আবাহনী নিজেদের কাজটা করে রেখেছিল। বিকেএসপিতে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ৭ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জয়ের উৎসবের উপলক্ষটা তৈরি করে রেখেছিল মোসাদ্দেক হোসেনের দল। এরপর তারা তাকিয়ে ছিল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মোহামেডান–গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স ম্যাচের দিকে। সুপার লিগের এ ম্যাচটিতে মোহামেডান হারলে আজই শিরোপা নিশ্চিত—এমনটাই ছিল আবাহনীর হিসাব। কিন্তু শেষ বলে গাজী গ্রুপকে মোহামেডান ৪ উইকেটে হারিয়ে সুপার লিগের শেষ রাউন্ডে আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচটিকে রূপ দিয়েছে ‘ফাইনালে’।

মিরপুরে মোহামেডানের লক্ষ্যটা খুব একটা বড় ছিল না। টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৯.

৪ ওভারে অলআউট হওয়ার আগে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স করতে পেরেছে ২৩৬ রান। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮০ রান করেছেন ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার। মোহামেডানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন সাইফউদ্দিন ও মোস্তাফিজ। জাতীয় দলের বাইরে থাকা পেসার সাইফউদ্দিন ৯.৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৪২। মোস্তাফিজ ১০ ওভার বল করে দিয়েছেন ৪৬ রান।

রান তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার আনিসুল ইসলামকে হারায় মোহামেডান। তবে আরেক ওপেনার রনি তালুকদার ও তাওহিদ হৃদয়ের ৭৫ রানের জুটিতে ভালোই এগিয়ে যাচ্ছিল তারা। কিন্তু দলের ১১৫ রানে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে রনি আউট হয়ে ফেরেন। এরপর মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে জুটি গড়ে দলকে টানতে থাকেন হৃদয়। কিন্তু হৃদয় (৩৭) ও মাহমুদউল্লাহ (৪৯) ফেরার পর ম্যাচটা ফিফটি ফিফটি হয়ে যায়। সেখান থেকে মোহামেডানকে জেতান সাইফউদ্দিন (৩০*) ও নাসুম আহমেদ (২১*)।

এই জয়ের ফলে সুপার লিগের শেষ রাউন্ডে আবাহনী–মোহামেডান ম্যাচটা রূপ নিয়েছে অঘোষিত ফাইনালে। সেই ম্যাচে যে দল জিতবে, তাদের হাতেই উঠবে শিরোপা। সেই ম্যাচে মোহামেডান জিতলে দুই দলের পয়েন্ট সমান হবে। মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে থাকায় মোহামেডানের হাতে উঠবে শিরোপা। আর ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে চ্যাম্পিয়ন হবে আবাহনী।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রত্যাবর্তনে প্রমাণের চ্যালেঞ্জ বিজয়ের

২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় এনামুল হক বিজয়ের। এরপর গত এক যুগে মাত্র ৫টি টেস্ট খেলেছেন। ১০ ইনিংসে মোট রান মাত্র ১০০। নেই কোনো হাফ সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ ইনিংস ২৩ রানের। একজন টপঅর্ডার ব্যাটারের জন্য পরিসংখ্যানটা বড্ড বেমানান। 

অবশ্য অনেকের অভিযোগ, পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি বিজয়। যে সুযোগগুলো পেয়েছেন তার অধিকাংশ দলের আপৎকালীন সমস্যা সমাধানের নিমিত্তে। এবারও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের মাঝপথে তাঁকে ডাকা হয়েছে টপ অর্ডারের ব্যর্থতায়। ৩২ বছর বয়সী বিজয় কী পারবেন চ্যালেঞ্জ নিয়ে জাতীয় দলে জায়গাটা পাকা করতে? 

বিজয় সর্বশেষ টেস্ট দলে ছিলেন ২০২২ সালের জুনে উইন্ডিজ সফরে। প্রায় ৮ বছর পর একটি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়ে ক্যারিয়ার সেরা ২৩ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন তিনি। ওই টেস্টে অবশ্য ওপেন করার সুযোগ পাননি, চারে খেলেছিলেন। এবার বিজয় নজর কেড়েছেন মূলত প্রিমিয়ার লিগে দারুণ ব্যাটিং করে। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে ১৪ ইনিংসে ৪টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে ৭৯.৪৫ গড়ে লিগে সর্বোচ্চ ৮৭৪ রান করেছেন তিনি। 

এরমধ্যে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সব ফরম্যাটে সেঞ্চুরির হাফ সেঞ্চুরি করেছেন, গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করে সংখ্যাটা ৫১ তে নিয়ে গেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, সাদা বলে পারফর্ম করে কী তিনি লাল বলের ক্রিকেটে সুযোগ পেয়ে গেলেন? অবশ্য ইদানীং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও দারুণ পারফর্ম করেছেন বিজয়। 

সর্বশেষ জাতীয় লিগের ৭ ম্যাচের ১৩ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটিতে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭০০ রান করেছিলেন তিনি। এরপর বিপিএল টি২০তেও ভালো করেছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম টেস্টে বিজয় ডাক পাওয়ায় তাঁর দল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের একটু ক্ষতি হয়ে গেল। ২৬ এপ্রিল মোহামেডানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অধিনায়ককে পাবে না তারা। 

ঘরোয়া ক্রিকেটে লম্বা সময় ধরে বিজয় ছন্দে আছেন বলে সুযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লীপু। সে সঙ্গে সিলেট টেস্ট ওপেনারদের ব্যর্থতাও বড় কারণ, ‘প্রথম টেস্টে (ওপেনাররা) ব্যর্থ হওয়ায় একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে সব ফরম্যাটে বিজয় ছন্দে আছে। আমরা তো এমনিতেই ফর্মের সংকটে ভুগি। ফর্মে থাকা কাউকে সেভাবে পাই না।’ 

তবে তিন বছর আগেও ঘরোয়া ক্রিকেটে ফর্মে ছিলেন বলে আবার টেস্ট দলে ডাক পেয়েছিলেন। মাঠে নেমে তেমন কিছু করতে পারেননি। এবার বিজয়কে অন্য রকম মনে হচ্ছে প্রধান নির্বাচকের, ‘‘বিজয় এখন খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছে। টেস্ট ওপেনারদের মাঝে যে টেম্পারামেন্ট দেখতে চাই, সেটি তার মাঝে দেখেছি। এই সিরিজ শেষে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষেও তাকে খেলাব।’’ প্রধান নির্বাচকের কথাতে স্পষ্ট যে বিজয়কে লম্বা সময়ের জন্য চিন্তা করছেন তারা। 

তিন বছর পর আবার টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়া বিজয় অবশ্য খুব বেশি কিছু বললেন না, ‘জাতীয় দলে ভালো খেলতে চাই। এজন্য সবার দোয়া চাই।’ তাঁকে যেজন্য সিরিজের মাঝপথে দলে নেওয়া হয়েছে, সে কাজটা করতে চান তিনি, ‘দলের প্রয়োজন যেন মেটাতে পারি, দেশকে যেন জেতাতে পারি, এটাই এবার চাওয়া।’ বিজয়ও এবার অনেক পরিণত। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আবার শাস্তি পেলেন তাওহিদ হৃদয়
  • নাসুমের দুর্দান্ত ফিনিশিংয়ে শিরোপার স্বপ্ন টিকিয়ে রাখল মোহামেডান
  • শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল বিষয়ে পিছু হটল ট্রাম্প প্রশাসন
  • দোকানে লুটপাট শেষে যুবককে গুলি করে পালাল ডাকাত দল
  • স্মৃতি ও শ্রদ্ধার অনন্য আয়োজন
  • ছাত্র আন্দোলন: হত্যাচেষ্টা মামলায় কুষ্টিয়া পৌরসভার সার্ভেয়ার গ্রেপ্তার
  • পারভেজ হত্যার প্রধান আসামি মেহেরাজ পাঁচ দিনের রিমান্ডে
  • ‘কারাগার’ নির্মাতা শাওকীর সিরিজে শাশ্বত ও চঞ্চল 
  • প্রত্যাবর্তনে প্রমাণের চ্যালেঞ্জ বিজয়ের