নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে ছোট ফেনী নদীর ভয়াবহ ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। এসময় ঘরবাড়ি, ফসলি জমি হারিয়ে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে মুছাপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জনতার বাজারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অনেকে কাফনের কাপড় পরে আত্মাহুতির ঘোষণা দেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য ফখরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাহিনীর অব্যাহত বালু উত্তোলনের ফলে গত ২৬ আগস্ট ছোট ফেনী নদীর ওপর নির্মিত মুছাপুর ২৩ ভেন্ট রেগুলেটর ভেঙে যায়। এতে লোনা পানি ঢুকে এ অঞ্চলের এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমির ফসল ফলানো যাচ্ছে না। উপরন্তু আশপাশের শত শত বাড়ি-ঘর, ফসলি জমি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।’’

ফখরুল ইসলাম আরো বলেন, ‘‘গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতন হওয়ার পরও এ এলাকায় বালু দস্যুতা বন্ধ হয়নি। আমাদের দলের এক শ্রেণির দুর্বৃত্ত এখন অবাধে বালু তুলে নদী ভাঙন বৃদ্ধি করেছে। আমি বিএনপির হাই কমান্ডের কাছে অনুরোধ করব, আমাদের দলের যারা এ বালু সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিন।’’

কাফনের কাপড় পরে সাহাব উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘বাড়িঘর, ফসলি জমি হারিয়ে আমি কাফনের কাপড় পরে ফেলেছি। আমার বেঁচে থাকার আর স্বাদ নেই। সরকার যদি আমাদের দিকে নজর না দেয় পরিবারসহ আমরা আত্মাহুতি দেব।’’

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সাবেক কৃষি কর্মকর্তা পুষ্পেন্দু বড়ুয়া বলেন, ‘‘রেগুলেটরটি বঙ্গোপসাগরের সন্দীপ চ্যানেলের কাছাকাছি ছোট ফেনী নদী হয়ে বড় ডাকাতিয়া নদীর মুখে অবস্থিত। কুমিল্লা জেলার ছয়টি উপজেলা- কুমিল্লা সদর, সদর দক্ষিণ, বরুড়া, লাকসাম, নাঙ্গলকোট, চৌদ্দগ্রাম; ফেনী জেলার ফেনী সদর উপজেলা, দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা- এই দশটি উপজেলার বৃষ্টির পানি এই মুছাপুর রেগুলেটর হয়েই যেত। আবার বোরো মৌসুমের সেচ কার্যক্রম এ মুছাপুর ক্লোজারের জমানো মিষ্টি পানির মাধ্যমে সম্পন্ন হতো। এ তিন জেলার দশটি উপজেলার আনুমানিক এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমি এ রেগুলেটরের ক্যাচমেন্ট এরিয়াতে পড়ে। এটা ভাঙার ফলে রাষ্ট্রের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘মুছাপুর রেগুলেটরটি ভাঙার অন্যতম দুটি কারণ দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর ধরে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা রেগুলেটরের ৫০ থেকে ১০০ মিটার দূরত্বে বালু তুলে শত শত কোটি টাকার ব্যবসা করেছেন। ফলে এই রেগুলেটরের গোড়ার ভিত্তি দুর্বল হয়েছে এবং ভাঙার মতো এই ভয়ানক পরিণতি বরণ করতে হয়েছে। এই রেগুলেটরের মাধ্যমে তিন জেলার দশটি উপজেলার প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হতো। এ বছর মিঠা পানি না থাকার কারণে এই এক লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ সম্ভব হবে না। এতে রাষ্ট্রের প্রায় ১৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। সুতরাং, এই ১০ উপজেলার মানুষের বাস্তু নিরাপত্তা, কৃষিসহ সর্বোপরি রাষ্ট্রের প্রয়োজনে অতি দ্রুত এ রেগুলেটরের পুনর্নির্মাণ জরুরি।’’

ঢাকা/সুজন/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

রেজিস্ট্রারের অসদাচরণের প্রতিবাদে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রেজিস্ট্রার গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন এবং কুশপুত্তুলিকা দাহ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবি করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করা হয়। মিছিলটি পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। পরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবি শাখার আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেছেন, “৫ আগস্ট-পরবর্তী সময়ে আমরা ফ্যাসিবাদমুক্ত ক্যাম্পাস চেয়েছিলাম। কিন্তু, এখন আবারও কিছু শিক্ষক ফ্যাসিবাদী আচরণ করছেন। শেখ হাসিনা ভারত থেকে শিক্ষকদের মদদ দিচ্ছেন বলেই মনে হচ্ছে। এমনই একজন শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন। উনার অফিসে গেলে উনি অসন্তুষ্ট হন। আমরা এমন বদমেজাজি ব্যক্তিকে রেজিস্ট্রার হিসেবে মানি না।”

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম সদস্য সচিব কিশোর সাম্য বলেন, “প্রশাসনের দায়িত্ব হলো শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা। কিন্তু, কোনো শিক্ষার্থী সহযোগিতা না পেলে সে প্রশাসক হিসেবে অযোগ্য প্রমাণিত হয়। আমরা কলোনিয়াল বিশ্ববিদ্যালয় চাই না, চাই একটি মেরুদণ্ডসম্পন্ন প্রশাসন। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও কোনো ক্ষমা চাওয়ার বিবৃতি আসেনি, যা প্রমাণ করে প্রশাসনের দুর্বলতা।”

ছাত্র অধিকার পরিষদের জবি শাখার সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, “বাংলাদেশ পিছিয়ে আছে অযোগ্য ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানোর কারণে। রেজিস্ট্রার ভুলে গেছেন, আগের মতো ক্ষমতা দেখিয়ে কিছু হবে না। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে পদত্যাগ করতে হবে, নাহলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার দায় প্রশাসনকে নিতে হবে।”

ঢাকা/লিমন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই, তীব্র গরমের আভাস রাজধানীতে
  • জমি দখলের প্রতিবাদ করায় মামলা-হয়রানি
  • বন্দরে শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়, গ্রেপ্তার ২ 
  • সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং করা হবে: খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্ট
  • মালয়েশিয়াসহ সব শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার আহ্বান
  • থানার পাশে অবৈধ বালুমহাল, ওসির প্রত্যাহার চাইলেন বিএনপি নেতা
  • ফতুল্লায় কিশোর গ্যাং জিনিয়াস গ্রুপের ছুরিকাঘাতে সুরুজ মিয়া আহত, আটক ১
  • রেজিস্ট্রারের অসদাচরণের প্রতিবাদে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, আহত ১০