নেতৃত্ব, নীতি ও প্ল্যাটফর্ম, ই-ক্যাবের ভবিষ্যৎ করণীয়
Published: 26th, April 2025 GMT
ই-কমার্সের বিস্ময়কর উত্থান বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। তবে এই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে প্রয়োজন সুসংগঠিত নেতৃত্ব, সময়োপযোগী নীতিমালা ও কার্যকর প্ল্যাটফর্ম। বিশ্বজুড়ে ই-কমার্স খাত আজ নীতিনির্ধারক সংগঠনের সুশাসন ও নেতৃত্বের ওপর নির্ভরশীল হয়ে উঠেছে। ই–কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব)–এর সামনে এখন এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ দুটিই সমানভাবে উপস্থিত।
বর্তমান বাস্তবতা: কোথায় দাঁড়িয়ে আছে ই-ক্যাব২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করা ই-ক্যাব আজ প্রায় দুই হাজারের বেশি সদস্যের সংগঠন। সরকারের নীতিমালা প্রণয়নে পরামর্শ, উদ্যোক্তাদের সেবা, সচেতনতা তৈরি—এসব ক্ষেত্রেই ই-ক্যাব একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে; কিন্তু অনেক সদস্যের অভিযোগ রয়েছে—
* সদস্য সেবার ঘাটতি।
* অভিযোগ নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা।
* সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতার অভাব।
* এসএমই উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ পরিকল্পনার অভাব।
নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তাএকটি সফল সংগঠনের প্রাণ হচ্ছে নেতৃত্ব। নতুন নেতৃত্বের কাছে সদস্যদের প্রত্যাশা হলো—
* সদস্যদের সমস্যার দ্রুত সমাধান।
* নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে শক্তিশালী ভূমিকা।
* উদ্যোক্তা উন্নয়নমূলক প্রকল্প
* বৈশ্বিক গ্লোবাল কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি
প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সংগঠনের কার্যক্রমকে স্মার্ট করা
আরও পড়ুনক্রস বর্ডার ই-কমার্স ও বাংলাদেশের সম্ভাবনা২৫ এপ্রিল ২০২৫নীতির নতুন দিগন্ত* ডিজিটাল ভোক্তা অধিকার আইন বাস্তবায়নে সক্রিয় ভূমিকা।
* ই-কমার্স ব্যবসার জন্য এক্সপ্রেস লাইসেন্সিং সিস্টেম চালু করার দাবি।
* অনলাইন লেনদেনে প্রতারণা প্রতিরোধে আইন প্রণয়নে সহায়তা।
* ক্রস বর্ডার ই-কমার্স উন্নয়নে বিশেষ নীতিমালা প্রণয়ন।
উন্নত প্ল্যাটফর্মের রূপরেখা* ই-ক্যাব মেম্বারস পোর্টাল চালু করা যেখানে সদস্যরা নিবন্ধন, নবায়ন, অভিযোগ দাখিল, প্রশিক্ষণের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
* ভেরিফায়েড সেলার সার্টিফিকেশন সিস্টেম চালু।
* ডিজিটাল সদস্য পরিচয়পত্র চালু।
* জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে আঞ্চলিক হাব চালু করে দেশব্যাপী উপস্থিতি নিশ্চিত করা।
আরও পড়ুনফিনটেক ও ই-কমার্স ইকোসিস্টেম: বাংলাদেশের নতুন বাণিজ্যবিপ্লব২৪ এপ্রিল ২০২৫আন্তর্জাতিক যোগাযোগ* বিশ্ব ই-কমার্স সংগঠনের সদস্যপদ অর্জন।
* বাংলাদেশি ই-কমার্স ব্র্যান্ডের আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আয়োজন।
* উন্নত দেশের ই-কমার্স চেম্বারের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর।
আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাচীন: চায়না ই–কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে নীতি ও সদস্যসেবা সমন্বয়।
ভারত: কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের (সিএআইটি) উদাহরণ যেখানে এমএমই ই-কমার্সে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে।
ভবিষ্যতের লক্ষ্য ২০২৫-৩০* পাঁচ হাজারের বেশি নতুন ই-কমার্স উদ্যোক্তার সদস্যপদ লাভ।
* বাংলাদেশের ই-কমার্সের রপ্তানি আয় ২০০ কোটি ডলার ছোঁয়া।
* গ্রাম-শহর সমন্বিত ই-কমার্স নেটওয়ার্ক গঠন।
* ই-ক্যাবকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ই-কমার্স সংগঠনে পরিণত করা।
(শেষ)
ড.
মোহাম্মদ নূরুজ্জামান: ড্যাফোডিল ফ্যামিলির গ্রুপ সিইও ও গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশের কোষাধ্যক্ষ
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ই কম র স স গঠন র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
রাজউকের বোর্ডে আমলা থাকলে চলবে না, বিশেষজ্ঞ রাখতে হবে: উপদেষ্টা রিজওয়ানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে জনবান্ধব ও যুগোপযোগী করতে টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট ও বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন অ্যাক্ট নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে। অল্প পরিবর্তনে কাজ হবে না। সময় ও বাস্তবতার চাহিদায় প্রয়োজনীয় কিছু রেখে নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে। রাজউকের বোর্ডে কেবল আমলা থাকলে চলবে না। বোর্ডে শহর পরিকল্পনায় দক্ষ বিশেষজ্ঞ রাখতে হবে। ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করে কাজ করতে হবে।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, রাজউক চেয়ারম্যানের রেসিডেনশিয়াল ভবনকে কমার্শিয়াল করার ক্ষমতা রহিত হওয়া উচিত। মহাপরিকল্পনার বাইরে না গিয়েই বোর্ড এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
তিনি বলেন, ঢাকা শহরের জন্য একটি নতুন ভিশন দরকার। সেই ভিশনে সিভিল সোসাইটি, রাজউক ও সাধারণ মানুষের মতামত প্রতিফলিত হওয়া উচিত। জনগণের সেবা বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে, যাতে ঢাকার ওপর চাপ কমে। রাজউক কি ডেভেলপার না রেগুলেটর—তা পরিষ্কারভাবে নির্ধারণ করতে হবে। রাজউককে আর হাউজিং করতে দেওয়া যাবে না। গৃহহীনদের জন্য ঘরের ব্যবস্থা হতে পারে, ধনীদের জন্য নয়।
তিনি বলেন, গোটা এলাকাভিত্তিক মাস্টারপ্ল্যান করতে হবে। বেসরকারি হাউজিং নিয়ন্ত্রণের প্রয়াস আগে ছিল না, এখন তা জরুরি। রাজউককে রাজনৈতিক চাপে রাখা যাবে না।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, পূর্বাচলের জমি ধ্বংসের সমালোচনা করে বলেন, মন্ত্রী-এমপিদের জন্য হাউজিং করার যৌক্তিকতা নেই। রাজউককে জাতীয় ও নির্মিত ঐতিহ্য রক্ষায় কাজ করতে হবে। নগরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন রাজউকের দায়িত্ব। রাজউকের ভবনটিও আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, প্রতিটি প্রকল্পের এক্সিট প্ল্যান থাকতে হবে। রাজউক ও এস্টেট ডিপার্টমেন্টকে জনসেবামুখী হতে হবে। সেবা ডিজিটালাইজ করতে হবে। অভিযোগ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা কার্যকর করতে হবে। সুপারভিশন আউটসোর্স করতে হবে। বাইরের বিশেষজ্ঞ দিয়ে অডিট করাতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, তোতাইল বিলের মতো জলাশয় পুনঃখনন করতে হবে। হাউজিং প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও মনিটরিং চালু রাখতে হবে। রাস্তার পাশে গাছ লাগাতে হবে। এলাকা না বাড়িয়ে সুপারভিশন বাড়াতে হবে। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাকে তাদের কাজ করতে দিতে হবে।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, রাজউকের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলামসহ রাজউকের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।