রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে বাবাকে খুনের ঘটনায় আরও ২ জন গ্রেপ্তার
Published: 25th, April 2025 GMT
রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবাকে খুনের ঘটনায় করা মামলায় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলা ও রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন রাজশাহী নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার বিশাল (২৫) ও নাহিদ (২৫)। ওই মামলায় বিশাল ২ ও নাহিদ ৬ নম্বর আসামি। আজ শুক্রবার সকালে র্যাব-৫–এর অধিনায়কের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুনমেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে বাবা খুন: প্রধান আসামি ও এক সহযোগী গ্রেপ্তার১৯ এপ্রিল ২০২৫এর আগে ১৮ এপ্রিল রাতে নওগাঁ সদর উপজেলা থেকে মামলার প্রধান আসামি নান্টু (২৮) এবং তাঁর সহযোগী ও মামলার ৩ নম্বর আসামি খোকন মিয়াকে (২৮) গ্রেপ্তার করা হয়। একই দিন বিকেলে রুমেল (২৫) নামের আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ মামলায় আজ সকাল পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
এর আগে ১৬ এপ্রিল মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা আকরাম আলী (৪৫) ও ভাই ইমাম হাসানকে মারধর করা হয়। আহত অবস্থায় আকরামকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিনি রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন। তাঁর মেয়ে রাফিয়া আলফি এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। বাবার লাশ রেখে পরদিন সকালে সে পরীক্ষায় বসে।
আরও পড়ুনরাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে বাবা খুনের মামলায় প্রধান আসামির সহযোগী গ্রেপ্তার১৮ এপ্রিল ২০২৫এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ছেলে হাসান ইমাম পরদিন দুপুরে নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার নান্টু (২৮), বিশাল (২৮), খোকন মিয়া (২৮), তাসিন হোসেন (২৫), অমি (২০), নাহিদ (২৫) ও শিশির (২০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি আসামি নান্টু তাঁর স্ত্রীকে মারধর করেন। ওই নারী আকরাম আলীর স্ত্রীর আত্মীয়। মারধরের প্রতিবাদ করেছিলেন আকরামের স্ত্রী। এতে ক্ষিপ্ত হন নান্টু। তিনি আকরামের মেয়ে ও ছেলের ক্ষতি করার হুমকি দেন। এর পর থেকে নান্টু বখাটেদের দিয়ে আকরাম আলীর মেয়ে রাকিয়াকে উত্ত্যক্ত করাতেন। একপর্যায়ে নান্টু নিজেই রাফিয়াকে গালিগালাজ করেন। আকরাম এ বিষয়ে নান্টুর মা-বাবার কাছে নালিশ করেন। ১৬ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে নান্টু ও তাঁর সহযোগীরা নগরের তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় আকরাম ও তাঁর ছেলে হাসান ইমামের ওপর হামলা করেন। এ সময় ইটের আঘাতে গুরুতর জখম হন আকরাম। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত ১১টার দিকে তিনি মারা যান।
আরও পড়ুনউত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা খুন, লাশ রেখে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রে মেয়ে১৭ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর সহয গ আকর ম
এছাড়াও পড়ুন:
আগৈলঝাড়ায় র্যাবের ওপর হামলার ঘটনায় দুই মামলা
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় র্যাব-৮-এর মাদকবিরোধী অভিযানে র্যাবের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার র্যাব-৮-এর ডিএডি শেখ রিয়াজুল ইসলাম বাদী হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। এতে পলাতক দু’জনসহ অজ্ঞাত ১৫ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকলেও সেগুলো বন্ধ রয়েছে।
বরিশাল র্যাব-৮-এর মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালে গত সোমবার সন্ধ্যায় গোলাগুলির সময় উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট গ্রামের রিপন মোল্লার ছেলে সিয়াম মোল্লার (১৮) নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হন একই গ্রামের খালেক মোল্লার ছেলে রাকিব মোল্লা। মাদক কারবারিদের হামলায় আহত হন র্যাব সদস্যসহ তিনজন।
নিহত সিয়াম মোল্লার চাচাত বোন কলেজছাত্রী মীম আক্তার জানান, সিয়াম কারফা আইডিয়াল কলেজে এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিল। সোমবার সে সারাদিন ঘরেই ছিল। বিকেলে মামাত ভাই রাকিব মোল্লাকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর আমরা এ সংবাদ পাই। গতকাল দুপুর পর্যন্ত সিয়ামের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছায়নি। তার মা জোসনা বেগম ছেলের শোকে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
চলতি এসএসসি পরীক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ রাকিব মোল্লার সহপাঠী আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা সাহেবের হাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে বারপাইকা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছি। সোমবার রাকিব আর আমি একই সঙ্গে পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরেছি। সন্ধ্যায় শুনি রাকিব গুলিবিদ্ধ হয়।’
নাম না প্রকাশের শর্তে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, পার্শ্ববর্তী রশিদ হাওলাদারের ছেলে দুলাল হাওলাদারের পরিত্যক্ত বাড়িতে মাদকসেবীদের নিয়মিত আড্ডা বসত। বর্তমানে ওই বাড়িতে তাঁর পরিবার থাকায় মাদকসেবীরা সেখানে বসতে পারছে না।
র্যাবের মামলার প্রসঙ্গে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মো. অলিউল ইসলাম বলেন, মাদকবিরোধী অভিযানে গোলাগুলির ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় পৃথক মামলা করেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।