বিদেশিরা বিনিয়োগ করলেও দেশ অগ্রাধিকার পাবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমরা যা-ই করি না কেন, রাষ্ট্রের স্বার্থ সংরক্ষণ করে, দেশের মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ করেই করা হবে।’

গতকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ মো. ফজলুর রহমান মুন্সী মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ১৩৮ তম চট্টগ্রাম বন্দর দিবস উপলক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘যা-ই করা হোক না কেন সবার আগে দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। আমরা এখানে যারা আছি, কেউই কিন্তু পার্মানেন্ট না। কাজেই আমাদের হাত দিয়ে যে কাজটা হবে, সেটা দিয়ে দেশ এবং দেশের মানুষ যেন উপকৃত হয়, রাষ্ট্রের যে স্বার্থ সেটা যেন নিশ্চিত হয়। সেটা নিশ্চিত করেই সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘বে-টার্মিনালে যেটা হবে, সিসিটি-ওয়ান যেটা হবে, সেটা করবে সিঙ্গাপুর। সিসিটি-টু করবে ডিপি ওয়ার্ল্ড (দুবাইয়ের প্রতিষ্ঠান)। ঠিক একইভাবে এনসিটির জন্য গভর্নমেন্ট লেভেলের নির্দেশনা অনুযায়ী যে চুক্তি হয়েছে, সে অনুসারে কাজ চলমান আছে। এটায় দুই দেশের কমিটমেন্ট অনুসারে কাজ চলছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। এটার নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও ফাইনালাইজ হয়নি। আমাদের ট্রানজ্যাকশন অ্যাডভাইজার আছে, তাদের কাজ চলমান, প্রতিবেদন পেলে বুঝতে পারব।’ 

বিদেশি অপারেটর নিয়োগ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘এনসিটি (নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল) ও সিসিটি (চিটাগং কনটেইনার টার্মিনাল) দিয়ে দেয়ার একটা কথা বলা হচ্ছে। এগুলো আসলে বিভ্রান্তিকর কথা। আমরা এনসিটির মালিকানা কাউকে দিয়ে দিচ্ছি না। আপনি যদি একটা বিল্ডিং বানান, যদি সেটা ভাড়া দেন, এটাও ঠিক ওরকমই। মালিকানা আমাদেরই থাকছে, আমরা শুধু তাদের (বিদেশি প্রতিষ্ঠান) টার্মিনালের অপারেটর হিসেবে নিয়োগ করছি, যেমনটা আমরা পিসিটিতে (পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল) করলাম।’ 

বন্দর চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘আমাদের টার্গেট হচ্ছে, ভবিষ্যতে জাহাজ ও কনটেইনার ভাড়া কত কমানো যায় আর কত দক্ষতা বাড়ানো যায়। এজন্য ফরেন টার্মিনাল অপারেটরদের দিলে কম্পিটিশন বাড়বে, তারা কার্গো জেনারেট করবে এবং রিজিওনাল হাব হিসেবে ব্যবহার হবে। এখান থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট হবে, কোস্টাল কানেক্টিভিটি স্টাবলিশ হবে। নিজেরা করলে এসব অ্যাডভান্টেজ তো আমরা নিতে পারবো না। কিন্তু উনারা যেহেতু ইনভেস্ট করবেন, উনারা এটাকে আরও এফিশিয়েন্ট করার চেষ্টা করবেন। আমাদের কনটেইনার হ্যান্ডলিং রেট যে হারে বাড়ছে, কিন্তু ভবিষ্যতে কনটেইনারাইজেশনে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে অত্যন্ত আধুনিক টেকনোলজি লাগবে। আমাদের সিসিটি-এনসিটিতে যে ইক্যুইপমেন্টগুলো আছে, সেগুলোর বয়স অলরেডি শেষের দিকে। তাই সবদিক ভেবেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্ম বড় সম্ভাবনা। তাই তাদের কর্মসংস্থান করতে হবে। চট্টগ্রাম থেকে কঙ্বাজার হবে সিঙ্গাপুর। বিনিয়োগকারীও এজন্য প্রস্তুত। আমরা এক নম্বর তুলা ব্যবহারকারী দেশ। ফ্রি ট্রেড জোন করতে পারলে দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হবে। বছরে ১০-১২ বিলিয়ন ডলার আয় হবে। বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, শিল্পাঞ্চল থাকায় এ জোন চট্টগ্রামে হওয়া যৌক্তিক।’ 

সভায় তিনি জানান, বন্দরে ইউএস এইডের অর্থায়নে রেফার কনটেইনার ইয়ার্ড ও কোল্ড স্টোরেজ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বে টার্মিনাল হলে টানেলের ব্যবহার বেড়ে যাবে। ৬৬৩ জনকে পদোন্নতি এবং ৩৬৩ জন নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি বন্দর যাতে ব্যবহারবান্ধব হয়। ১৬ মিটার ড্রাফট মেইনটেইনের উপযোগী দুইটি ড্রেজার কিনবে বন্দর।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র আম দ র এনস ট

এছাড়াও পড়ুন:

প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেন চবি অধ্যাপক 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) পরিচালিত প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক এসএম নছরুল কদির।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-১) সিনিয়র সহকারী সচিব এএসএম কাশেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা ৩১(১) অনুযায়ী চবির ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম নছরুল কাদিরকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

মহাসড়ক অবরোধ করে অপহৃত চবি শিক্ষার্থীদের মুক্তি দাবি

অনশনে অসুস্থ চবির ২ শিক্ষার্থী

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, তার নিয়োগের মেয়াদ হবে যোগদানের তারিখ থেকে চার বছর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারিত বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধাদি প্রাপ্ত হবেন এবং আইন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন। তবে রাষ্ট্রপতি ও আচার্য যেকোনো সময় এ নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে পারবেন।

চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ পদ পূরণের জন্য মোট নয়জনের নাম প্রস্তাব করে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় চসিক। 

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর শিক্ষার্থীর আন্দোলনের মুখে গত ৬ ডিসেম্বর উপাচার্য অনুপম সেনের পদত্যাগের পর থেকেই গুরুত্বপূর্ণ এ পদটি শূন্য ছিল।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হলেন চবি অধ্যাপক