স্ত্রীকে হত্যার পর সেপটিক ট্যাংকে লাশ ফেলে ইমামতি করতে যান মোমিন
Published: 25th, April 2025 GMT
শতবর্ষী মায়ের সেবাযত্ন না করায় স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন মসজিদের ইমাম আব্দুল মোমিন (৬৮)। হত্যার পর লাশ ফেলে আসেন সেপটিক ট্যাংকে। এরপর মসজিদে চলে যান ফজরের নামাজ পড়াতে।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা ইউনিয়নের ধনুসাড়া গ্রামে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ৬৫ বছর বয়সী শাহিদা বেগমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) চৌদ্দগ্রাম থানায় সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দীন আহমেদ।
শাহিদার ছেলে মাছুম বিল্লাহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাক্ষী করা হয় ইমাম আব্দুল মোমিনকে। তবে, তদন্তকালে পুলিশের সন্দেহ হলে ২৭ মার্চ মোমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। রিমান্ড শেষে বুধবার (২৩ এপ্রিল) আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন তিনি।
জবানবন্দিতে আব্দুল মোমিন জানান, তার মা আতর বানুর বয়স ১৩০ বছরের কাছাকাছি। চলাফেরা করতে না পারলেও তিনি সুস্থ। মায়ের সেবাযত্ন নিয়ে স্ত্রী শাহিদার সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এক রাতে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তিনি বালিশ দিয়ে স্ত্রীর মুখ চেপে ধরেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার স্ত্রী নিস্তেজ হয়ে যান। তিনি ভোররাতে স্ত্রীর লাশ কাঁধে করে বাড়ির পাশের শৌচাগারের সেপটিক ট্যাংকে ফেলে দেন। নিজের পোশাক খুলে রেখে গোসল সেরে মসজিদে গিয়ে ফজরের নামাজ পড়ান। বাসায় ফিরে ছেলেকে ফোন করে বলেন, “তোমার মাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।”
সকালে পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খুলতেই বিবস্ত্র অবস্থায় শাহিদার লাশ দেখতে পান। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হেশাম উদ্দিন বলেছেন, “আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিতে মোমিন একাই স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে।”
ঢাকা/রুবেল/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টিকটকে বিরোধ: যশোর থেকে কালীগঞ্জে গিয়ে ২ কিশোরকে ছুরিকাঘাত
টিকটকে বিরোধের জেরে যশোর থেকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে গিয়ে দুই কিশোরকে ছুরিকাঘাতে জখম করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রিয়াজ হোসেন ও জিহাদ নামে দুইজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের মোবারকগঞ্জ চিনিকল স্কুল মাঠে ঘটনাটি ঘটে। কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আহতরা হলেন- কালীগঞ্জ পৌরসভার বলিদাপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেনের ছেলে ইফতেখার আনোয়ার প্রেম (১৫) ও তার বন্ধু মোবারকগঞ্জ চিনিকলের সাবেক ব্যবস্থাপক (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদুর রহমানের ছেলে নাজমুস সাকিব হিমেল (১৫)। তারা এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
আরো পড়ুন:
সালিশে দাওয়াত না দেওয়ায় হামলার অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে
নড়াইলে প্রতিপক্ষের হামলায় বিএনপি নেতার হাত বিচ্ছিন্ন
আটক রিয়াজ ওরফে ট্যাটু রিয়াজ যশোর পুলিশ লাইন এলাকার নান্নু মিয়ার ছেলে। অপর জনের নাম জিহাদ। ঘটনার সঙ্গে সম্পক্ত না থাকায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
এলাকাবাসী জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটকে কালীগঞ্জের হিমেল ও যশোরের রিয়াজ একে অপরকে হুমকি দিতেন। এরই জেরে যশোর থেকে রিয়াজ ও তার এক বন্ধু কালীগঞ্জের মোবারকগঞ্জ চিনিকল কলোনীতে যান। তারা এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। পরে তারা মোবারকগঞ্জ চিনিকল স্কুল মাঠে যান।
সেখানে রিয়াজ ও হিমেলের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এরই একপর্যায়ে পকেট থেকে ছুরি বের করে হিমেলকে জখম করেন রিয়াজ। ইফতেখার আনোয়ার প্রেম ঠেকাতে গেলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। তাদের চিৎকারে এলাকার লোকজন রিয়াজকে ছুরিসহ আটক করে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হৃদয় হোসেন বলেন, “আজ বিকেলে ছোটভাইদের সঙ্গে স্কুল মাঠে বসে ছিলাম। এসময় হিমেল সেখানে আসে। যশোর থেকে আসা দুই যুবক এসে হিমেলের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। ঠেকিয়ে দিলে যশোর থেকে আসা যুবকরা মিলের মধ্যে এক আত্মীয়ের বাসায় যায়। এরপর আবার ফিরে এসে হিমেলকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন রিয়াজ। তখন তাদের মধ্যে মারামারি শুরু হয়। একপর্যায়ে রিয়াজ পকেট থেকে ছুরি বের করে চালাতে থাকেন। দেখি, হিমেল ও প্রেমের পায়ে ছুরির আঘাত লেগেছে। তাদের পা দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। পরে তাদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান স্থানীয়রা।”
কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, “আটক রিয়াজের কাছ থেকে একটি চায়না ছুরি জব্দ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকায় আটক অপর যুবককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।”
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ