স্ত্রী বাড়ি না ফেরায় অভিমানে গলায় ফাঁস নিলেন স্বামী!
Published: 26th, April 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে স্ত্রী বাড়ি না ফেরায় অভিমানে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যুবকের নাম শাহ জালাল (২২)। তিনি কুলিয়ারচর ছয়সূতি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে।
খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ।
স্থানীয়রা জানান, চার বছর আগে কুলিয়ারচরে মধ্য লালপুর এলাকার মনির মিয়ার মেয়ে জান্নাত বেগমের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন শাহ জালাল। তাদের পরিবারে নুসরাত নামে দেড় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শাহ জালাল ঢাকা শহরে জুতার কাজ করেন। মনির মিয়া সম্পর্কে নিহত শাহ জালালের মামা হোন। বিয়ের পর থেকেই শাহ জালাল তার শ্বশুর বাড়ি ও ঢাকায় থাকতে শুরু করেন। তার স্ত্রী জান্নাত বেগমের বাবা ও মা ঢাকায় থাকতেন। সেই সুবাদে মেয়েকেও প্রায় সময় ঢাকায় নিয়ে যেতেন। পরিবারের সচ্ছলতা নিয়ে প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। এদিকে ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেন তার মা। কয়েকদিন থেকে স্বামীর বাড়িতে থেকে স্ত্রী অভিমান করে বাবার বাড়ি চলে যায়। স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে ২৫ এপ্রিল শুক্রবার স্ত্রী জান্নাতের কাছে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। বিকাল পাঁচটায় নিজ ঘরে এসে স্ত্রীর ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে শাহ জালাল। পরিবারের সদস্যরা ফাঁসি থেকে নামিয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের চাচাতো ভাই মামুন বলেন, বউকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গিয়ে বাড়ির পাশে একটি বাগানে আমার ভাই দেখেন তার স্ত্রী অন্য একটি ছেলের সঙ্গে কথা বলছে। এতে শাহ জালাল ক্ষিপ্ত হলে স্ত্রীর সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সে বাড়ি এসে আত্মহত্যা করেছে।
মা শাহানা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানসিক নির্যাতন করে আসছে। আমি ও আমার ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন একাধিকবার মারধর করেছে। তারা চাইতো আমার ছেলে যেন তাদের মেয়েকে ছেড়ে দেয়। আমার ছেলে তার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু তার স্ত্রী তাদের বাবা-মায়ের কথায় চলাফেরা করতো। এ নিয়ে আমার ছেলের সাথে প্রায় সময় ঝগড়া হতো। ২৫ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে আমার ছেলে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে গেলে সে আসতে চায়নি। আমার ছেলে তাকে বলে এসেছে সে যেহেতু আসতে চায় না তাহলে তাকে মুক্ত করে শান্তিতে থাকতে দিবে। বিকালে নিজ ঘরে এসে শাহ জালাল আত্মহত্যা করেছে।
তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, আমার ছেলেকে তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। এখন আমার পরিবারের কী হবে? তার ছোটো মেয়েটাকে নিয়ে কীভাবে চলবো?
এ বিষয়ে ভৈরব থানার এসআই শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। আজ শনিবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ভ রব আম র ছ ল পর ব র র
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬
রাঙামাটিতে পিকআপ ভ্যান ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষের ঘটনায় আরও একজন নিহত হয়েছেন। আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। এ নিয়ে নিহত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াল ছয়ে।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের মনারটেক আমবাগান এলাকায় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তিরা হলেন নুরুনাহার বেগম (৪০), মিনু মারমা (৩৫), মো. আবু তোরাব (৫০), মো. মাহাবুবুর রহমান (৫৫), জয়নাল আবেদীন (৬০) ও মো. ইজাদুল (২৫)। তাঁদের মধ্যে দুই নারী রাঙামাটির এবং অন্যরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলার বাসিন্দা।
কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনাস্থলে চারজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া লাশ রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
বেতবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা মো. আজিজুল ইসলাম ও মো. খলিল প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেতবুনিয়ার চাহেরী বাজারে হাটের দিন ছিল। সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রীরাও হাটে কেনাকাটা করে বাড়িতে ফিরছিলেন। অটোরিকশাটি বেতবুনিয়ার মনারটেক আমবাগান এলাকায় পৌঁছানোর পর কাঠবোঝাই একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। দুজন চট্টগ্রামের হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা গেছেন।