সিন্ধুতে হয় পানি, না হয় ভারতীয়দের রক্ত বইবে: বিলাওয়াল ভুট্টো
Published: 26th, April 2025 GMT
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পহেলগামে ভয়াবহ হামলার ঘটনার জেরে তীব্র উত্তেজনা চলছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। পরোক্ষভাবে পাকিস্তান এ হামলায় জড়িত এমন অভিযোগ তুলে বুধবার দেশটির সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু নদ পানি চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দেয় ভারত।
শুক্রবার ভারতের জলশক্তিমন্ত্রী সিআর পাতিল বলেছেন, পাকিস্তানে সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও যেন না যায় সেই ব্যবস্থা নিচ্ছে ভারত।
এদিকে, ভারত একতরফাভাবে পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করলে সিন্ধুতে ভারতীয়দের রক্ত বইবে বলে হুংকার দিয়েছেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। খবর এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
আরো পড়ুন:
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে যা বললেন ট্রাম্প
সিন্ধু নদের এক ফোঁটা পানিও পাকিস্তানে যেতে দেওয়া হবে না: ভারত
শুক্রবার সিন্ধু প্রদেশের সুক্কুর জেলায় পিপিপির এক সমাবেশে বিলাওয়াল বলেন, “সিন্ধু সভ্যতার বৈধ উত্তরাধিকারী হিসেবে পাকিস্তান কখনই নদীর ওপর তার দাবি ত্যাগ করবে না।”
ভারতকে সতর্ক করে তিনি বলেন, “হয় পানি, না হয় তোমাদের রক্ত এই নদীতেই প্রবাহিত হবে।”
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সিন্ধু সভ্যতার উত্তরাধিকারী হওয়ার দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে বিলাওয়াল পাল্টা বলেন, “তিনি (মোদি) বলছেন যে- তারা হাজার হাজার বছরের পুরনো সভ্যতার উত্তরাধিকারী। কিন্তু সেই সভ্যতা লারকানার মহেঞ্জোদারোতে অবস্থিত। আমরাই এর প্রকৃত রক্ষক এবং আমরা এটিকে রক্ষা করব।”
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “পাকিস্তানের জনগণ বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কেউই মোদির যুদ্ধবাজ মনোভাব বা পাকিস্তান থেকে সিন্ধু নদীর পানি সরিয়ে নেয়ার কোনো প্রচেষ্টা সহ্য করবে না।”
বিলাওয়াল বলেন, “মোদি সিন্ধু এবং সিন্ধু নদীর জনগণের মধ্যে যুগ যুগ ধরে চলা বন্ধন ছিন্ন করতে পারবেন না। ভারত সরকার পাকিস্তানের পানির ওপর চোখ রেখেছে। এ পরিস্থিতিতে সিন্ধুর পানি রক্ষা এবং সুরক্ষার জন্য চারটি প্রদেশের ঐক্য প্রয়োজন। আমরা বিশ্বকে একটি বার্তা পাঠাব। তা হলো, সিন্ধু নদীতে ডাকাতি মেনে নেয়া হবে না।”
পাকিস্তানের সর্বকনিষ্ঠ পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করা বিলাওয়াল বলেন, “ভারতে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তানের জনগণ। পাকিস্তানিরা নিজেও সন্ত্রাসবাদের শিকার।”
ভারত সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করছে বলে বিলাওয়াল অভিযোগ করেন। তিনি উল্লেখ করেন, কোনো প্রমাণ ছাড়াই, ভিত্তিহীন অভিযোগের ভিত্তিতে ভারত অবৈধভাবে সেই চুক্তি বাতিল করছে।
পিপিপি চেয়ারম্যান তার সমর্থকদের ভারতীয় আগ্রাসন থেকে তাদের নদী রক্ষার জন্য দৃঢ় সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফকে আশ্বস্ত করেন যে, পিপিপি এবং পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর মধ্যে রাজনৈতিক পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, তারা ভারতের মোকাবিলায় ফেডারেল সরকারের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াবে।
পাকিস্তান সরকার ইতিমধ্যে সতর্ক করে বলেছে, ভারত যদি সিন্ধু নদের পানির প্রবাহ বন্ধের চেষ্টা চালায় তাহলে এটিকে তারা যুদ্ধের কর্মকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করবে এবং সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
মতপার্থক্য থাকবে, আলোচনা করে এগিয়ে যাব: তারেক রহমান
দেশে যে কোনো মূল্যে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, আমাদের মাঝে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে। গণতন্ত্রে মতপার্থক্য স্বাভাবিক। তবে আমরা বসব, আলোচনা করব এবং এগিয়ে যাব।
আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখার ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এ কর্মশালা আয়োজন করে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি। নেতাকর্মীর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, কোনোভাবেই যেন গণতন্ত্রের উত্তরণ, মানুষের ভোটের অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত না হয়। কারণ মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ও রাজনৈতিক অধিকার বাধাগ্রস্ত হলে সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতাও প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিগত ১৫ বছর জনগণের রাজনৈতিক ও ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে আমরা দেখেছি, দেশের বিচার ব্যবস্থা, অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ব্যবস্থা– সব ধ্বংস হয়ে গেছে। সমাজে বিভিন্ন অধঃপতন শুরু হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে একসঙ্গে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে চাই। জনগণের সমর্থনে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে ৩১ দফা বাস্তবায়ন করব। বিগত ১৫ বছর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমাদের বহু নেতাকর্মী গুম-খুন হয়েছেন, পঙ্গুত্ববরণ করেছেন, তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া যাবে না।
কর্মশালায় পঞ্চগড় অংশে তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, সহপ্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু; ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন এবং দিনাজপুর অংশে বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, গণশিক্ষা সম্পাদক অধ্যাপক মোরশেদ হাসান, জেলা বিএনপির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল প্রমুখ প্রশিক্ষণ দেন ও বক্তৃতা করেন।