তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী রিপোর্ট জমা দেবে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশন
Published: 26th, April 2025 GMT
তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী পর্যালোচনা করে যথাযথভাবে স্বাস্থ্যখাত সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশনের সদস্য ও কমিউনিটি ক্লিনিক হেলথ সাপোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
আজ শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন অব দি রুরাল পূয়র (ডর্প) আয়োজিত এক যুব সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। তিনি বলেন, তামাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা একটি কঠিন কাজ, তবে এটিই আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ।
সম্মেলনে তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রণীত খসড়ার সংশোধনীগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরে ডর্প যুব ফোরাম। সেগুলো হলো- অধূমপায়ীদের সুরক্ষার জন্য সব ধরনের পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা, তামাক পণ্যের প্রচার বন্ধ করার জন্য বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা, ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্ষা করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, তামাকপণ্যের সব প্রকার খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা ও সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৯০ শতাংশ করা। এছাড়াও তারা তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে বিভিন্ন কৌশল, সাফল্য, চ্যালেঞ্জ ও দাবি উপস্থাপন করে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের (এনটিসিসি) মহাপরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো.
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খন্দকার বলেন, মিয়ানমারে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ১২ বার সংশোধিত হয়েছে। আমাদের তাদের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাস করতে হবে।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ডর্পের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠাতা এএইচএম নোমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডর্পের উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ডেইলি স্টার-এইচএসবিসি সম্মাননা পেলেন কৃতী শিক্ষার্থীরা
ও-লেভেল এবং এ-লেভেল পরীক্ষায় কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিয়েছে ডেইলি স্টার এবং এইচএসবিসি ব্যাংক। গতকাল শনিবার পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিটের নীরবতা পালন করা হয়। এবারের আয়োজনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘আগামীর রাষ্ট্রনির্মাতাদের অভিবাদন’ (স্যালুটিং দ্য নেশন বিল্ডার্স অব টুমোরো)।
অনুষ্ঠানে সংবর্ধনাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী ছাড়াও তাদের অভিভাবক, শিক্ষক, বন্ধুবান্ধব এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহ্ফুজ আনাম।
এ বছর এডেক্সেল এবং কেমব্রিজ কারিকুলামের অক্টোবর–নভেম্বর ২০২৩, জানুয়ারি ২০২৪, মে–জুন ২০২৪ এবং অক্টোবর–নভেম্বর ২০২৪ সেশনের মোট ২ হাজার ৩৭৫ জন শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে ও-লেভেলে ১ হাজার ৮২৪ জন এবং এ-লেভেলে ৫৫১ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।
কৃতী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ও-লেভেলে বিশ্ব পর্যায়ে সেরা ৬৭ জন এবং দেশসেরা ৬২ জন রয়েছেন। এ ছাড়া এ-লেভেলে বিশ্ব পর্যায়ে সেরা ১৫ জন এবং দেশসেরা ৩২ জন শিক্ষার্থীকে সম্মান জানানো হয়।
সারা দেশের ১১২টি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই কৃতিত্ব অর্জন করেছে। কেমব্রিজ পরীক্ষার ক্ষেত্রে পরপর দুটি ও-লেভেল সেশনে কমপক্ষে ছয়টি এ গ্রেড এবং এ-লেভেলে তিনটি এ গ্রেড অর্জনকারীরা সংবর্ধনা পেয়েছেন। এ ছাড়াও আইজিসিএসই পরীক্ষায় এক বা দুটি ধারাবাহিক সেশনে ছয়টি বিষয়ে সাত বা তার বেশি গ্রেড অর্জনকারী এবং আইএএল-এ এক বা দুটি ধারাবাহিক সেশনে তিনটি এ বা তার বেশি গ্রেড অর্জনকারীদের পুরস্কার দেওয়া হয়।
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহ্ফুজ আনাম কৃতী শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন।
এইচএসবিসি বাংলাদেশের হেড অব ইন্টারন্যাশনাল ওয়েলথ অ্যান্ড প্রিমিয়ার ব্যাংকিং /তানমি হক, আইডিপি এডুকেশন বাংলাদেশ লিমিটেডের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজিব মাহবুবুল, পিয়ারসন এডেক্সেল, বাংলাদেশ ও নেপালের আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল মামুন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আসিফ নজরুল বলেন, ‘বড় স্বপ্ন দেখো এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য চেষ্টা করো। সব সময় নিজেকে জিজ্ঞেস করো আমি কি শুধু নিজের জন্যই বাঁচব, নাকি অন্যদের জন্যও? আর যদি অন্যদের জন্য বাঁচার সিদ্ধান্ত নাও, তবে সেটা যেন তোমার দেশের মানুষের জন্য হয়।’
রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘তোমরা চাইলেই উন্নত কোনো দেশে গিয়ে ভালো ক্যারিয়ার গড়তে পারো, কিন্তু যদি তা করো, তবে যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন আমরা সবাই দেখি, তা কখনো বাস্তবায়িত হবে না। জাতি গঠনে আমাদের সবারই একটা ভূমিকা আছে, এটা আমাদের স্বীকার করতে হবে। আর আমার প্রধান অনুরোধ হলো, তোমরা দেশের সেবা করো।’
মাহ্ফুজ আনাম বলেন, ‘তোমরা যদি সত্যিকার অর্থেই আগামীর জাতি-নির্মাতা হতে চাও, তবে প্রথমেই তোমাদের দেশকে ভালোবাসতে হবে।’
অনুষ্ঠানে শিখোর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও শাহির চৌধুরী, অ্যাঙ্করলেস বাংলাদেশ-এর প্রতিষ্ঠাতা রাহাত আহমেদ এবং টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আয়মান সাদিক তিনটি পৃথক অনুপ্রেরণামূলক সেশনে অংশ নেন।
এই আয়োজনের টাইটেল স্পনসর এইচএসবিসি ব্যাংক। একাডেমিক পার্টনার হিসেবে পিয়ারসন এডেক্সেল এবং এডুকেশন পার্টনারের দায়িত্বে ছিল আইডিপি।
ডেইলি স্টার ১৯৯৯ সাল থেকে এই ব্যতিক্রমী বার্ষিক আয়োজনটি করে আসছে।