মাঠে এবং মাঠের বাইরে অসদ আচরণের জন্য মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক তাওহীদ হৃদয়কে দুই ম্যাচে নিষিদ্ধ করেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটির চাপে এক ম্যাচ শাস্তি কমানো হয়।

এই নিয়ে দেশের ক্রিকেটে ফের আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়।পদত্যাগ করেন টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এনামুল হক, পদত্যাগ করতে চান আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা সৈকত। পরবর্তীতে বিসিবি হৃদয়কে এক ম্যাচ নিষিদ্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।

নতুন করে ম্যাচ নিষিদ্ধ করায় বিষয়টি আরো খারাপের দিকে চলে যায়। শুক্রবার বিসিবিতে আসেন তামিম ইকবাল। সঙ্গে ঢাকা লিগে খেলা অধিকাংশ ক্রিকেটার। দফায় দফায় নিজেদের মধ্যে বৈঠক শেষে তারা বৈঠকে বসেন প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদের সঙ্গে।

আরো পড়ুন:

মানহীন পারফরম্যান্সে ক্রিকেট বাজারে অস্থিরতা

সিলেটে দায়িত্ব পালনকালে বিসিবির নিরাপত্তা কর্মকর্তার মৃত্যু

বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন তামিম। এ সময় হৃদয়কে এমন শাস্তি দেওয়া নিয়ে তামিম জানান, এটি হাস্যকর বিষয়।

“প্রথম কথা হলো তাওহীদ হৃদয়ের ইস্যুটা। ওর সঙ্গে মাঠে ইনসিডেন্ট হয়, ওকে দুটা ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করে। তখন কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বা কেউ এটা নিয়ে কথা বলেনি। আম্পায়ার আর ম্যাচ রেফারি মিলে তাকে সাসপেন্ড করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে আমরা মনে করতে পারি সিদ্ধান্তটা কঠোর ছিল। কিন্তু এটা নিয়ে আমরা কিন্তু কেউ কোনো কথা বলিনি।তার কিছুদিন পর দেখলাম যে দুই ম্যাচ থেকে এক ম্যাচ করা হলো। এটা বিসিবি করেছে, তখনও আমরা কেউ কোনো কথা বলিনি।”

“তারপর হৃদয় একটা ম্যাচ না খেলে তারপর দুটা ম্যাচ খেলল। স্বাভাবিকভাবে ওর যে শাস্তি ছিল, সেটা সে ভোগ করে নিয়েছে। এখন দুটা ম্যাচ খেলার পর কাল শুনলাম যে তাকে আবার নিষিদ্ধ করছে। এটা কোন রুলে, কীভাবে করছে এটা আমার কাছে জানা নেই। এটা নিয়ে আমরা খুব চিন্তিত ছিলাম। এটা হাস্যকর ছিল। কোনোভাবে সাসপেন্ড হতে পারে না যে ছেলে অলরেডি সাসপেন্ডশন হয়েছে, তাকে বিসিবি এলাউ করেছে দু ম্যাচ। তাকে আবার আপনি কিভাবে সাসপেন্ড করতে পারেন? এটা একটা আমাদের বড় পয়েন্ট ছিল।”

মোহামেডান থেকে চাপ দিয়ে শাস্তি কমানো হয়েছে কি না সেটা দেখার বিষয় না বলে মনে করেন তামিম, “মোহামেডান থেকে চাপ দিয়ে খেলানো হয়েছে কি হয়নি সেটা জরুরি না। তাকে কি বিসিবি খেলতে এলাউ করেছে! যদি করে তাহলে আবার একই কেসে কেমনে শাস্তি দেন। এটা নিয়ে আমাদের বিতর্ক হয়েছে উনাদের আমরা সুন্দর করে অবস্থান পরিষ্কার করেছি আমরা কি অনুভব করি। তারপর উনারা উনাদের মতো সিদ্ধান্ত দেবেন।”

এছাড়া গুলশান-শাইনপুকুর ম্যাচে হওয়া কাণ্ড নিয়ে তদন্তের নামে মিডিয়ার সামনে দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি করা মেনে নিতে পারেননি ক্রিকেটাররা।

তামিম বলেন, “দ্বিতীয়ত কিছুদিন আগে আপনারা দেখেছেন গুলশান আর শাইনপুকুর ম্যাচে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই জিনিসটা ক্রিকেট বোর্ডকে সরাসরি বলেছি যে দেখেন, যদি ওখানে কোনো ধরনের দুর্নীতি হয়ে থাকে বা কোনো খেলোয়াড় কোনো ধরনের ভুল করে থাকে, আমরা সবাই চাই এটার শাস্তি হোক। কিন্তু তার মানে এটা না যে আপনি ওই দুটা ছেলেকে নিয়ে গিয়ে মিডিয়ার সামনে অভিনয় করাবেন, এমনটা করার অধিকার কারোর নেই। আপনি বিশ্বের কোথাও দুর্নীতি দমন কমিশনে এমন নিয়ম নেই আপনি ওই দুটা ছেলেকে বেইজ্জত করবেন মিডিয়ার সামনে, একই জিনিসটা অভিনয় করাই। এটা খেলোয়াড়কে ইনসাল্ট করা।”

“আমরা যে কারণে সবাই একসঙ্গে হয়েছি, যেটা হলো সর্বশেষ দুই তিন মাসে কিছু কিছু ঘটনা হচ্ছে যেটা নিয়ে প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ের মনে একটা কষ্ট ছিল। খেলোয়াড়রা সবাই খুবই অখুশি”-যোগ করেন তামিম। 

ঢাকা/রিয়াদ/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ম ম ইকব ল

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েটের উপাচার্য ও সহউপাচার্যকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ ও সহউপাচার্য শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাঁরা এখন নিজ নিজ বিভাগে ফিরে যাবেন। আজ শুক্রবার এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর আগে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এই দুজনকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান আছে।

এ বিষয়ে গত বুধবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।

এর প্রতিবাদে কুয়েট শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ও সহউপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হল।

আরও পড়ুনকুয়েটে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অব্যাহতির পদক্ষেপ ন্যায়বিচারের পরাজয়: শিক্ষক সমিতি২৪ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ