ইরানের বন্দরনগরী বন্দর আব্বাসে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও আগুনে অন্তত ৪০৬ জন আহত হয়েছেন। রাজধানী তেহরান থেকে ১ হাজারের বেশি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত বন্দরটি। খবর আল-জাজিরার

ইরানের শুল্ক কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, শনিবার সিনা কন্টেইনার ইয়ার্ডে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যেটি বন্দর ও সমুদ্র সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এটি ইরানের সবচেয়ে আধুনিক সামুদ্রিক বন্দর। যা হোরমোজগানের প্রাদেশিক রাজধানী বন্দর আব্বাস থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে এবং হরমুজ প্রণালীর উত্তর দিকে অবস্থিত। যেখান দিয়ে পৃথিবীর মোট উৎপাদিত তেলের পাঁচ ভাগের এক ভাগ পরিবহণ হয়ে থাকে।

দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, বন্দর আব্বাসের উপকণ্ঠে অবস্থিত শহীদ রাজি বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এটি ইরানের অন্যতম প্রধান কনটেইনার শিপমেন্ট সুবিধা, যেখানে প্রতিবছর প্রায় ৮ কোটি টন (৭২.

৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন) পণ্য সামগ্রী পরিচালিত হয়।

হোরমোজগান প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার পরিচালক মেহেরদাদ হাসানজাদেহ জানিয়েছেন, আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তবে বিস্ফোরণে ঠিক কতজন হতাহত হয়েছেন সেটি এখনও নিশ্চিত নয়। 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বিস্ফোরণ এলাকা থেকে কালো ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলি বের হচ্ছে। অন্যান্য ভিডিওতে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন এবং গাড়ি পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ওই সময় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন বা গাড়ি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আহত

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু কাজেরই উদ্বোধন হয় ফুট ওভারব্রিজ হয় না

চট্টগ্রাম নগরের সিটি গেট। সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে এক গবেষণায় জায়গাটিকে সড়ক দুর্ঘটনার ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ স্থান’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিন বছরে সড়ক পারাপার হতে গিয়ে শুধু এই জায়গাতেই প্রাণ হারিয়েছেন আটজন। পথচারী পারাপারে এখানে দুটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের কথা ছিল চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক)। কিন্তু তিন বছরেও তা নির্মাণ হয়নি।
শুধু সিটি গেট নয়, নগরের এমন ৩১টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ৩৮টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের একটি প্রকল্প রয়েছে। প্রকল্প পাসের তিন বছর পার হয়েছে। এই সময়ে একটি ফুট ওভারব্রিজও নির্মাণ করতে পারেনি চসিক। ফলে এসব স্থানে দ্রুতগামী গাড়ির ফাঁক গলে সড়ক পার হতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন পথচারী।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ৪ জানুয়ারি ‘চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতায় এয়ারপোর্ট রোডসহ বিভিন্ন সড়কসমূহ উন্নয়ন ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প পাস হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৪৯১ কোটি টাকা। প্রকল্পটির আওতায় নগরের ৩১টি মোড়ে ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৮টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের কথা ছিল। প্রকল্প অনুমোদনের তিন বছর পার হয়েছে। এক দফা প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদও শেষ। এই সময়ে আটটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেছেন সিটি করপোরেশনের সাবেক ও বর্তমান মেয়র। কিন্তু একটির কাজও শেষ হয়নি। ১৮টি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণে টেন্ডার হয়েছে বলে দাবি প্রকল্পসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।

২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর নগরের দুই নম্বর গেটে একটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন তৎকালীন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। একই বছরের নগরের কেইপিজেড ও কাঠগড় মোড়ে দুটি ফুট ওভারব্রিজের কাজ উদ্বোধন করেন তিনি। এ ছাড়া ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি জিইসি মোড়ে চতুর্মুখী একটি ফুট ওভারব্রিজ, ২ নম্বর জালালাবাদ ওয়ার্ডের ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ সড়ক সংযোগস্থলে একটি এবং ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডের কাপ্তাই রাস্তার মোড়ে একটি ফুট ওভারব্রিজের কাজ উদ্বোধন করেন সাবেক মেয়র রেজাউল। ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর নগরের দক্ষিণ পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নেভি রেডি রেসপন্স বার্থের সামনে একটি ফুট ওভারব্রিজের কাজ উদ্বোধন করেন বর্তমান মেয়র শাহাদাত হোসেন। গত ৩ মার্চ নগরের চান্দগাঁও আরাকান সড়কে সানোয়ারা ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আরেকটি ফুট ওভারব্রিজের কাজ উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রকল্প পরিচালক ও সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জসীম উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের প্রস্তুতি আছে। কিন্তু পিডিবিসহ বিভিন্ন সেবা সংস্থার ইউটিলিটি লাইন স্থানান্তর জটিলতায় এগুলো নির্মাণে দীর্ঘসূত্রতা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত কাজ শুরু করা যাবে।’

লালখান বাজারে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ নিয়ে রশি টানাটানি
নগরের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মোড়গুলোর একটি লালখান বাজার। এই মোড়ে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের প্রকল্প নেয় সরকারি দুই সংস্থা চসিক ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। রশি টানাটানিতে এখানে ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। 
প্রকৌশলী জসীম উদ্দিন বলেন, লালখান বাজার মোড়ে সিডিএ ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করবে বলেছিল। তাই আমরা আর করছি না। সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘বরাদ্দ না পাওয়ায় সিডিএ ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করবে না।’

সড়ক পার হতে গিয়ে ঝরছে প্রাণ
চট্টগ্রাম নগরের সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে গবেষণা করে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম সিটি রোড সেফটি রিপোর্ট প্রকাশ করে তারা। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৫৬৯ জন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ