এল ক্লাসিকো: আজ কেমন হবে ফ্লিকের কৌশল, কোথায় বার্সেলোনার দুর্বলতা
Published: 26th, April 2025 GMT
কদিন ধরে বার্সেলোনা সমর্থকদের স্মৃতিতে হয়তো বারবার ফিরে আসছে ১৩ জানুয়ারি ও গত বছরের ২৭ অক্টোবরের জাদুকরি দুটি রাত। চলতি মৌসুমে বার্সেলোনার পারফরম্যান্সকে ব্যাখ্যা করতে এর চেয়ে মহিমান্বিত রাত আর কি হতে পারে!
প্রথমে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে এরপর জেদ্দায় মরুর বুকে ভক্তদের বার্সা উপহার দিয়েছে দীর্ঘদিন মনে রাখার মতো পারফরম্যান্স। যেখানে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদকে বার্সা দুটি ম্যাচে উড়িয়ে দিয়েছিল ৪-০ ও ৫-২ গোলে। আজ আবারও সেই রিয়ালের বিপক্ষে সেভিয়ায় নামার আগে সেই দুটি রাতের স্মৃতি ফিরে আসা খুবই স্বাভাবিক।
রিয়াল-বার্সার ম্যাচ এমনিতেই আগুনে। সবচেয়ে নীরস ম্যাচেও থাকে গল্প করার অনেক রসদ। আর ওই লড়াইয়ে কোনো দল যদি এমন দাপট দেখায়, তবে সে স্মৃতি হয়ে উঠে দারুণ প্রেরণাদায়কও।
তবে ফুটবলে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত বলে কিছু নেই। আগের দুই ম্যাচ একটা দল জিতেছে বলে পরের ম্যাচও জিতবে, এমন নাও হতে পারে। ফলে মুখোমুখি লড়াইয়ে আগের ম্যাচ দুটি বার্সার জন্য স্রেফ অনুপ্রেরণাই, ভবিষ্যৎ সাফল্যের নিশ্চয়তা নয়। আর প্রতিপক্ষ যদি হয় ‘রিয়াল মাদ্রিদ’ তাহলে তো কখনোই নয়।
আরও পড়ুনএল ক্লাসিকোতে রিয়ালের ঘুমপাড়ানি ফুটবল ও ফ্লিকের আরেকটি মাস্টারক্লাস ১৩ জানুয়ারি ২০২৫এসব লড়াইয়ে ন্যূনতম ব্যবধানেই নির্ধারিত হতে পারে ফল। সামান্য ভুলে এলোমেলো হয়ে যেতে পারে সাজিয়ে–গুছিয়ে রাখা পরিকল্পনা। এসব কথা অবশ্য হান্সি ফ্লিক ও তাঁর শিষ্যদেরও অজানা নয়। ফলে ভক্তরা যতই ম্যাচের ক্লিপ শেয়ার করে যুদ্ধে মাতুন, এটা যে নতুন আরেকটা দিন এবং নতুন একটি ম্যাচ, সেটা জেনেই প্রস্তুত হচ্ছেন লামিনে ইয়ামাল-পেদ্রিরা।
রিয়ালই যখন বার্সেলোনার শেষ বাধাচলতি মৌসুমে এখন পর্যন্ত অসাধারণ ফুটবল খেলেছে বার্সেলোনা। মৌসুমের শেষ ভাগে এসে ‘ট্রেবল’ জয়ের দারুণ সম্ভাবনাও আছে বার্সার। কিন্তু রিয়াল নামের বাধাও আছে। রিয়ালকে হারিয়েই অবশ্য গত জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপের ফাইনাল জিতে উৎসবে মেতেছিল বার্সা। আজ আরেকটি ধাপ পেরোনোর ক্ষেত্রেও বাধা সেই রিয়ালই।
সর্বশেষ রিয়ালকে হারিয়েই স্প্যানিশ সুপার কাপের শিরোপা জিতেছিল বার্সা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফর্মে থাকা এনামুলে আত্মবিশ্বাসী গাজী আশরাফ
রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে সব আলো নিজের ওপর কেড়ে নিয়েছেন এনামুল হক বিজয়। দেশের ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরির ফিফটি করার অনন্য নজিরও গড়েছেন। ফর্ম যখন তুঙ্গে তখন মুখে চওড়া হাসি ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। সেই হাসির উপলক্ষ্য দ্বিগুণ করে দিয়েছেন নির্বাচকরা।
ফর্মে থাকা এনামুলকে জাতীয় দলে ফিরিয়েছেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে এনামুল ফিরেছেন জাকির হাসানের জায়গায়। সিলেটে দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয় ব্যর্থ হয়েছেন। এনামুল সেরা একাদশে সুযোগ পাবেন কি পাবেন না সেটা পরের বিষয়। গাজী আশরাফের আনন্দ, ‘‘ফর্মে থাকা একজন যিনি প্রতি ম্যাচেই রান করছেন তাকে আমরা পেয়েছি।’’
এনামুলের রেকর্ডই তার হয়ে কথা বলছে। চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে রান ফোয়ারা ছুটিয়ে দিয়েছেন এনামুল। গতকালও করেছেন সেঞ্চুরি, আবাহনীর বিপক্ষে। ১৪ ইনিংসে ৮৭৪ রান করেছেন ৪টি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে। যেখানে তার গড় রান ৭৯.৪৫। রান সংগ্রাহকের তালিকায় সবার শীর্ষে, ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তার পরে ১৭৭ রান পিছিয়ে থেকে দুইয়ে অবস্থান করছেন পারভেজন হোসেন ইমন। ঢাকা লিগ দেশের একমাত্র লিস্ট ‘এ’ প্রতিযোগিতা। পঞ্চাশ ওভারের ফরম্যাট। সাদা বলের ক্রিকেটের পারফরম্যান্স লাল বলে ক্রিকেটে কতটা প্রভাব রাখবে সেই প্রশ্নও উঠতে পারে। জানিয়ে রাখা ভালো, সবশেষ জাতীয় ক্রিকেট লিগে এনামুলের লাল বলের পারফরম্যান্সও ছিল দারুণ। আসরে ছিলেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। খুলনা বিভাগের হয়ে ৫৩.৮৪ গড়ে ১ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটিতে ৭০০ রান করেছিলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
আরো পড়ুন:
টেস্টে ম্যাচ প্রতি ৮ লাখ টাকা, তবুও শান্তদের ফর্মে খরা!
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে এনামুল
বিশ্লেষকরা বলেন রান করা অভ্যাসের বিষয়। যেকোনো প্রতিযোগিতায়, যেকোনো পর্যায়েই রান পেলে ব্যাটসম্যানদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়। এনামুলের থেকে সেই আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্সটাই চান গাজী আশরাফ হোসেন, ‘‘ওর যেই ধারাবাহিকতা, যে একাগ্রতা দিয়ে জাতীয় লিগ বা ঢাকা লিগ খেলেছে সেটা প্রশংসনীয়। আমাদের কাছে মনে হয়েছে ও এসব প্রতিযোগিতায় খুব ফ্রি হয়ে নিজে খেলতে পারে। আমার ব্যক্তিগত প্রত্যাশা সেই মনোভাবটাই যেন জাতীয় দলে দেখাতে পারে। এটা এমন না যে ওর থেকে সেঞ্চুরি, ডাবল সেঞ্চুরি করুক। যে কাজটা এতোদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে করেছে সেটাই করুক।’’
২০২২ সালের পর টেস্ট দলে ফিরলেন এনামুল। ৫ টেস্টে ১০০ রান করা এনামুল ঘরের মাঠে ২০১৩ সালের পর টেস্ট খেলবেন। বয়স ৩২ পেরিয়েছে। জাতীয় দলে এক সময়ে থিতু হয়েছিলেন। পরবর্তীতে আড়াল হয়ে যান। এরপর আসা-যাওয়ার ভেতরেই থাকেন। এবার সুযোগ হয়েছে জাকিরের পরিবর্তে। কিন্তু দুই ওপেনার সাদমান ও জয়ও নেই ফর্মে। তাদের দুজনের একজনকে ড্রপ করে এনামুলকে চট্টগ্রামে খেলানোর সম্ভাবনাই বেশি। লম্বা সময় ধরে আন্তর্জাতিক বোলারদের খেলার অভিজ্ঞতা এনামুলের নেই। এবার খারাপ করলেও তাকে বাদ দেবে না নির্বাচকরা সেই আশ্বাস দিয়ে রেখেছেন। তবে ফর্মে থাকা একজন, জাতীয় দলে ফেরার তীব্র জেদে থাকা একজন নিজের পায়ের নিচের মাটি শক্ত করবেন এমনটাই প্রত্যাশা গাজী আশরাফের।
সিলেট/ইয়াসিন/আমিনুল