বিশ্বজুড়ে আইফোন ব্যবহারকারীদের সতর্ক করে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে অ্যাপল। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, গুগলের জনপ্রিয় ব্রাউজার ‘ক্রোম’ ব্যবহারে ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য ও আর্থিক গোপনীয়তা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়তে পারে। যদিও ভিডিওতে সরাসরি গুগলের নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবুও বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, অ্যাপলের এই প্রচারণার মূল লক্ষ্যই ছিল ‘ক্রোম’।

‘ফ্লক’ শিরোনামের ভিডিওতে দেখা যায়, এক আইফোন ব্যবহারকারী চারপাশের অসংখ্য নজরদারি ক্যামেরার হাত থেকে পালাতে চেষ্টা করছেন। ক্যামেরাগুলো যেন প্রতিটি অনলাইন কার্যক্রমে তাঁকে অনুসরণ করছে। শেষ পর্যন্ত তিনি যখন অ্যাপলের নিজস্ব ব্রাউজার ‘সাফারি’ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন, তখন সেই নজরদারির প্রাচীর ধসে পড়ে। ভিডিওটির প্রতীকী উপস্থাপনায় গুগলের আগে ঘোষিত প্রকল্প ‘ফ্লক’ অর্থাৎ ‘ফেডারেটেড লার্নিং অব কোহর্টস’–এর প্রতিফলন দেখা গেছে। ওই পরিকল্পনার আওতায় গুগল কুকির বিকল্প প্রযুক্তি চালু করতে চেয়েছিল, যা ব্যবহারকারীর অনলাইন আচরণ বিশ্লেষণ করে লক্ষ্যভিত্তিক বিজ্ঞাপন দেখাতে সহায়তা করত। অবশ্য তৃতীয় পক্ষের কুকি ব্যবস্থাপনার সেই বিকল্প পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে গুগল।

তৃতীয় পক্ষের কুকির মাধ্যমে ব্যবহারকারীর অনলাইন গতিবিধি যেমন কোন ওয়েবসাইটে যাচ্ছেন, কী খুঁজছেন কিংবা কী কিনছেন—এসব তথ্য সংগ্রহ করে গুগল একটি বিস্তারিত ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি করে। এরপর সেই তথ্য বিজ্ঞাপন সংস্থা, বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান এবং তথাকথিত ‘ডেটা ব্রোকার’-এর কাছে বিক্রি করা হয়। এটি গুগলের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস।

২০২৪ সালে বিজ্ঞাপন থেকে গুগলের আয় ছিল প্রায় ২ হাজার ৬৫০ কোটি মার্কিন ডলার। তবে একটি অভ্যন্তরীণ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তৃতীয় পক্ষের কুকি বাতিল করলে আয় প্রায় ১৯ শতাংশ কমতে পারে। এর ফলে চলতি বছরের ২২ এপ্রিল গুগলের ‘প্রাইভেসি স্যান্ডবক্স’ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্টনি চাভেজ ঘোষণা দেন, তাঁরা আর কুকি ব্যবস্থায় নতুন কোনো পরিবর্তন আনছেন না।

তৃতীয় পক্ষের কুকির মাধ্যমে ব্যবহারকারীর বয়স, অবস্থান, অভ্যাস, আগ্রহ, এমনকি কোনো ব্যাংকের ওয়েবসাইটে কবে, কখন এবং কতক্ষণ ছিলেন—এসব তথ্যও সংগ্রহ করা যায়। যদিও সরাসরি ব্যাংক পাসওয়ার্ড সংরক্ষিত থাকে না, তবে এই তথ্যের ভিত্তিতে ব্যবহারকারীর আর্থিক প্রোফাইল গড়ে তোলা সম্ভব।

এই সব তথ্য বিজ্ঞাপন সংস্থা বা তথাকথিত ‘ডেটা ব্রোকার’-এর কাছে বিক্রি হলে সাইবার হামলার ঝুঁকিও বাড়ে। যদি কোনো বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কে সাইবার হামলা হয়, তবে এসব তথ্য ফাঁস হয়ে যেতে পারে, যার মধ্যে থাকতে পারে ব্যক্তিগত খোঁজখবর, সার্চ ইতিহাস কিংবা আর্থিক তথ্য।

এই প্রেক্ষাপটে অ্যাপল নিজেদের ব্রাউজার ‘সাফারি’-কে তুলনামূলক নিরাপদ বলে দাবি করছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, সাফারিতে ডিফল্টভাবে তৃতীয় পক্ষের ট্র্যাকিং কুকি বন্ধ থাকে। এর ফলে ব্যবহারকারীর তথ্য বেশি সুরক্ষিত থাকে। তবে শুধু সাফারি নয়, গোপনীয়তা রক্ষাকারী ব্রাউজার হিসেবে ফায়ারফক্স, ডাকডাকগো এবং অ্যাভাস্ট সিকিউর ব্রাউজার-এর কথাও উল্লেখযোগ্য। ফায়ারফক্সে রয়েছে ‘এনহান্সড ট্র্যাকিং প্রটেকশন’, ‘ডাকডাকগো’ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কুকি সম্মতি ব্যবস্থাপনা করে এবং ইউটিউব ভিডিওর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত ‘ডাক প্লেয়ার’–সুবিধা দেয়। আর অ্যাভাস্ট সিকিউর ব্রাউজার-এ রয়েছে বিল্ট-ইন বিজ্ঞাপন ব্লকার, ফিশিং প্রতিরোধক এবং পাসওয়ার্ড ম্যানেজার।

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র অ য পল

এছাড়াও পড়ুন:

সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং করা হবে: খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্ট

খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, “ধান চাল ক্রয়ে মধ্যস্বত্তভোগী সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং করা হবে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় খাদ্য গুদামে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে এ মন্তব্য করেন তিনি। 

এ সময় খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, “কৃষক যে কষ্ট করে ফসল ফলায় তার উপযুক্ত মূল্য দিতে না পারলে, কৃষকরা উৎসাহ হারাবে। তাই কৃষকদের ন্যায্যমূল্য দিতে সরকার যাতায়াতসহ ধানের মূল্য নির্ধারণ করেছে। কৃষকরা যাতে গুদামে এসে হয়রানির শিকার না হন।
কোনো ধরনের ভোগান্তি ছাড়া কৃষকরা যাতে ধান বিক্রি করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে খাদ্য বিভাগের সর্বোচ্চ নজরদারি থাকবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে নিজে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম নজরদারি করবো।” 

তিনি বলেন, “গত আমন মৌসুমে কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়া কৃষকরা ধান গুদামে দিতে পেরেছেন, কোনো সিন্ডিকেট ছিলো না। এবারও ধান চাল ক্রয়ে বাজার মনিটরিং করা হবে। অভিযোগ পেলে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।” 

এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক ড. ইলিয়াস মিয়া, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ, শান্তিগঞ্জ থানার নির্বাহ কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা, সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি অফিসার মোস্তফা ইকবাল আজাদ প্রমুখ।

এরপর ‘দেখার হাওরে’ ধান কাটা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন খাদ্য উপদেষ্টা। এসময় স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলেন তিনি।

এবার সুনামগঞ্জে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৬৪৫ মে.টন। ৩৬ টাকা কেজি দরে ১৪৪০ টাকা মন ধান সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করবে সরকার।

ঢাকা/মনোয়ার/টিপু 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মানিকগঞ্জে অনুমোদনহীন ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রির হিড়িক
  • সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং করা হবে: খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্ট
  • রিকশায় ফাঁদ পেতে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে ১০ লাখ টাকা ছিনতাই, চালকের জবানবন্দি