লুক ও দুইটি বানর জব্দ করে। এগুলো গাড়িতে করে গাজীপুর সাফারি পার্কে পাঠানো হয়েছে।
অভিযানে কুমিল্লা বন বিভাগ ও র্যাপিড রেসপন্স বিডি ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা সহযোগিতা করে।