সংবিধান অর্থবহ করতে বিচার আরও সহজলভ্য হতে হবে: প্রধান বিচারপতি
Published: 25th, April 2025 GMT
দেশ-জাতি নির্বিশেষে সাধারণ নাগরিকের জীবনে সংবিধানকে আরও কার্যকর ও অর্থবহ করে তুলতে হলে বিচার প্রক্রিয়াকে আরও সহজলভ্য, স্বচ্ছ এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
শুক্রবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের ৬৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশেষ অধিবেশনে এ কথা বলেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো.
বাংলাদেশের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই আয়োজন শুধু একটি ঐতিহাসিক উপলক্ষ নয়, বরং এটি সাংবিধানিক আদর্শ ও ন্যায়বিচার রক্ষার প্রতিশ্রুতির একটি প্রতীকী উদযাপন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও তুরস্কের সাংবিধানিক পথচলা ভিন্ন ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠলেও দুই দেশের অভিন্ন লক্ষ্য ন্যায়বিচার, মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে প্রধান বিচারপ্রতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের উচ্চ আদালত বিভিন্ন স্বপ্রণোদিত উদ্যোগের পাশাপাশি জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমে যে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, তা বাংলাদেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে।
আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় তিনি বলেন, বর্তমান যুগে সাধারণ মানুষের অধিকারের সুরক্ষায় সাংবিধানিক আদালতগুলোর আরও বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে, জলবায়ু ন্যায়বিচার, ডিজিটাল অধিকার ও তথ্য সুরক্ষা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও আন্তঃদেশীয় বৈষম্য মোকাবিলায় বিশ্বের প্রতিটি দেশে এমন একটি ন্যায়বিচার কাঠামো প্রতিষ্ঠা করা জরুরি- যা একদিকে নিজস্ব বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে, তেমনই বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায়ও প্রাসঙ্গিক ভূমিকা পালন করবে।
প্রধান বিচারপতি তার বক্তব্যে তুরস্কের সাংবিধানিক আদালতের প্রতি আমন্ত্রণ ও আতিথেয়তার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে তুরস্কের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও গভীর করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত রস ক ত রস ক র স
এছাড়াও পড়ুন:
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: পুষ্পস্তবক অর্পণসহ চার বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা আয়োজন
যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ ১৪ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হবে। এ উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কালো পতাকা উত্তোলন, স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও বিশেষ মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।
তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিস্মারক, গ্রাফিতি ও পোস্টার প্রদর্শনীরও আয়োজন থাকছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে এক সভায় বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়।
এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ৬টা ২০মিনিটে উপাচার্য ভবনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহে কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল সাড়ে ৬টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত, সকাল ৬টা ৩৫ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ কবরস্থান, জগন্নাথ হল প্রাঙ্গণের স্মৃতিসৌধ ও বিভিন্ন আবাসিক এলাকার স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ।
এরপর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ও রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের উদ্দেশ্যে যাত্রা। বেলা সোয়া ১১টায় উপাচার্যের সভাপতিত্বে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া বাদ আসর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ মসজিদুল জামিয়াসহ বিভিন্ন হল মসজিদ ও অন্যান্য উপাসনালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনায় দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে।
আরও পড়ুনশহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ৮ মিনিট আগেজাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
দিবসটি উপলক্ষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসান সকাল সাড়ে আটটায় পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন।
শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি ও কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হবে।
ঢাকা শহরে বসবাসকারী শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠানে যোগদানের সুবিধার্থে ঢাকার বিভিন্ন রুটে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলেও জানানো হয়।
দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, এবারও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এ ছাড়া কোনো আলোচনা সভা, শোকসভা বা অন্য কোনো কর্মসূচি নেই। বিগত বছরগুলোতেও এ ধরনের কোনো আয়োজন ছিল না।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
আজ রোববার সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বুদ্ধিজীবী চত্বরে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। সকাল সাড়ে ১০টায় শহীদদের স্মরণে ‘শোক র্যালি’ করবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বেলা ১১টায় উপাচার্য দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে ‘মুক্তচিন্তা, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যা’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের আয়োজন করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ৬টায় সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে পতাকা উত্তোলন, সকাল আটটায় সিনেট ভবন চত্বর থেকে পদযাত্রা, সকাল ৮টা ১০ মিনিটে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করবে সব বিভাগ, ইনস্টিটিউট, হল প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, অফিসার সমিতি, সহায়ক কর্মচারী সমিতি, সাধারণ কর্মচারী ইউনিয়ন, পরিবহন টেকনিক্যাল কর্মচারী সমিতি, স্কুল ও অন্যান্য সংগঠন। সকাল সোয়া ৯টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণা, সম্মাননা স্মারক প্রদান ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বাদ জোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বিশেষ মোনাজাত রয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে রয়েছে নাটক আলোর পাহারাদার। আর জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিস্মারক, গ্রাফিতি ও পোস্টার প্রদর্শনী ১৪ ডিসেম্বর শুরু হয়ে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা]