নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের মামলায় উচ্চ আদালতের দেওয়া রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন করেছে নিহতদের স্বজনরা। শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের সহধির্মিনী ও নাসিক ২ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সেলিনা ইসলাম বিউটি, নুর মোহাম্মাদ ও আবুল খায়েরসহ অন্যান্যরা। বক্তারা অবিলম্বে উচ্চ আদালতের রায় কার্যকরের দাবি জানান।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র-২ নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে। সাতজনকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল দুটি মামলা দায়ের করেন।

হত্যাকাণ্ডের ১১ মাস পর ২০১৫ সালের ৮ এপ্রিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা নারায়ণগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশ দুটি মামলার অভিন্ন চার্জশিট আদালতে দাখিল করেন। চার্জশিটে নাসিক ৪ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি নুর হোসেন, র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে.

কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মাদ, সাবেক কোম্পানি কমান্ডার মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার মাসুদ রানাসহ ৩৫ জনকে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের একটি আদালত দণ্ড প্রদান করেন। এর মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেন আদালত।

উচ্চ আদালতে ২৬ জনের মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ১১ জনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন। বাকী ৯ জনকে দেওয়া কারাদণ্ডের রায় উচ্চ আদালত বহাল রাখেন। মামলাটি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন বলে জানা গেছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জন র ম ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজার থানার সেই ওসি এনায়েত অবশেষে বদলি

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেনকে অবশেষে ফরিদপুর জেলায় বদলি করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি একেএম আওলাদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে ফরিদপুর জেলায় বদলি করা হয়। জনস্বার্থে এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয় ওই আদেশে।

বদলি আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) মেহেদী ইসলাম।

এর আগে গত ১৮ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ওসির টাকা নেওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওতে দেখা যায়, জিডি বা অভিযোগের কাগজের সঙ্গে স্টেপলার করে রাখা কিছু টাকা হাতে নিয়ে ওসি এনায়েত হোসেন এক ব্যক্তির উদ্দেশে বলছেন, ‘এই টাকা দিলে মানসম্মান থাকে?’ এ সময় তার সামনে আরও দু-তিনজন ব্যক্তিকে বসে থাকতে দেখা যায়। আর ওসি এনায়েত হোসেন তার থানার কক্ষে চেয়ারে বসা অবস্থায় ছিলেন।

জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে আড়াইহাজার উপজেলার খাগকান্দা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বেলায়েত হোসেনের সঙ্গে ওসির কথোপকথনের ওই ভিডিও কেউ একজন ধারণ করেন। কোনো একটি বিষয়ে জিডি বা অভিযোগ করতে গেলে তাদের এ কথা হয়।

এই ঘটনা তদন্তে পৃথক দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৯ এপ্রিল দিনব্যাপী দুই কমিটির সদস্যরা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা শেষে প্রতিবেদন জমা দেন। এ রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরই তাকে তাকে বদলি আদশ দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে আড়াইহাজারে তার যোগদানের পর থেকে উপজেলা ব্যাপী চুরি ডাকাতি ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায় । তাছাড়া তার বিরুদ্ধে নিরীহ মানুষদের হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এনায়েত হোসেন থানায় যোগদানের পর থেকেই নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি তার ঘুষ গ্রহণের একটি (ভিডিও) ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এনিয়ে তিনি বেশ বিতর্কের মুখে পড়েন। 

এছাড়াও সম্প্রতি স্থানীয় দুপ্তারা বাজারে মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পারভীন আক্তারের রাজনৈতিক তোরুণ নির্মাণকে কেন্দ্র করে ওসি এনায়েত হোসেন আইনী সহযোগিতা না করে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। 

ফাঁকা গুলিসহ খোকন নামে এক কর্মীকে মেরে ফেলার হুমকী দেয় স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ওসি কোন প্রকার আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। পরে সন্ত্রাসীরা আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েন।

এক পর্যায়ে খোকনের ভাড়াবাড়িতে ভাংচুর ও ফাঁকা গুলি করে সন্ত্রাসীরা। পরে খোকন তার এসএসসি পরীক্ষার্থী ছেলেসহ পুরো পরিবার নিয়ে প্রাণ ভয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেয়। 

এ ঘটনায় পুলিশ প্রধান ও স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবর ১৫ এপ্রিল বেবী আক্তার নামে এক নারী লিখিত অভিযোগ দেন।

এ ঘটনায় ২০ এপ্রিল জাতীয় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় “সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এসএসসি পরীক্ষাথীসহ পুরো পরিবার” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। 

অপর আরেক ঘটনায় জেলা যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পারভীনের (পিএস) সালাউদ্দিন মোল্লা নামে এক ব্যক্তি পুলিশ প্রধান ও স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবর আরেকটি লিখিত অভিযোগ দেন। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আলোচিত ৭ খুন মামলার উচ্চ আদালতের রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন
  • নারায়ণগঞ্জে ৭ খুন: মামলার রায় দ্রুত কার্যকর করার দাবিতে স্বজনদের মানববন্ধন
  • ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের এক বন্দীর মৃত্যু
  • ‘এই টাকা দিলে মান-সম্মান থাকে?’ বলা সেই ওসিকে বদলি
  • শীতলক্ষ্যা নদী রক্ষার্থে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাথে নদী ভাবনা
  • সোনারগাঁয়ে জামায়াতের ব্যাপক গণসংযোগ
  • আড়াইহাজার থানার সেই ওসি এনায়েত অবশেষে বদলি
  • নাগরিক সমস্যা সমাধানের দাবিতে শহরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মানববন্ধন
  • নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহসহ তিন দফা দাবিতে নারায়ণগঞ্জে নগর ভবনের সামনে ইসলামী আন্দোলনের মানববন্ধন