ব্যাংক হিসাব খুলতে কী প্রয়োজন, জেনে নিন
Published: 26th, April 2025 GMT
এখনকার সময়ে নিজের নামে একটি ব্যাংক হিসাব থাকা সবার জন্য জরুরি। তিনি যেকোনো শ্রেণি, পেশা ও আয়ের মানুষ হোন না কেন, এই হিসাব প্রয়োজন। পাশাপাশি এখন আয় না করলেও শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক অর্ধেক মানুষের ব্যাংক হিসাব আছে। আর বিকাশ, রকেট ও নগদের মতো মোবাইল আর্থিক সেবা (এমএফএস) হিসাব ধরলে আরও বেশি মানুষ আর্থিক সেবার আওতায় এসেছেন।
যদিও ব্যাংক হিসাব ও এমএফএস হিসাব এক নয়। কারণ, এমএফএস মূলত টাকা স্থানান্তর প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে কিছু কেনাকাটা ও বিল পরিশোধ করা যায়। পাশাপাশি সীমিত আকারে সঞ্চয়ের সুবিধা রয়েছে। এ জন্য পুরোপুরি সঞ্চয়ের প্রবণতা গড়ে তুলতে ব্যাংক হিসাবের বিকল্প নেই। আবার আর্থিক জ্ঞান বাড়াতেও ব্যাংক হিসাব প্রয়োজন।
কীভাবে ব্যাংক হিসাব খুলবেনএখন আমরা তুলে ধরব কীভাবে আপনি ব্যাংক হিসাব খুলবেন। একটি হিসাব খোলার মাধ্যমে আপনার সঙ্গে ব্যাংকের সম্পর্ক শুরু হবে। প্রথমে আপনি ছোট অঙ্কের টাকা জমা করবেন। একসময় প্রয়োজনে কিছু ঋণ নেবেন। এটাই ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম—আমানত নেওয়া ও ঋণ দেওয়া।
তাহলে জেনে নিই, ব্যাংক হিসাব খুলতে কী প্রয়োজন। আগের চেয়ে ব্যাংক হিসাব খোলা কিন্তু এখন বেশ সহজ হয়েছে। এখন ব্যাংকে না গিয়েও ঘরে বসে অ্যাপসের মাধ্যমে হিসাব খোলা যায়। যে ব্যাংকের হিসাব খুলতে চান, সেই ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গেলে তা জানা যায়।
তবে প্রক্রিয়া যতই সহজ হোক না কেন, কিছু তথ্য ও ছবি তো দিতেই হবে। এ জন্য প্রয়োজন আপনার নিজের ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), নমিনির ছবি ও এনআইডি এবং ওই ব্যাংকে হিসাব রয়েছে, এমন একজন পরিচয়দানকারী; সঙ্গে সবার স্বাক্ষর তো লাগবেই। জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংক যোগাযোগ করবে, এমন একজনের নাম–ঠিকানাও দিতে হবে। প্রতিটি হিসাব খোলার সময় গ্রাহক পরিচিতি তথ্য (কেওয়াইসি) জমা দিতে হয়। এখানে নাম–পরিচয়ের পাশাপাশি পেশা, অর্থের উৎস, মাসিক আয় ও ব্যয়ের তথ্য দিতে হবে। প্রয়োজন হলে ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই–টিআইএন) নম্বরও জমা নেয় কিছু কিছু ব্যাংক। ই–টিআইএন জমা দিলে সুদের ওপর ৫ শতাংশ কর ছাড় পাওয়া যায়।
হিসাব খোলার ফরমেই দিতে হবে আপনি কী কাজে হিসাবটি ব্যবহার করতে চান। ওই হিসাবে আনুমানিক কী পরিমাণ লেনদেন হবে, প্রতি মাসে নগদ ও চেকে কত জমা–উত্তোলন হবে, তার তথ্যও দিতে হবে।
হিসাব খোলার সময়ই আপনি কী কী সেবা নেবেন, তার চাহিদা দিতে পারেন। যেমন এটিএম কার্ড, ইন্টারনেট ব্যাংকিং ও এসএমএস অ্যালার্ট। আর একটি হিসাব খোলার জন্য আপনাকে কতবার স্বাক্ষর করতে হবে, তার হিসাব নেই।
কোন হিসাবে কী কাগজপত্র লাগবেদেশে একজন ব্যক্তি নানা ধরনের ব্যাংক হিসাব খুলতে পারেন। এসব হিসাব খোলার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম রয়েছে। ব্যাংকভেদে এই নিয়মের কিছুটা তারতম্য রয়েছে। ব্যবসায়িক হিসাব খুলতে প্রয়োজন আরও বাড়তি কিছু তথ্য।
একক মালিকানাধীন ব্যবসায়িক হিসাব• ব্যাংকের নির্দিষ্ট আবেদনপত্র (সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তার সামনে স্বাক্ষর করতে হবে)
• পরিচিতিদানকারী ব্যক্তি দ্বারা স্বাক্ষর করা দুটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
• নমুনা স্বাক্ষর (সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তার সামনে স্বাক্ষর করতে হবে)
• স্থানীয় সরকার সংস্থা, যেমন সিটি করপোরেশন, পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন কাউন্সিল কর্তৃক ইস্যুকৃত ট্রেড লাইসেন্সের কপি
• বাড়ি কেনা অথবা আমদানি ও রপ্তানি–সংক্রান্ত কাজে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রয়োজনীয় অনুমতির প্রমাণ
• টিআইএন সার্টিফিকেট
লিমিটেড কোম্পানি হিসাব• ব্যাংকের নির্দিষ্ট আবেদনপত্র (সংশ্লিষ্ট ব্যাংকারের সামনে স্বাক্ষর করতে হবে)
• কোম্পানির মেমোরেন্ডাম ও আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশনের প্রত্যয়িত অনুলিপি
• ইনকরপোরেশন সার্টিফিকেট
• পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে ব্যবসা শুরুর সার্টিফিকেট
• হিসাব খোলা ও পরিচালনার জন্য সব অংশীদারের যথাযথ অনুমতি ও অ্যাকাউন্ট পরিচালনাকারীর প্রত্যয়নপত্র দেখাতে হবে
• নির্দিষ্ট ফরমে পরিচালকদের নাম ও ঠিকানা
• স্বাক্ষরকারীদের ছবি
• ট্রেড লাইসেন্সের কপি
• আবেদনপত্র ও আবেদনকারীদের ছবির পেছনে পরিচিতিদানকারীর স্বাক্ষর
• হিসাব পরিচালনাকারীদের নামের তালিকা, নিয়োগপত্র ও নমুনা স্বাক্ষর
• একক অথবা যৌথ মালিকানাধীন হিসাবের ক্ষেত্রে বর্ণিত নিয়ম অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের সব পরিচালক ও মালিকের পরিচিতিমূলক তথ্য
যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব
• ব্যাংকের নির্দিষ্ট আবেদনপত্র (সংশ্লিষ্ট ব্যাংকারের সামনে স্বাক্ষর করতে হবে)
• অংশীদারত্বের চুক্তিপত্র
• অংশীদারদের ঠিকানাসহ নামের তালিকা
• অংশীদারদের সভায় গৃহীত নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তের অনুলিপি
• ট্রেড লাইসেন্সের কপি
• স্বাক্ষরকারী বা অংশীদারদের ছবি
• নমুনা স্বাক্ষর (সংশ্লিষ্ট ব্যাংকারের সামনে স্বাক্ষর করতে হবে)
• আবেদনপত্র ও আবেদনকারীদের ছবির পেছনে পরিচিতিদানকারীর স্বাক্ষর
• ব্যক্তিগত হিসাব খোলার ক্ষেত্রে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী পরিচালক ও অংশীদারদের পরিচিতিমূলক তথ্য প্রদান করতে হবে। হিসাব খোলা ও পরিচালনার জন্য অংশীদারদের যথাযথ অনুমতি ও হিসাব পরিচালনাকারীর প্রত্যয়নপত্র দেখাতে হবে
• প্রকৃত ব্যবসা ও অংশীদারত্বের প্রমাণ হিসেবে সর্বশেষ পরিচালনা রিপোর্ট ও অডিট রিপোর্ট (যেখানে প্রযোজ্য) প্রদর্শন করতে হবে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স মন পর চ ত র জন য র করত ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন উপদেষ্টা আসিফ
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে (এনএসইউ) মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অব পলিসি গভর্ন্যান্সের অধীনে আয়োজিত ‘এক্সিকিউটিভ মাস্টার্স ইন পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্স’ (ইএমপিজি) প্রোগ্রামের সামার সেশন-২০২৫ এর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টাব্যাপী এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রোগ্রামটির পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, “পরীক্ষা চলাকালীন একজন পরীক্ষার্থী আসিফ মাহমুদ নাম দিয়ে অংশ নেন। পরে জানা যায়, তিনি সরকারের একজন উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত।”
আরো পড়ুন:
রোমে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
সুপ্রদীপ চাকমা
ভারত ও চীনের অর্থনীতির বাতাসে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে
তিনি আরো জানান, ভর্তি পরীক্ষার ফল এক থেকে দুই দিনের মধ্যে প্রকাশিত হবে এবং উত্তীর্ণদের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এই প্রোগ্রামটি নীতি-নির্ধারক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উন্নয়নকর্মী ও গবেষকদের জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুতকৃত। এতে পাবলিক পলিসি, প্রশাসনিক দক্ষতা, নেতৃত্ব এবং সুশাসন বিষয়ে সমন্বিত জ্ঞান দেওয়া হয়।
ঢাকা/এসবি