প্রায় ২০ বছর ধরে গাইবান্ধা শহরের বিভিন্ন জায়গায় পত্রিকা বিক্রি করতেন আনিস মিয়া ঠান্ডা। সংসারের অতিরিক্ত ব্যয় মেটানোর জন্য সকালে পত্রিকা বিক্রির পর বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত তিনি ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চালাতেন। শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে তার রক্তাক্ত মরদেহ সড়কের পাশ থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

স্বজনদের দাবি, আনিস মিয়াকে হত্যা করে তার ইজিবাইক নিয়ে পালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। 

আনিস গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের কিশামত ফলিয়া গ্রামের মৃত হামিদ মিয়ার ছেলে।

নিহতের প্রতিবেশী সুজন মাস্টার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বিকেলে বাড়ি থেকে ইজিবাইক নিয়ে বের হন আনিস। রাত দেড়টার দিকে শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে কয়েকজন সন্ত্রাসী যাত্রী সেজে আনিসের ইজিবাইকে ওঠেন। তারা আনিসকে গাইবান্ধা স্টেডিয়ামের দিকে যেতে বলেন। সেখানে যাওয়ার পর ওই ব্যক্তিরা আনিসের কাছে ইজিবাইকের চাবি চান। চাবি না দেওয়ায়, আনিসের সঙ্গে তাদের প্রথমে ধ্বস্তাধস্তি হয়। পরে তারা ছুরি দিয়ে আনিসের পেটে আঘাত করেন। আনিসকে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে তারা ইজিবাইক নিয়ে পালিয়ে যান। 

শুক্রবার ভোরে এক পথচারী আনিসকে অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তাকে চিনতে পারেন এবং বাড়িতে খবর দেন। পরে তাকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেন তিনি। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে  চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য আনিসকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৯টার দিকে আনিস মারা যান। 

নিহতের চাচাতো ভাই রুহিল মিয়া  জানান, আনিসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখেছে রংপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করবে তারা। লাশ দাফনের পর গাইবান্ধায় হত্যা মামলা করবে পরিবার। 

গাইবান্ধা পত্রিকা বিতানের স্বত্তাধিকারী আব্দুর রহমান জানান, আনিস দীর্ঘদিন ধরে গাইবান্ধা শহরে পত্রিকা বিক্রি করতেন। তিনি ভালো মানুষ ছিলেন।  হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

গাইবান্ধা সদর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, “স্টেডিয়াম এলাকায় এক যুবক সন্ত্রাসীদের আঘাতে মারা গেছেন বলে খবর পেয়েছি। কোনো অভিযোগ পাইনি।  অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/মাসুম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েটের উপাচার্য ও সহউপাচার্যকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদ ও সহউপাচার্য শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাঁরা এখন নিজ নিজ বিভাগে ফিরে যাবেন। আজ শুক্রবার এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর আগে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, এই দুজনকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান আছে।

এ বিষয়ে গত বুধবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট নিরসন এবং শিক্ষা কার্যক্রম দ্রুত শুরু করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সহ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়। ওই দিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়।

এর প্রতিবাদে কুয়েট শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। তাঁরা কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ও সহউপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হল।

আরও পড়ুনকুয়েটে উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে অব্যাহতির পদক্ষেপ ন্যায়বিচারের পরাজয়: শিক্ষক সমিতি২৪ এপ্রিল ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ