‘মেসিকে মেসির মতো থাকতে দিন’, ভক্ত–সমর্থকদের আর্জেন্টিনার ফুটবলপ্রধানের আহ্বান
Published: 26th, April 2025 GMT
লিওনেল মেসি কি ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন?
অনেক দিন ধরেই প্রশ্নটি উঠছে। স্বয়ং মেসিই এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন একাধিকবার। তাঁর সব কথার ভেতরে প্রচ্ছন্ন একটি বার্তাই বারবার ফুটে উঠেছে। আগামী বিশ্বকাপে খেলার বিষয়ে মেসি আগেভাগে কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে চান না। নিজের ফিটনেসে খেয়াল রেখে প্রতিটি দিন ধরে ধরে এগোতে চান। অর্থাৎ বিশ্বকাপ দরজায় কড়া নাড়া পর্যন্ত মেসি সবদিক থেকে ফিট থাকলে হয়তো খেলবেন। যদিও তাঁর আশপাশের মানুষ বেশ আগে থেকেই আশায় তা দিচ্ছেন। আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি থেকে জাতীয় দলের মেসির বেশ কয়েকজন সতীর্থই তাঁকে ২০২৬ বিশ্বকাপে দেখছেন।
আরও পড়ুনএল ক্লাসিকো: যে কারণে রিয়াল জিততে পারে, হারতে পারে যে কারণে৬ ঘণ্টা আগেযেমন দেখছেন আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সভাপতি ক্লদিও তাপিয়াও। টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাপিয়া বলেছেন, ‘আশা করি, সে বিশ্বকাপে খেলবে। আমরা সবাই এটা চাই। সে এটার যোগ্য। ব্যাপারটা তার ওপর নির্ভর করছে, তার ইচ্ছা ও সে কেমন করছে, তার ওপর।’
অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত মেসির। কিন্তু সেটি তিনি জানানোর আগেই চারপাশ থেকে তাঁর খেলার বিষয়ে প্রত্যাশার বেলুনও ফোলানো হচ্ছে প্রচুর। তাপিয়া এখানে ব্যতিক্রম। তাঁর চাওয়া মেসিকে খামাখা চাপে না ফেলে তিনি নিজের মতো থাকুক, খেলাটি উপভোগ করুক, ‘তাকে তার মতো থাকতে দিতে হবে, উপভোগ করতে দিতে হবে। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়কে আমরা নিজেদের জাতীয় দলে খেলতে দেখছি, এটাই তো যথেষ্ট।’
এএফএ সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব শ বক প
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হলে সুবিধা পাবে ভারত
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতির মধ্যেই উত্তরণ ঘটলে তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়ে দেশের অনেক শিল্পকারখানা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ: প্রস্তুতি ও বাস্তবতা’ শিরোনামের গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এমন আশঙ্কার কথা জানান।
রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে গতকাল বুধবার চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ নামে একটি সংস্থা এ বৈঠকের আয়োজন করে। এতে কয়েকজন রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, শিক্ষক, গবেষক ও আমলা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের দ্য স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের অধ্যাপক মুশতাক খান বলেন, বাংলাদেশ যদি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্কছাড় সুবিধা কমবে; বিদেশি ঋণের সুদের হার বাড়বে এবং দেশি শিল্পকারখানা তীব্র প্রতিযোগিতায় পড়ে অনেকটি বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে।
এ অর্থনীতিবিদ বলেন, প্রতিযোগী দেশগুলো চাইবে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে যাক; তাহলে তাদের সুবিধা হয়। প্রতিযোগী দেশের মধ্যে অন্যতম ভারত। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে গেলে, অর্থাৎ বাণিজ্য সুবিধা না পেলে ভারতই সবচেয়ে লাভবান হবে। জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশ যদি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করে, সে ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে প্রতিযোগীরা। তারা চাইবে বাংলাদেশের আবেদন যেন বিবেচনা করা না হয়।
চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের গবেষণাপ্রধান ইশতিয়াক বারী বলেন, বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশে থেকে উত্তরণের তিনটি শর্তই পূরণ করেছে। ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর থেকে বাংলাদেশ এ তালিকা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কথা। কিছু দেশ ও অঞ্চলে বাংলাদেশের বাণিজ্যে শুল্কছাড় সুবিধা ২০২৯ সাল পর্যন্ত থাকবে। ওষুধ উৎপাদনে মেধাস্বত্বে ছাড় সুবিধা থাকবে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত।
তিনি বলেন, কোনো দেশ নিজের সিদ্ধান্তে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দিতে পারে না। পেছাতে চাইলে জাতিসংঘে আবেদন করতে পারে। অবশ্য এ জন্য শক্ত যুক্তি থাকতে হয়।
গত ১৩ মার্চ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় নির্ধারিত সময় অনুযায়ী ২০২৬ সালেই উত্তরণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মুশতাক খান প্রশ্ন করেন, চীন ও ভারতের পণ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের উৎপাদকরা কি প্রতিযোগিতায় টিকতে পারবে? বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক শিল্প, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যশিল্প, ওষুধ শিল্প– এসব খাত কি প্রস্তুত? সার্বিকভাবে বাংলাদেশ কি প্রস্তুত? উত্তরও তিনিই দেন। বলেন, ‘আমি প্রমাণ দেখছি না।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি করা অর্থনীতির নানা পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, যার ওপর ভিত্তি করে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পথে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি আর্থিক খাতের দুরবস্থা, ব্যাংক খাতের সংকট, রপ্তানি খাতে বৈচিত্র্য না আসাসহ বিভিন্ন সংকটের কথা উল্লেখ করেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ বিষয়ে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন থাকতে হবে। বিগত ১৫ বছরে দেশে গণতন্ত্র ছিল না। এখন বাংলাদেশ গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের আশা করছে। ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকার আসবে। উত্তরণের বিষয়টি নিয়ে সংসদে বিতর্ক হওয়া উচিত। তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ পিছিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া উচিত এবং পরে জনগণের প্রতিনিধিদের মধ্যে বিতর্কের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত হওয়া দরকার।