রাজশাহীর পদ্মা নদীর তীরে ভেসে এসেছে একটি মৃত ডলফিন। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরের তালাইমারি ফুলতলা ঘাটের পশ্চিম পাশের পদ্মা নদীর পাড় থেকে প্রাণীটির মরদেহ উদ্ধার করে রাজশাহী বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কর্মকর্তারা।
তাদের ধারণা, কোনো নৌযানের প্রোপেলারের আঘাতে দুইদিন আগে ডলফিনটির মৃত্যু হয়েছে। এটির বয়স এক বছর হতে পারে।
এর আগে, আজ সকালে রাজশাহী কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো.
আরো পড়ুন:
একসঙ্গে বিষপানে স্ত্রীর মৃত্যু, স্বামী হাসপাতালে
সুনামগঞ্জে বজ্রপাতে কিশোরের মৃত্যু
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের সহকারী গবেষক ও প্রশিক্ষক বোরহান বিশ্বাস বলেন, “একটি ডলফিন এক বছর পর্যন্ত তার মায়ের তত্ত্বাবধানে থাকে এবং দুধ পান করে। ডলফিনের বাচ্চা জন্মের সময় সাধারণত ৭০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। মারা যাওয়া ডলফিনটি প্রায় ১০০ সেন্টিমিটার। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, প্রাণীটির বয়স এক বছরের মধ্যে।”
তিনি আরো বলেন, “রাজশাহীতে এর আগে জালে আটকে পড়ে মারা যাওয়া ডলফিনের নজির রয়েছে, তবে এই প্রথম কোনো ডলফিনের প্রোপেলারের আঘাতে মৃত্যুর ঘটনা সামনে এল। হালদা নদীতে প্রোপেলারের আঘাতে ইরাবতী ডলফিন মৃত্যুর অনেক রেকর্ড থাকলেও পদ্মা নদীতে এমন ঘটনা নতুন। এটি ‘জাঙ্গেও শুশুক’ বা নদী ডলফিন প্রজাতির।” জলজ পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষায় এই ডলফিনদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, “ডলফিনটি অন্তত দুইদিন আগে মারা গেছে। এটি গবেষণাগারে নেওয়ার উপযুক্ত অবস্থায় নেই, তাই পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এড়াতে ডলফিনটিতে মাটিতে পুঁতে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নদ ডলফ ন ডলফ ন
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েটের অচলাবস্থা কাটেনি
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অচলাবস্থা পুরোপুরি কাটেনি। উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত তা কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তি কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে শিক্ষক সমিতি। ফলে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আশা প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় যেহেতু সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী রোববারের মধ্যে তা কার্যকর হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে তারা বুধবার রাতে অনশন ভাঙেন এবং বৃহস্পতিবার বিকেলে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করেন। আপাতত তাদের কোনো কর্মসূচি নেই।
শিক্ষকরা জানান, ১৭ এপ্রিল শিক্ষক সমিতির সভা হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, যারা গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষকদের মারধর-লাঞ্ছিত করেছে এবং পরে শিক্ষকদের সাইবার বুলিং করেছে, তাদের শাস্তি দিতে হবে। এটা না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না। দায়ী শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুককে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি কার্যক্রম চালাচ্ছে।
এ ব্যাপারে কুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী এবং শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারীদের শাস্তি কার্যকর করতে হবে। এটা না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষক ক্লাসে যাবেন না। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আমরা আগামী ৩০ এপ্রিল আবার শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা করব। দায়ীদের চিহ্নিত করার পর তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কুয়েট কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
এদিকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করছেন। বৃহস্পতি ও শুক্রবার কিছু নতুন শিক্ষার্থী এসেছেন। তবে বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখনও আসেননি। ক্যাম্পাসের প্রধান গেটে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ফারুক হোসেন বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সংঘর্ষের পর কিছু শিক্ষার্থী উপাচার্যসহ ছয়-সাত শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কেউ শিক্ষকদের মারধর বা লাঞ্ছিত করেননি। শিক্ষক সমিতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন, সাধারণ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেননি। এখনও কয়েক দিন সময় আছে, শিক্ষকরা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন বলে আমরা আশাবাদী।’
কথা বলার জন্য রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমান ভূঁইয়াকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
কুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, ‘ক্লাস শুরুর কথা আগামী ৪ মে। এখনও সময় আছে। দেখা যাক, শিক্ষক সমিতির পরবর্তী সভায় কী সিদ্ধান্ত হয়।’
উল্লেখ্য, ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ছাত্রদলের নেতাকর্মী ও বহিরাগতদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। এতে দেড় শতাধিক আহত হন। ওই দিন থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা ছয় দফা দাবিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলন শুরু করেন। ১৫ এপ্রিল উপাচার্যকে অপসারণের এক দফা দাবি জানান।