২৩৮ কোটি টাকার এফডিআর স্থানান্তর নিয়ে বিসিবির ব্যাখ্যা
Published: 26th, April 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অর্থ অন্য ব্যাংকে স্থানান্তর করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিসিবি জানিয়েছে, ২৩৮ কোটি টাকা তারা অন্য ব্যাংকে রেখেছে। বিসিবি এই অর্থ স্থানান্তরের ব্যাখ্যাও দিয়েছে।
বিসিবি জানিয়েছে, সভাপতি ফারুক আহমেদ বোর্ডের আর্থিক স্বার্থ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ‘গ্রীন ও ইয়েলো’ জোনভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আর্থিক লেনদেনে জড়িত থাকার সিদ্ধান্ত নেন। আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিসিবি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকসমূহ থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে ২৩৮ কোটি টাকা গ্রীন ও ইয়েলো জোনভুক্ত ব্যাংকসমূহে পুনঃবিনিয়োগ করে।
বিসিবি জানিয়েছে, বাকি ১২ কোটি টাকা বিসিবির বিবিধ পরিচালনা ব্যয়ের জন্য নির্ধারিত একাউন্টে রাখা হয়েছে। অর্থ স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত বোর্ড সভাপতি একা নেননি উল্লেখ করা বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদকে না জানিয়ে ব্যাংক পরিবর্তন বা লেনদেনের সুযোগ নেই। এসব ক্ষেত্রে বোর্ড পরিচালক ও বোর্ডের ফিনান্স কমিটি চেয়ারম্যান ফাহিম সিনহা এবং টেন্ডার ও পারচেজ কমিটি চেয়ারম্যান মাহবুবুল আনামের স্বাক্ষর নিতে হয়।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বিসিবি স্বায়ী আমানত সংরক্ষণের দায়িত্ব ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকে দিয়েছে। এর মাধ্যমে বিসিবির আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে ও অতিরিক্ত মুনাফা হয়েছে।
এর মাধ্যমে ১২ কোটি টাকার স্পনসরশিপ পেয়েছে। অবকাঠামো উন্নয়নে বিসিবির অংশীদার ব্যাংক থেকে ২০ কোটি টাকা বিনিযোগের আশ্বাস পেয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমে বোর্ডের অর্থ স্থানান্তর সংক্রান্ত প্রতিবেদন ভুল তথ্যভিত্তিক এবং বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্য বলে অভিযোগ করেছে বিসিবি। বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিসিবি সর্বোচ্চ মানের আর্থিক ব্যবস্থা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফ র ক আহম দ আর থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ বছরের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মত হামাস
সব জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় পাঁচ বছরের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস। নাম প্রকাশ না করার শর্তে হামাসের এক কর্মকর্তা বলেন, হামাস এখন এক ধাপেই সব বন্দি বিনিময় ও পাঁচ বছরের যুদ্ধবিরতির জন্য প্রস্তুত। এ অবস্থায় মিসরের রাজধানী কায়রোতে মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে হামাসের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে।
এর আগে ১০ জীবিত জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে গাজায় ৪৫ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব রেখেছিল ইসরায়েল, যা ১৭ এপ্রিল নাকচ করে দেয় হামাস। শনিবার বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
হামাস বরাবরই বলে আসছে, যুদ্ধবিরতির কোনো সাময়িক চুক্তিতে তারা আর সায় দেবে না। পরবর্তী যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অবশ্যই গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার অবসান, বন্দি বিনিময়, উপত্যকা থেকে ইসরায়েলের বাহিনীর পূর্ণ প্রত্যাহার ও মানবিক সহায়তা প্রবেশের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। গত শুক্রবার জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, গাজায় খাবারের সরবরাহ শেষ হয়ে যাচ্ছে। গত জানুয়ারি মাসে গাজায় তিন দফায় যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাবে দু’পক্ষই সম্মতি দেয়। প্রথম দফার বাস্তবায়ন হয় ১৯ জানুয়ারি থেকে ১৭ মার্চ পর্যন্ত। তখন ইসরায়েল দ্বিতীয় দফায় যেতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবার গণহত্যা শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনও চলছে। মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ২ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলের বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখন দাবি করা হচ্ছে, পরবর্তী চুক্তিতে সব জিম্মির মুক্তি, হামাসসহ গাজার অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠীর নিরস্ত্রীকরণের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। হামাস নিরস্ত্রীকরণের দাবি মানতে এরই মধ্যে অসম্মতি জানিয়েছে। ফিলিস্তিনের সংগঠনটি মনে করে, দখলদারিত্ব ও শোষণের মধ্যে অস্ত্রধারণ তাদের জন্মগত অধিকার।
এরই মধ্যে গাজায় নৃশংস হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, শনিবার এক দিনে আরও ৫৬ জন নিহত ও ১০৮ জন আহত হয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর এ পর্যন্ত গাজায় ৫১ হাজার ৪৯৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৫২৪ জন। যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ গাজায় ইসরায়েলের হামলা পুনরায় শুরুর পর এ পর্যন্ত ২ হাজার ১১১ নিহত ও ৫ হাজার ৪৮৩ জন আহত হয়েছেন। হতাহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
শনিবার ভোরে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলাটি হয় গাজা সিটিতে। সেখান আল খাউর পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে অন্তত ১০ জন নিহত হন। ধ্বংসস্তূপে আটকা পড়েন আরও ২০ জন। হামলায় বেঁচে থাকা উম্মু ওয়ালিদ আল-খাউর বলেন, ‘যখন বোমা আঘাত হানে, তখন সবাই তাদের শিশুদের নিয়ে ঘুমে ছিলেন। ভবন ধসে আমাদের ওপর পড়ল। যারা বেঁচে ছিলেন, তারা কান্না করছিলেন। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।’
হামলার পাশাপাশি গাজায় ত্রাণের গাড়ি ঢুকতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে সেখানে খাবার, পানি, জ্বালানি ও ওষুধের সরবরাহ একেবারে কমে গেছে। এ অবস্থায় জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) বলছে, গাজার মানুষের রান্নাঘরে খাদ্যের মজুত শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আগামী দিনে খাবার সম্পূর্ণ শেষ হয়ে যাবে।
ডব্লিউএফপির সতর্কীকরণের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান বরছেন, গাজায় চিকিৎসা সরবরাহ শেষ হয়ে যাচ্ছে। সীমান্তে তাদের ১৬টি ট্রাক প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে। সংস্থাটির প্রধান টেড্রোস আদানম গেব্রিয়াসুস বলেছেন, এ অবরোধের অবসান ঘটাতে হবে। এটা মানুষের জীবন রক্ষার বিষয়।