সীমান্ত নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রতিবেশি ভারতের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মতো কথা বলতো বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর। তিনি বলেন, প্রতিবেশি রাষ্ট্র হিসেবে আমরা চাই, ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ, ন্যায্যতার সম্পর্ক হবে। গোলামীর সম্পর্ক নয়। ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ সীমান্তের ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে পারে নাই। তারা ভারতের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের মতো কথা বলেছিলেন। এখন তারা ভারতে গিয়েই আশ্রয় নিয়েছেন।

আজ শনিবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা শহরের শেরে বাংলা মোড়ের মুক্তমঞ্চে গণঅধিকার পরিষদ পঞ্চগড় শাখা কর্তৃক আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, আমাদের কষ্ট লাগে, আমরা দেখি, সীমান্তে আমাদের নিরীহ বাংলাদেশি মানুষদের হত্যা করা হয়। ওপারের কিছু উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী যারা ধর্মের নামে রাজনীতি করে একটা সংকট সৃষ্টি করতে চায়। তারা মুসলমানদের নিয়ে গালি দেয়। বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীসহ বিজেপির লোকজন উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে। তারা বাংলাদেশ দখলের কথা বলে। বাংলাদেশ দখল করা সহজ নয়। 

ভারতের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের একদিক থেকে চীন গুতা দেয়, একদিক থেকে পাকিস্তান। চীন-পাকিস্তান সামলাতেই আপনাদের জান শেষ। আপনারা বাংলাদেশের সঙ্গে লাগতে আইসেন না। তিন দিক থেকে গুতো শুরু হলে আপনারা টিকতে পারবেন না। 

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি বলেন, আমরা বুকের রক্ত দিয়ে দেশ থেকে চাঁদাবাজদের হটিয়েছি। দখলদারদের আমরা জীবন দিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছি। এখন কি দখল আর চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে। এখন চাঁদাবাজ দখলদার কারা। আমরা একটা পরিবর্তনের রাজনীতির কথা বলি। 

রাজনৈতিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের স্বভাব চরিত্র যদি আওয়ামী লীগের মতো হয়, ভোট কিন্তু হয় নাই, সামনে আছে। জনগণ কিন্তু ভোটের মাধ্যমে তার জবাব দিবে।

নুর বলেন, আমরা আর আওয়ামী জামানার ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই না। সময় এসেছে, এইবার যদি পরিবর্তন করতে না পারেন, পরবর্তীতে আফসোস করবেন। আমি বলবো না যে, আমার দলের লোককে ভোট দেন। যারা ভালো, তাদেরকে আপনারা ভোট দিয়ে সংসদে পাঠাবেন।

ডাকসুর সাবেক ভিপি বলেন, গণধিকার পরিষদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে দুর্নীতি, লুটপাট, দখলের অভিযোগ নাই। এজন্য তারুণ্যের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে এই তরুণদেরকে বিশ্বাস করতে পারেন। সুযোগ দিয়ে দেখতে পারেন। সুযোগ পেলে আমরা দেশকে বদলে দিতে চাই, আমরা আমৃত্যু চেষ্টা চালিয়ে যাব।


গণসমাবেশের সভাপতিত্ব করেন জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মাহাফুজার রহমান। এতে কেন্দ্রীয় শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর আসাদ, গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য হানিফ খান সজিব, গণঅধিকার পরিষদ রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ মুন্নাফ, গণসংহতি আন্দোলনের পঞ্চগড়ের আহ্বায়ক সাজেদার রহমান সাজু, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি জাগপার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার বিপ্লব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বিসহ গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ল হক ন র স ব ক ভ প ন র ল হক ন র র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ এ দেশে রাজনীতি করতে পারবে না: ভিপি নুর

গণঅধিকার পরিষদের (জিওপি) সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নূরল হক নুর বলেছেন, “জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান শুধুমাত্র আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতন ঘটায়নি এ দেশের ছাত্রজনতা; ভারতীয় আগ্রাসন এবং আধিপত্যকেও উচ্ছেদ করেছে। কাজেই আমাদের অবস্থান পরিষ্কার, অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ঠিকানা হবে না।”

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ এ দেশে আর রাজনীতি করতে পারবে না। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো দেশে এই ধরণের জঘন্য গণহত্যা ও বর্বরতা চালানোর পর অভিযুক্ত রাজনৈতিক দল রাজনীতি করতে পারেনি।”

শনিবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌড়ঙ্গী মোড়ের মুক্তমঞ্চে জেলা গণঅধিকার পরিষদ অয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না: নুর

আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর

নূরুল হক নুর বলেন, “আমার দেশের মানুষ সীমান্তে মরে, কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৬ বছর কোনো প্রতিবাদ করেনি। সরকারের মন্ত্রীরা বলেছিলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক। এখন তারা জনগণের প্রতিরোধের মুখে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। এতেই প্রমাণিত, আওয়ামী লীগ ছিল ভারতের দাস, গোলামি করা রাজননৈতিক দল। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে আমরা চাই, ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হবে, ন্যায্যতার সম্পর্ক হবে; গোলামির সম্পর্ক নয়।”

তিনি বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর ভুলে গেলে চলবে না- তাদের সুবিধাবাজি, ভাওতাবাজি চিন্তাভাবনার কারণেই গত ১৬ বছর তাদের ডাকে জনগণ রাস্তায় নামেনি। ছাত্র-জনতা তরুণদের বিশ্বাস করেই বাংলাদেশকে নতুনভাবে বিনির্মাণ করার জন্য বুক চেতিয়ে লড়াই করেছে এ দেশের জনগণ।”

তিনি আরো বলেন, “একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন এবং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত যত আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে, প্রত্যেকটি আন্দোলনেই সাধারণ শ্রমিক, কৃষক, জনতা সংগ্রাম করেছে; এর ফল ভোগ করেছে ভাওতাবাজ ভণ্ড রাজনীতিবিদরা। আমরা বলতে চাই, আর ভাওতাবাজ ভণ্ড রাজনীতিবিদদের পেছনে ঘুরে দেশ, সমাজ, এলাকার ক্ষতি করা যাবে না। ভবিষ্যত নষ্ট করা যাবে না। এখন সময় এসেছে ঘুরে দাঁড়ানোর। সমাজকে পরিবর্তনের জন্য সাধারণ ছাত্র-জনতাকেই নেতৃত্ব দিতে হবে।”

নূরুল হক নুর বলেন, “আওয়ামী লীগের আমলে লুটপাট, দখলদারি, চাঁদাবাজি আর মাফিয়াদের রাজনীতি চলেছে। গণঅভ্যুত্থানের পরেও কিন্তু তার পরিবর্তন হয়নি। ট্রাক, টেম্পু, বাস স্ট্যান্ড থেকে আগে যেভাবে চাঁদা তোলা হত, এখনো তা বন্ধ হয়নি। আওয়ামী লীগ পালিয়ে গেলেও কাঁচা বাজার, সবজি বাজার, সমিতি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, গার্মেন্টস, মিল ফ্যাক্টরি থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। চাঁদাবাজ, দখলদারদের তো আমরা জীবন দিয়ে, বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হটিয়েছি, বিতারিত করেছি, তাহলে এখন চাঁদাবাজ, দখলদার কারা? আমরা একটা পরিবর্তনের রাজনীতির কথা বলি। বিভিন্ন রাজননৈতিক দলের নেতাদের বলি- আপনাদের স্বভাব-চরিত্র যদি আওয়ামী লীগের মতো হয়, জনগণ কিন্তু ভোটের মাঠে জবাব দেবে।”

পঞ্চগড় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মাহাফুজার রহমান সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কেন্দ্রীয় শ্রমিক অধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর আসাদ, গণসংহতি আন্দোলনের পঞ্চগড়ের আহ্বায়ক সাজেদুর রহমান সাজু, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি- জাগপার সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার বিপ্লব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি।

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আ. লীগের বিচার নিশ্চিত করে নির্বাচন দিতে হবে: রাশেদ খাঁন 
  • আ.লীগ এ দেশে রাজনীতি করতে পারবে না: ভিপি নুর
  • ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না: নুর
  • নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ওলামা সমাজ: মামুনুল হক