হৃদয়ের শাস্তি কার্যকর হবে এক বছর পর
Published: 26th, April 2025 GMT
নানা নাটকিয়তার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট (বিসিবি) বোর্ড বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, তাওহীদ হৃদয়ের এক ম্যাচ শাস্তি কার্যকর হবে এক বছর পর। অর্থ্যাৎ আগামী বছরের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এক ম্যাচ কম খেলতে হবে মোহামেডান স্পোর্টিংয়ের অধিনায়ককে।
দফায় দফায় বৈঠকসহ নানা নাটকীয়তার পর রাতে বিবৃতি দেয় বোর্ড। বিবৃতিতে বলা হয়, ক্রিকেটের স্পিরিটি রক্ষার স্বার্থে এবং ক্রিকেট সম্প্রদায়ের ঐক্যের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অসদাচরণ করে হৃদয় নিষিদ্ধ হলেও মূলত ক্লাব ও ক্রিকেটারদের চাপে এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয় বিসিবি।
মাঠে এবং মাঠের বাইরে অসাদচরণের জন্য মোহামেডান অধিনায়ককে নিষিদ্ধ করে বোর্ড। ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটির চাপে এক ম্যাচ শাস্তি কমানো হয়। এই নিয়ে দেশের ক্রিকেটে নতুন এক সংকট তৈরি হয়।
পদত্যাগ করেন টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক, পদত্যাগ করতে চান আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সৈকত। পরবর্তীতে বিসিবি হৃদয়কে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। এরে খেপে যান ক্রিকেটাররা।
শুক্রবার তামিমের নেতৃত্বে ক্রিকেটাররা এর বিরুদ্ধে গিয়ে মিরপুরে একত্রিত হয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ ও দুই পরিচালকসহ তামিমদের বৈঠকের মাধ্যমে ঘটে নাটকের সমাপ্তি।
তামিম বলেন, “প্রথম কথা হলো তাওহীদ হৃদয়ের ইস্যুটা। ওর সঙ্গে মাঠে ইনসিডেন্ট হয়, ওকে দুটা ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করে। তখন কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কথা বলেনি। আম্পায়ার আর ম্যাচ রেফারি মিলে তাকে সাসপেন্ড করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি সিদ্ধান্তটা কঠোর ছিল। কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কিন্তু কেউ কোনো কথা বলিনি।তার কিছুদিন পর দেখলাম যে দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হলো। এটা বিসিবি করেছে, তখনও আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি।”
মোহামেডান চাপ দিলেও তামিম এটি ধরতেই রাজি না, “মোহামেডান থেকে চাপ দিয়ে খেলানো হয়েছে কি হয়নি সেটা জরুরি না। তাকে কি বিসিবি খেলতে এলাউ করেছে! যদি করে তাহলে আবার একই কেসে কেমনে শাস্তি দেন। এটা নিয়ে আমাদের বিতর্ক হয়েছে উনাদের আমরা সুন্দর করে অবস্থান পরিষ্কার করেছি আমরা কি অনুভব করি। তারপর উনারা উনাদের মতো সিদ্ধান্ত দেবেন।”
ঢাকা/রিয়াদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চ্যালেঞ্জ থাকলেও মৎস্য খাতে বিপুল সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা
দেশে স্থানীয়ভাবে মাছের উৎপাদন ও রপ্তানি বৃদ্ধি এবং এই খাতের বিকাশে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থার (ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন-এফএও) ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ উন্মুক্ত জল ধারণ উৎপাদনে ৩য় এবং বৈশ্বিক জলজ চাষ উৎপাদনে ৫ম স্থান অর্জন করেছে। এই খাতে প্রায় ১৭ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থান রয়েছে। তবে রপ্তানি বাড়ানোর বিপুল সম্ভাবনা সত্ত্বেও এই খাত বিকাশে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে-মৎস্যসহ জলজ চাষে সীমিত জায়গা ও সম্পদের সীমাবদ্ধতা, খামারীদের জলজ প্রাণীর মানসম্মত খাবার সম্পর্কে সচেতনতার অভাব ও ক্রয় ক্ষমতা না থাকা, খামার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান না থাকা, মানসম্মত বীজের অভাব, খাদ্য নিরাপত্তা ও খামারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিগুলি বিবেচনায় না নেওয়া, মাছ চাষ-পরবর্তী ক্ষতির কারণসমূহ সম্পর্কে চাষীদের অজ্ঞতা, মাছের আধুনিক সংরক্ষণাগারের সংকট, মাছ আনা-নেওয়ায় পরিবহন সমস্যা ও ‘কোল্ড চেইন কাঠামো’ না থাকা ইত্যাদি।
সম্প্রতি খুলনার রুপসীতে সেন্টার অফ অ্যাকোয়াকালচার এক্সিলেন্সে (সিওই) অনুষ্ঠিত ‘ট্রেন দ্য ট্রেইনারস' শীর্ষক প্রশিক্ষণে এক উপস্থাপনায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়।
নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক আন্তর্জাতিক কনসালটিং প্রতিষ্ঠান লারিভ ইন্টারন্যাশনাল ও ঢাকাভিত্তিক আন্তর্জাতিক কনসালটিং প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনারস যৌথভাবে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে।
শুক্রবার লাইটক্যাসল পার্টনারসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
কর্মশালায় জেমিনি সি ফুডস লিমিটেড, ফিশটেক (বিডি) লিমিটেড এবং লাইটক্যাসল পার্টনার্সসহ বিভিন্ন অংশীদার সংস্থার ২০জন প্রশিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার লক্ষ্য ছিল আধুনিক মাছ চাষ ব্যবস্থাপনা দক্ষতা বৃদ্ধি করা। যাতে তারা এটি গ্রহণ করে পরবর্তীতে দেশের মৎস্য চাষীদের প্রশিক্ষণ দিতে পারেন। এই প্রশিক্ষকরা পরবর্তীতে ১৮০০ জন মৎস্য খামারীকে প্রশিক্ষণ দিবেন।
অনুষ্ঠানে মৎস্য চাষীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন মডেল ও উপস্থাপনা তুলে ধরেন নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক ডি হিউস অ্যানিমেল নিউট্রিশন প্রতিষ্ঠানের ভিয়েতনাম এবং এশিয়ার পুষ্টি ও সহায়তা পরিচালক ড. আলেকজান্দ্রোস সামার্টজিস; একই প্রতিষ্ঠানের পুষ্টি সহায়তা ও অ্যাকোয়া খাতের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ড. জুলিয়া মাস মুনোজ; প্রতিষ্ঠানটির এশিয়া অঞ্চলের রপ্তানি পরিচালক এশিয়া মি. জর্ডি ড্রিয়েটেলার; লাওসের ব্যবসা উন্নয়ন ব্যবস্থাপক মি. সাইমন সাঙ্গুইন; আন্তর্জাতিক পণ্য ব্যবস্থাপক মি. ফাম মিন হিয়েন (পার্সি) প্রমুখ।
কর্মশালায় জানানো হয়, খুলনা, ময়মনসিংহ, কক্সবাজার ও পটুয়াখালীতে সিওই কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। উল্লিখিত মৎস্য চাষীদেরকে নেদারল্যান্ডসের আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে এই দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় রিসার্কুলেটিং অ্যাকুয়াকালচার সিস্টেমের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। এটি খামার পদ্ধতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। এতে চাষের সর্বোচ্চ আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে ছোট পুকুরে মাছ চাষের অনুশীলন সম্ভব হবে।
‘ফুডটেকবাংলাদেশ’ নামে এই প্রকল্পের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ইতিধ্যে চারটি সেন্টার অফ এক্সিলেন্স কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। ঢাকায় নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত এই উদ্যোগটি বাংলাদেশে জলজ চাষের উন্নয়নের লক্ষ্যে পাঁচ বছর মেয়াদী সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে। প্রকল্পটির মেয়াদ হচ্ছে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৭ সালের আগস্ট পর্যন্ত।
এই প্রকল্পে ডাচ এবং বাংলাদেশি অংশীদারদের মোট ৬ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ রয়েছে। ফুডটেক বাংলাদেশ কনসোর্টিয়ামের মধ্যে রয়েছে নেদারল্যান্ডসের ভিকন ওয়াটার সলিউশন এবং ডি হিউস অ্যানিমাল নিউট্রিশন এবং বাংলাদেশের জেমিনি সিফুড অ্যান্ড ফিশটেক লিমিটেড। ফুডটেক প্রকল্প ও অংশীদারদের লক্ষ্য: উন্নত প্রযুক্তি, উন্নত খামার ব্যবস্থাপনা অনুশীলন এবং মাছের প্রজনন বৃদ্ধিতে কৃষকদের তথ্য প্রদান ও জ্ঞান সমৃদ্ধকরণ এবং কৃষকদের প্রযুক্তিগত কর্মক্ষমতা বাড়ানো।
ঢাকা/হাসান/সাইফ