নিখোঁজের দুই দিন পর সেপটিক ট্যাংকে মিলল যুবকের লাশ
Published: 26th, April 2025 GMT
নোয়াখালীর সদর উপজেলায় পরিত্যক্ত একটি সেপটিক ট্যাংকের ভেতর থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার নোয়ান্নই ইউনিয়নের দুর্গানগর গ্রাম থেকে লাশটি উদ্ধার হয়। পেশায় দোকান কর্মচারী ওই যুবক গত বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
নিহত যুবকের নাম মীর হোসেন (৩২)। তিনি পার্শ্ববর্তী বেগমগঞ্জ উপজেলার রাজগঞ্জ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় রাজগঞ্জ বাজারের সোলেমান ট্রেডার্স নামের একটি রড-সিমেন্টের দোকানে চাকরি করতেন মীর হোসেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা দুইটায় মীর হোসেন গ্রামের বাড়ি থেকে কর্মস্থলের উদ্দেশে বের হন। রাত ৯টার দিকে তিনি স্ত্রীকে মুঠোফোনে জানান, পরিচিত এক ব্যক্তির জানাজায় যাচ্ছেন, সেখান থেকে ফিরতে এক-দেড় ঘণ্টা সময় লাগবে। এরপর মীর হোসেনের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে মীর হোসেনের সন্ধান না পেয়ে তাঁর স্ত্রী বেগমগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গতকাল শুক্রবার বিকেলে পার্শ্ববর্তী ছয়ানী এলাকার একটি সড়কের ওপর নিখোঁজ মীর হোসেনের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর আজ সকালে পাশের একটি ধানের স্তূপে রক্ত দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। এর সূত্র ধরে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজন অদূরে থাকা পরিত্যক্ত একটি সেপটিক ট্যাংকে পলিথিন মোড়ানো বস্তু দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ পলিথিন খুলে লাশটি দেখতে পায়।
বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণ ডায়েরি করার পর পুলিশ বিভিন্ন স্থানে মীর হোসেনের সন্ধানে অভিযান চালায়। এর মধ্যেই আজ লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। মীর হোসেনের গলা, কপালসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের রক্তাক্ত জখম রয়েছে।
নিহত মীর হোসেন ছাত্রদলের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। সম্প্রতি তিনি স্থানীয় যুবদলের পদ পেতে তৎপরতা চালিয়ে আসছিলেন বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। রাজগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য কামাল হোসেন ওরফে জাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, নিহত মীর হোসেন এলাকায় শান্ত প্রকৃতির ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তাঁকে হত্যার ঘটনা এলাকাবাসীকে হতবাক করেছে।
সদর উপজেলার সুধারাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রত্যাবর্তনে প্রমাণের চ্যালেঞ্জ বিজয়ের
২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় এনামুল হক বিজয়ের। এরপর গত এক যুগে মাত্র ৫টি টেস্ট খেলেছেন। ১০ ইনিংসে মোট রান মাত্র ১০০। নেই কোনো হাফ সেঞ্চুরি। সর্বোচ্চ ইনিংস ২৩ রানের। একজন টপঅর্ডার ব্যাটারের জন্য পরিসংখ্যানটা বড্ড বেমানান।
অবশ্য অনেকের অভিযোগ, পর্যাপ্ত সুযোগ পাননি বিজয়। যে সুযোগগুলো পেয়েছেন তার অধিকাংশ দলের আপৎকালীন সমস্যা সমাধানের নিমিত্তে। এবারও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের মাঝপথে তাঁকে ডাকা হয়েছে টপ অর্ডারের ব্যর্থতায়। ৩২ বছর বয়সী বিজয় কী পারবেন চ্যালেঞ্জ নিয়ে জাতীয় দলে জায়গাটা পাকা করতে?
বিজয় সর্বশেষ টেস্ট দলে ছিলেন ২০২২ সালের জুনে উইন্ডিজ সফরে। প্রায় ৮ বছর পর একটি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়ে ক্যারিয়ার সেরা ২৩ রানের ইনিংসটি খেলেছিলেন তিনি। ওই টেস্টে অবশ্য ওপেন করার সুযোগ পাননি, চারে খেলেছিলেন। এবার বিজয় নজর কেড়েছেন মূলত প্রিমিয়ার লিগে দারুণ ব্যাটিং করে। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে ১৪ ইনিংসে ৪টি করে সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরিতে ৭৯.৪৫ গড়ে লিগে সর্বোচ্চ ৮৭৪ রান করেছেন তিনি।
এরমধ্যে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সব ফরম্যাটে সেঞ্চুরির হাফ সেঞ্চুরি করেছেন, গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করে সংখ্যাটা ৫১ তে নিয়ে গেছেন। প্রশ্ন উঠেছে, সাদা বলে পারফর্ম করে কী তিনি লাল বলের ক্রিকেটে সুযোগ পেয়ে গেলেন? অবশ্য ইদানীং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেও দারুণ পারফর্ম করেছেন বিজয়।
সর্বশেষ জাতীয় লিগের ৭ ম্যাচের ১৩ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটিতে আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭০০ রান করেছিলেন তিনি। এরপর বিপিএল টি২০তেও ভালো করেছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম টেস্টে বিজয় ডাক পাওয়ায় তাঁর দল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের একটু ক্ষতি হয়ে গেল। ২৬ এপ্রিল মোহামেডানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা অধিনায়ককে পাবে না তারা।
ঘরোয়া ক্রিকেটে লম্বা সময় ধরে বিজয় ছন্দে আছেন বলে সুযোগ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লীপু। সে সঙ্গে সিলেট টেস্ট ওপেনারদের ব্যর্থতাও বড় কারণ, ‘প্রথম টেস্টে (ওপেনাররা) ব্যর্থ হওয়ায় একটা সুযোগ তৈরি হয়েছে। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেটে সব ফরম্যাটে বিজয় ছন্দে আছে। আমরা তো এমনিতেই ফর্মের সংকটে ভুগি। ফর্মে থাকা কাউকে সেভাবে পাই না।’
তবে তিন বছর আগেও ঘরোয়া ক্রিকেটে ফর্মে ছিলেন বলে আবার টেস্ট দলে ডাক পেয়েছিলেন। মাঠে নেমে তেমন কিছু করতে পারেননি। এবার বিজয়কে অন্য রকম মনে হচ্ছে প্রধান নির্বাচকের, ‘‘বিজয় এখন খুব আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছে। টেস্ট ওপেনারদের মাঝে যে টেম্পারামেন্ট দেখতে চাই, সেটি তার মাঝে দেখেছি। এই সিরিজ শেষে নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষেও তাকে খেলাব।’’ প্রধান নির্বাচকের কথাতে স্পষ্ট যে বিজয়কে লম্বা সময়ের জন্য চিন্তা করছেন তারা।
তিন বছর পর আবার টেস্ট দলে সুযোগ পাওয়া বিজয় অবশ্য খুব বেশি কিছু বললেন না, ‘জাতীয় দলে ভালো খেলতে চাই। এজন্য সবার দোয়া চাই।’ তাঁকে যেজন্য সিরিজের মাঝপথে দলে নেওয়া হয়েছে, সে কাজটা করতে চান তিনি, ‘দলের প্রয়োজন যেন মেটাতে পারি, দেশকে যেন জেতাতে পারি, এটাই এবার চাওয়া।’ বিজয়ও এবার অনেক পরিণত।