ভিসা বাতিলের পর কোনো পাকিস্তানি নাগরিক যাতে ভারতে থাকতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে আজ শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। মুখ্যমন্ত্রীদের ফোন করে তিনি বলেছেন, ভিসা বাতিলের পর পাকিস্তানিদের শনাক্ত করে যেন দ্রুত ফেরত পাঠানো হয়।

কাশ্মীরের পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা পর্যটকদের হত্যার পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ভারত। সেসব ব্যবস্থার অন্যতম হচ্ছে পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল করা। সাধারণ নাগরিকদের ভিসা বাতিল কার্যকর হচ্ছে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ৪৮ ঘণ্টা পর আজ শুক্রবার রাত থেকে। মেডিকেল ভিসা নিয়ে যাঁরা চিকিৎসার জন্য ভারতে এসেছেন, তাঁদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে ২৯ এপ্রিলের পর।

এই দুই ক্যাটাগরির ভিসাসংক্রান্ত দুই নির্দেশ যাতে যথাযথভাবে কার্যকর করা হয়, সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীদের তৎপর হতে বলেছেন অমিত শাহ। ফোন করে তাঁদের বলেছেন, বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে কার্যকর করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের পর পাকিস্তানি নাগরিকেরা যাতে দেশে থাকতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই নির্দেশ প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয় থেকে অবশ্য কোনো মন্তব্য করা হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতিও জারি করা হয়নি। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই নির্দেশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, অমিত শাহ নিজে ফোন করে মুখ্যমন্ত্রীদের ওই নির্দেশ দিয়েছেন।

পেহেলগামে যে বন্দুকধারীরা গত মঙ্গলবার ওই হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, তাদের কাউকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি। যদিও কয়েকজনের স্কেচ সরকার প্রকাশ করেছে। খোঁজ দিতে পারলে প্রত্যেকের জন্য ২০ লাখ ভারতীয় রুপি পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে। বন্দুকধারীদের পরিচয়ও দেওয়া হয়েছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ওই চার হামলাকারীর একজন আসিফ শেখ। তাঁর বাড়িতে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বিস্ফোরণ ঘটে। অন্যজন আদিল হুসেন ঠোকরের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। দুটি বাড়িই দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায়।

আসিফের বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় নাকি ঘটেছে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু জানা যায়নি। তবে পেহেলগামে হত্যাকাণ্ডের পর বিহারে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন, জঙ্গিদের খুঁজে বের করে কল্পনাতীত শাস্তি দেওয়া হবে। ওই মন্তব্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দুজনের বাড়ি ভাঙা পড়ল। সরকারের দাবি, দুজনেই নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর–ই–তাইয়েবার সদস্য।

নিরাপত্তা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে ৪–৫ জন বন্দুকধারী কী করে পেহেলগাম পৌঁছাল এবং হামলা চালাল, তা ক্রমে প্রকাশ্য। যদিও প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, সেনার নজর এড়াতে গভীর জঙ্গলের মধ্য দিয়ে হেঁটে হামলাকারীরা বৈসারন পৌঁছেছিল। পথ না হারাতে তারা ব্যবহার করেছিল এক বিশেষ অ্যাপ। সেই অ্যাপের নাম ‘আল্পাইন কোয়েস্ট’। এই অ্যাপ ব্যবহারের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণও নিতে হয়েছে জঙ্গিদের।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

টাঙ্গাইলে জামাই মেলায় দর্শনার্থীদের ঢল

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুরে শুরু হয়েছে দেড়েশ বছরের ঐতিহ্যবাহী জামাই মেলা। রসুলপুর বাছিরননেছা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) শুরু হওয়া এ মেলা চলবে রবিবার (২৭ এপ্রিল) পর্যন্ত। মেলাকে কেন্দ্র করে আজ স্কুল মাঠে মানুষের ঢল নেমেছিল।

এলাকাবাসী ও মেলার আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর ১১, ১২ ও ১৩ বৈশাখ (সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে) রসুলপুরে জামাই মেলার আয়োজন করা হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে আশপাশের অন্তত ৩০ গ্রামের বিবাহিত মেয়েরা তাদের স্বামীকে নিয়ে বাবার বাড়ি আসেন। মেলা উপলক্ষে জামাইকে বরণ করে নিতে শ্বশুর-শাশুড়িরাও আগে থেকেই নেন নানা প্রস্তুতি।

ঐতিহ্য অনুযায়ী মেলার সময় শাশুড়িরা মেয়ের জামাইয়ের হাতে টাকা দেন। সেই টাকার সঙ্গে জামাইরা তাদের টাকা দিয়ে মেলা থেকে শ্বশুরবাড়ির সবার জন্য বাজার করেন। মেলাটি সবাই খুব উপভোগ করেন।  

আরো পড়ুন:

মহেশপুরে চড়ক পূজায় পুণ্যার্থীদের ঢল

খানজাহান আলীর মাজারে মেলা শুরু, ভক্তদের ঢল

এদিকে, মেলায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন দোকানিরা। মেলায় বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনী, খাবার ও মিষ্টির দোকান বসেছে। বৈশাখের ভ্যাপসা গরমের মধ্যেও শুক্রবার মেলায় এসেছিলেন হাজারো মানুষ। 

মিলন মাহমুদ নামে এক দর্শনার্থী বলেন, “মেলাটি জামাই মেলা নামে পরিচিত। মেলাটিকে কেন্দ্র করে এই এলাকার জামাইরা একত্রিত হয়। এমন মেলায় আসতে পেরে আমি আনন্দিত।”  

রসুলপুরের বাসিন্দা ও লেখক রাশেদ রহমান বলেন, “প্রায় দেড়শ বছর ধরে এই মেলার আয়োজ করা হচ্ছে। এলাকার মানুষের কাছে ঈদ বা পূজার মতোই এই মেলা একটি উৎসব। মেলাটি বৈশাখী মেলা হিসেবে শুরু হলেও এখন এটি জামাই মেলা হিসেবে পরিচিত।”

মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব আনিসুর রহমান বলেন, “মেলা সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসেছেন দোকানিরা। তারা খাবার, মিষ্টিসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা, প্রসাধনীর দোকান দিয়েছেন। মেলায় একাধিক ফার্নিচারের দোকানও বসেছে।  রসুলপুরের এই মেলাটি বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম। আগামী রবিবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ মেলা শেষ হবে। তিনদিনে মেলায় দুই কোটি টাকার ওপরে বাণিজ্য হবে।”

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ