শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হোক এমন শিশুবান্ধব
Published: 26th, April 2025 GMT
শিশুদের আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পাঠ শুরু হয় প্রাথমিক বিদ্যালয় বা ইবতেদায়ি মাদ্রাসার মাধ্যমে। নীতিনির্ধারণসহ আমাদের দেশে প্রাইমারি শিক্ষার ব্যবস্থাপনায় যথেষ্ট ঘাটতি আছে সন্দেহ নেই। কিন্তু প্রাইমারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে শিশুবান্ধব করে তোলার কথা, তা কি আমরা করতে পেরেছি? নির্দেশনা থাকলেও বাস্তবায়নের চিত্র অনেক সীমিত বলতেই হয়। দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমাদের দেখাল স্কুলকে কীভাবে শিশুবান্ধব করে তুলতে হয়। বিষয়টি সত্যিই দারুণ আশাব্যঞ্জক ও অনুপ্রেরণামূলক।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, এক যুগ আগে সরকারের বিদ্যালয়হীন গ্রামে বিদ্যালয় স্থাপনের একটি প্রকল্প প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল চিরিরবন্দর উপজেলার কুশলপুর গ্রামের সুব্রত খাজাঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। প্রকল্পের শর্তানুসারে গ্রামের দুই ব্যক্তি জমি দান করেন। তাঁদের পরিবারের সদস্য প্রয়াত শিক্ষকের নামে এ স্কুলের নামকরণ করা হয়। প্রতিষ্ঠার ১০ বছরের মধ্যে প্রান্তিক অঞ্চলের এই স্কুল গত বছর বিভাগের শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে।
ভালো ফলের কৃতিত্ব থেকেও স্কুলটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে এর প্রকৃতিবান্ধব ও শিশুবান্ধব পরিবেশ নিয়ে। প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই ইট বিছানো পথের দুই পাশে ঝাউগাছের সারি। সীমানাপ্রাচীরের সঙ্গে চারপাশে নানা রঙের ফুলের গাছ। বিদ্যালয়ের প্রাচীর, ভবনের দেয়াল, এমনকি ভবনের ছাদেও আঁকা হয়েছে বিভিন্ন ফুল, ফল, পশুপাখি, বিশিষ্ট ব্যক্তি, সৌরজগৎ ও মানচিত্রের ছবি। প্রতিটি ছবির পাশে সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তুর নাম লেখা হয়েছে বাংলা ও ইংরেজিতে। শিক্ষার্থী-উপযোগী এমন পরিবেশ দেখতে স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকেও আসছেন শিক্ষক-অভিভাবকেরা।
স্কুলটিতে আছে শহীদ মিনার, অভিভাবক বিশ্রামাগার, লাইব্রেরি কর্নার, সততা স্টোর, ছাদবাগান, ভবনের ছাদে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চ, ওয়াশ ব্লক, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ। শুধু তা-ই নয়, সপ্তাহে এক দিন শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে স্কুলের পোশাকও দেওয়া হয়। সরকারি বেতনভুক্ত পাঁচজন শিক্ষকের পাশাপাশি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অতিরিক্ত চারজন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। এসব উদ্যোগে অর্থের জোগানসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেন বিদ্যালয়ের জমিদাতা পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
শিক্ষকদের দায়িত্বশীলতা ও আন্তরিকতা স্কুলটির এমন পরিবেশ তৈরিতে এবং সাফল্য অর্জনে বড় ভূমিকা রেখেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। সরকারি সহায়তার পাশাপাশি স্থানীয় ব্যক্তিদের সহযোগিতা এবং শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে এগিয়ে যেতে পারে, তার উদাহরণই তৈরি করল এ বিদ্যালয়। আমরা আশা করব দেশের অন্য স্কুলগুলোর পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকেরা এ থেকে অনুপ্রাণিত হবেন। একটি প্রাইমারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কীভাবে শিশুবান্ধব করে গড়ে তোলা যায়, সেদিকেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেবেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাঙামাটিতে অটোরিকশা-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৫
রাঙামাটির কাউখালীর বেতবুনিয়ায় সিএনজি অটোরিকশা ও পিকআপের মধ্যে সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন একজন। শনিবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কের কাউখালী উপজেলার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের মনারটেক আম বাগান এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে চট্টগ্রামমুখী সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত ও একজন গুরুতর আহত হন।
হতাহতদের পরিচয় তাক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। স্থানীয় লোকজন নিহত ও আহতদের উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম সোহাগ ঘটনাস্থলেই পাঁচজন নিহত ও একজন আহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। ফায়ার সার্ভিসও ঘটনাস্থলে যাচ্ছে। মরদেহ উদ্ধার করে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে।