পাবলিক লাইব্রেরির জন্য নির্মাণ করা হয় ভবন। তবে পাবলিক লাইব্রেরি না করে করা হয়েছে কমিউনিটি সেন্টার। জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন-নিবেদন করেও ভবনটিতে পাবলিক লাইব্রেরি করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিবপুর উপজেলা সদর কলেজ গেট এলাকায় পাবলিক লাইব্রেরির জন্য ভবনটি নির্মাণ করা হয়। ২০০৬ সালের ২৪ মার্চ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া। একই বছর নির্মাণকাজ সম্পন্ন করে নরসিংদী জেলা পরিষদের বাস্তবায়নে মেসার্স রহমান কনস্ট্রাকশন। অথচ দীর্ঘ ১৮ বছরেও পাবলিক লাইব্রেরিটি চালু করতে পারেনি নরসিংদী জেলা পরিষদ।
পাবলিক লাইব্রেরি চালু করতে না পারলেও চালু করেছে কমিউনিটি সেন্টার। ভবনটি নির্মাণের ৫ বছর পর থেকে কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। পাবলিক লাইব্রেরি চালুর দাবিতে স্থানীয় সংসদ সদস্য, ইউএনও, জেলা পরিষদে আবেদন করলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভবনের মূল ফটকের ভেতর থেকে তালা লাগানো। ভবনের সামনের সিঁড়িতে বসা নাঈম নামে একজন বলেন, ভেতরে কাইয়ুম নামে কেয়ারটেকার আছে। ডাক দিলে বের হয়ে আসবে। কাইয়ুম ভাই বলে কয়েকটি ডাক দেওয়ার পর ভেতর থেকে বের হয়ে আসেন তিনি। গেট না খুলে পরিচয় জানতে চান। সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার পর তালা খুলে ভেতরে নিয়ে যান এবং পুরো ভবন ঘুরে দেখান।
দেখা গেছে, ভবনটির বিভিন্ন স্থানে পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে। ভবনের এক কক্ষে ভাঙাচোরা আসবাব পড়ে রয়েছে। নরসিংদী জেলা পরিষদের নিয়োগ করা কাইয়ুম মিয়া কেয়ারটেকার হিসেবে ভবনের একটি কক্ষে থাকেন ও ভবন দেখাশোনা করেন। ভবনের সামনে রয়েছে একটি নোংরা ডোবা। সেখান থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ।
কেয়ারটেকার কাইয়ুম মিয়া জানান, ভবনের কেয়ারটেকার হিসেবে তিন বছর ধরে এখানে থাকেন তিনি। ভবনটি কমিউনিটি সেন্টার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কমিনিউনিটি সেন্টার হিসেবে তেমন ভাড়াও হয় না। মাসেও হয় না।
শিবপুর উপজেলা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি নূরুল ইসলাম নূরচানের ভাষ্য, মননশীলতার কেন্দ্র এভাবে বন্ধ থাকতে পারে না। নির্মাণের পর লাইব্রেরি চালু না করায় এলাকার তরুণ সমাজ অধঃপতনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। দ্রুত লাইব্রেরি চালুর দাবি তাঁর।
উপজেলা গীতিনাট্য সংসদ সভাপতি কাদির কিবরিয়া বলেন, শিবপুরে মননশীল চর্চার কোনো জায়গা নেই। মননশীল ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার জন্য নির্মিত পাবলিক লাইব্রেরিটি চালু করতে দাবি জানালেও অদৃশ্য কারণে বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
শিবপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি নূর উদ্দিন মো.

আলমগীর জানান, একটি পাবলিক লাইব্রেরি দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে বন্ধ থাকবে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এত টাকা খরচ করে যে উদ্দেশ্যে ভবন নির্মাণ করা হয়েছে আজ সেই উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হচ্ছে। এখানে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি রয়েছে। এটি দুর্নীতির একটি অংশ।
শিবপুরের ইউএনও মোছা. ফারজানা ইয়াসমিনের ভাষ্য, পাবলিক লাইব্রেরির জন্য নির্মিত ভবনটি সংস্কার করতে হবে। এ জন্য জেলা পরিষদের কাছে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। 
নরসিংদী জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আ. ওহাব রাশেদ জানান, লাইব্রেরিটিকে একটি মালটিপারপাস অর্থাৎ লাইব্রেরি থেকে আরও উন্নত করার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্রুত চালু করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র র জন য ভবন র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কালের কণ্ঠ পত্রিকার সাংবাদিক টিপু সুলতানকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ‘অন্যায়ভাবে’ সাজা দেওয়া হয়েছে অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন জেলার সাংবাদিকেরা। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে সাতক্ষীরার সাংবাদিক সমাজের ব্যানারে এ মানববন্ধন হয়।

ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মো. আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী মাধব দত্ত, চ্যানেল আইয়ের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আবুল কালাম আজাদ, সময় টিভির প্রতিনিধি মমতাজ আহমেদ, আরটিভির প্রতিনিধি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, বাসসের প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান, দেশ টিভির প্রতিনিধি শরিফুল্লাহ কায়সার, ডিবিসি টেলিভিশনের প্রতিনিধি বেলাল হোসেন, দীপ্ত টিভির প্রতিনিধি রঘুনাথ খাঁ, মানবজমিনের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এস এম বিপ্লব হোসেন। সভাপতিত্ব করেন প্রথম আলোর সাতক্ষীরার নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি।

বক্তারা বলেন, সরকারি নির্মাণকাজের অনিয়মের অনুসন্ধান করতে গিয়ে কালের কণ্ঠ পত্রিকার তালা উপজেলা প্রতিনিধি টিপু সুলতানকে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এম এম মামুন আলম ছাতা দিয়ে মারধর করেন। বিষয়টি টিপু তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাসেলের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগ শুনে ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে একতরফাভাবে তাঁদের নিজস্ব লোকজনের সাক্ষী নিয়ে সাংবাদিক টিপুকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১০ দিনের দণ্ডাদেশ দেন। অথচ উপসহকারী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আরও পড়ুনতালায় প্রকৌশলীকে মারধরের অভিযোগে সাংবাদিককে দণ্ড, প্রতিবাদ২১ ঘণ্টা আগে

বক্তারা বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত সাজা দিতে গেলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অপরাধ সংঘটিত হতে হবে। অথচ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে ছিলেন না। তিনি সাংবাদিক টিপুর অভিযোগ শুনে সেখানে গিয়ে একতরফাভাবে সাজা প্রদান করেছেন। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুকে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে। পাশাপাশি নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী কাজ করে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করার অপচেষ্টায় নেমেছেন। ওই নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপসহকারী প্রকৌশলীকে প্রত্যাহার করে ঘটনার তদন্ত করার দাবি জানানো হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে টিপুর বিরুদ্ধে দেওয়া সাজা ও অভিযোগ প্রত্যাহার করা না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভাত খেতে না পারা সেই রাব্বির পাশে ইউএনও
  • কুমিল্লায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ, ডিলার বিএনপি নেতার ৬ মাসের কারাদণ্ড
  • সাতক্ষীরায় সাংবাদিককে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • কেন্দ্র সচিব পদে আ’লীগ নেতা, তিন পরীক্ষার পর অব্যাহতি
  • বদরগঞ্জে বিএনপির কর্মী লাভলু হত্যার আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত