রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ, তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ আমি তার কাছে তার পিতামাতা, সন্তানসন্ততি ও সকল মানুষ থেকে প্রিয়তর না হব।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৪ ও ১৫; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৪; সুনানে নাসায়ি, হাদিস: ৫,০৩৫)

কাছাকাছি বর্ণনা অনেকগুলো হাদিসে উদ্ধৃত হয়েছে। হাদিসগুলো এত স্পষ্ট যে, এর কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। হাফেজ ইবনে হাজার (রহ.

) বলেন, কাজি আয়ায বলেছেন, ‘মহানবীকে (সা.) ভালোবাসা ইমান বিশুদ্ধ হওয়ার শর্ত।’ (ফাতহুল বারি, ১/৫৯)

নবী প্রেম সম্পৃক্ত খোদাপ্রেমের সঙ্গে

কোরআনে এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আপনি বলে দিন, তোমাদের পিতামাতা, সন্তানসন্ততি, ভাই-ভগ্নী, স্ত্রী-পরিজন, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী, ধন-সম্পদ যা তোমরা উপার্জন করেছ, সেই ব্যবসা যার মন্দার আশঙ্কা তোমরা কর এবং ঘর-বাড়ি যা তোমরা ভালোবাস, এসব যদি তোমাদের কাছে আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও তার পথে লড়াই করার চেয়ে বেশি প্রিয় হয়, তবে তোমরা আল্লাহ নির্দেশ পাঠানো পর্যন্ত অপেক্ষা করো। আল্লাহ পাপাচারীদের সুপথ দেখান না।’ (সুরা তাওবা, আয়াত: ২৪)

আরও পড়ুনজীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি (সা.)১৩ মার্চ ২০২৫

রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তিনটি বৈশিষ্ট্য যার মধ্যে থাকবে, সে ইমানের স্বাদ অনুভব করবে। ১. আল্লাহ ও তার রাসুল তার কাছে অন্য সবকিছু থেকে প্রিয় হবে। ২. মানুষকে সে কেবল আল্লাহর জন্য ভালোবাসবে। ৩. (বিশ্বাসী হওয়ার পর) অবিশ্বাসী অবস্থায় ফিরে যাওয়াকে সে এত অপছন্দ করবে, যতটা আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অপছন্দ করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৩)

পূর্ণ প্রেম পূর্ণ ইমান

আবদুল্লাহ ইবনে হিশাম (রা.) বলেন, ‘আমরা নবীজির (সা.) সঙ্গে ছিলাম। তিনি ওমর ইবনে খাত্তাব (রা.)-এর হাত ধরে ছিলেন। ওমর (রা.) বললেন, ‘আল্লাহর রাসুল, নিজের প্রাণ ছাড়া আর সবকিছুর চেয়ে আপনি আমার কাছে বেশি প্রিয়।’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘না, যার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ, (তুমি পরিপূর্ণ মুমিন হবে না) যতক্ষণ আমি তোমার কাছে তোমার নিজের চেয়ে বেশি প্রিয় না হব। ওমর (রা.) বললেন, ‘আল্লাহর শপথ করে বলছি, এখন থেকে আপনি আমার কাছে আপন প্রাণের চেয়ে বেশি প্রিয়।’ নবীজি বললেন, ‘হ্যাঁ, ওমর, এবার হয়েছে।’’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৬৩২)

আরও পড়ুননামাজ: দাসের মহিমা০৪ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বল ছ ন আল ল হ বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

এই কঠিন সময়ে ঐক্য ধরে রাখা প্রয়োজন: ঢাবি উপাচার্য

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতির ঐক্য রক্ষার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান।

উপাচার্য বলেন, ‘আমরা একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছি। এক অর্থে জাতির জন্য এটি একটি ক্রান্তিকাল। এই সময়ে আমাদের ঐক্য ধরে রাখা একান্তই প্রয়োজন।’

আজ রোববার সকালে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে সাংবাদিকদের কাছে নিয়াজ আহমেদ খান এ কথা বলেন।

ঢাবি উপাচার্য বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস জাতির জন্য পরম শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও মমতার দিন। এক গভীর ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, চিন্তাবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। তাঁদের সেই চূড়ান্ত আত্মত্যাগ ইতিহাসে চিরভাস্বর হয়ে আছে।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, যুগে যুগে ও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ এ জাতিকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে ঐক্যবদ্ধ করেছে এবং সাহস জুগিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় জাতি ১৯৯০ ও ২০২৪ সালের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়েছে।

উপাচার্য আরও বলেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগ আজও জাতির ঐক্য ধরে রাখার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোকবর্তিকা। একই সঙ্গে ১৯৫২, ১৯৬৮, ১৯৬৯, মহান মুক্তিযুদ্ধসহ প্রতিটি আন্দোলন–সংগ্রামে যাঁরা রক্ত ও জীবন দিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষা করেছেন, তাঁদের সবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ১৯৫২ থেকে ২০২৪—এর প্রতিটি দিন ও ঘটনাপ্রবাহ জাতির মৌলিক পরিচয়ের মাইলফলক। এর কোনো অংশ বাদ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ ইতিহাসই যুগে যুগে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছে, আর বর্তমান সময়ে সেই ঐক্য ধরে রাখাই সবচেয়ে বড় প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ