মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার হোগলাকান্দি গ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ছয়টি বসতঘর ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।  বৃহস্পতিবার রাতভর থেমে থেমে গুলিবর্ষণ ও ককটেল বিস্ফোরণে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে হোগলাকান্দি গ্রাম।

আধিপত্য বিস্তারসহ পূর্ববিরোধকে কেন্দ্র করে ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের আমিরুল ইসলাম মেম্বার গ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় লালু-সৈকত গ্রুপ। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে গ্রেপ্তার এড়াতে উভয়পক্ষ নিরাপদ স্থানে অবস্থান নিয়ে একে অপরকে ঘায়েল করতে থেমে থেমে গুলিবর্ষণ করে।

জানা গেছে, ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের আমিরুল ইসলাম মেম্বার গ্রুপের সঙ্গে লালু-সৈকত গ্রুপের বিরোধ রয়েছে। তাদের মধ্যে আগেও একাধিকবার সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গত ৬ এপ্রিল আমিরুল গ্রুপের হামলায় আহত হন লালু-সৈকত গ্রুপের আল আমিন ও রেনু মিয়া নামে দু’জন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় সম্প্রতি জামিন পায় আমিরুল মেম্বার গ্রুপের লোকজন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজনের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর চালায় আমিরুলের লোকজন। এ সময় সংঘর্ষে জড়ায় উভয়পক্ষ। সংঘর্ষে আমিরুল গ্রুপের একজনের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এ সময় লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজন আমিরুল সমর্থকদের ওপর পাল্টা হামলা চালিয়ে একটি বসতঘর ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে।

গ্রামবাসী জানায়, উভয়পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রাতভর থেমে থেমে গুলিবর্ষণ এবং ককটেল বিস্ফোরণের শব্দে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গ্রাম।

মেহেদী হাসান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। এ সময় আতঙ্কিত এলাকাবাসী নিজ নিজ ঘরে অবস্থান নেন। ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হননি।’

প্রত্যক্ষদর্শী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘এই দুই গ্রুপের জ্বালায় আমরা অতিষ্ঠ। কয়েকদিন পর পর মারামারি, গোলাগুলি করে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। একটু পর পর গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছি আমরা।’

বিষয়টি সম্পর্কে লালু-সৈকত গ্রুপের সৈকত জানান, বিভিন্ন কারণে বাড়িতে থাকেন না তারা। 

বৃহস্পতিবার রাতে বাড়িতে আসবেন এমন খবরে আমিরুল মেম্বারের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর চালায়। তাদের পক্ষের সোহেল, নূর মোহাম্মদ, আহমদ আলী, বাচ্চু ও আলী আহমদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালানো হয়। কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে আমিরুল ইসলাম মেম্বারের ভাষ্য, আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজন দুই দফা হামলা চালায় তাদের ওপর। প্রথমবার ১০ থেকে ১৫ জন অস্ত্রধারী গুলি করতে থাকে। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর আবারও হামলা চালায় তারা। এ সময় একটি বসতঘর ভাঙচুর ও একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।
গজারিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে পুলিশের উপস্থিতির টের পেয়ে দুই গ্রুপের লোকজন সটকে পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা ও পটকা উদ্ধার করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ গ র প র ল কজন স কত গ র প র ল ইসল ম স ঘর ষ আম র ল প ত হয়

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যালয়ের কক্ষে ১৬ বাসিন্দাকে বেঁধে রেখে ডাকাতি

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় একটি বিদ্যালয়ের কক্ষে ১৬ জন স্থানীয় বাসিন্দাকে বেঁধে রেখে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। যাঁদের বেঁধে রাখা হয়, তাঁদের কাছ থেকে নগদ টাকা, মুঠোফোন, একটি মোটরসাইকেল ও একটি ল্যাপটপ নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ ছাড়া বিদ্যালয়টির পাশে অবস্থিত তিনটি বসতঘর থেকে চারটি গরু ডাকাতি করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত তিনটার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ সুখছড়ি বাকের আলীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, প্রায় ১৫ সদস্যের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল রাতে একটি জিপ নিয়ে এলাকায় আসে। তখন গ্রামের বেশির ভাগ বাসিন্দা ঘুমিয়ে ছিলেন। কিছু বাসিন্দা পাশের গ্রামে আয়োজিত কবিগানের আসর থেকে ফিরছিলেন। এসব বাসিন্দার মধ্যে ১৬ জন গ্রামে ফেরার সময় কয়েক ধাপে ডাকাত দলের সামনে পড়েন। ডাকাত দল ওই বাসিন্দাদের অস্ত্রের মুখে স্থানীয় দক্ষিণ সুখছড়ি শাহ্ সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর বাসিন্দাদের হাত ও মুখ রশি ও কাপড় দিয়ে বাঁধা হয়। পরে মুঠোফোন, নগদ টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিয়ে কক্ষটিতে তাঁদের আটকে রাখে ডাকাত দল। একই সময়ে পাশের তিনটি বসতঘর থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা মূল্যের ৪টি গরু ডাকাতি করে ডাকাতেরা পালিয়ে যায়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল হক এ ঘটনা প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অস্ত্রের মুখে ১৬ জনকে বিদ্যালয়ে আটকে রাখে ডাকাত দল। ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা আটকে রাখা ব্যক্তিদের উদ্ধার করেন। জানতে চাইলে লোহাগাড়া থানার উপপরিদর্শক গোবিন্দ চন্দ্র দাশ প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনায় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নদীতে ড্রেজার, বিলীনের ঝুঁকিতে কৃষিজমি-রাস্তাঘাট
  • টাঙ্গাইলে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসতঘরে, ঘুমন্ত নারীর মৃত্যু
  • বিদ্যালয়ের কক্ষে ১৬ বাসিন্দাকে বেঁধে রেখে ডাকাতি