আহতদের বাঁচাতে এগিয়ে আসা সাজ্জাদ বললেন ‘ধর্মের আগে মানবতা’
Published: 25th, April 2025 GMT
ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে বিভিন্ন পক্ষ। তবে, এর মাঝেও আশার আলো ছড়িয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন মুসলিম যুবক। তাদেরই একজন সাজ্জাদ আহমেদ বাট।
তিনি কাশ্মীরের শাল বিক্রেতা। ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে’র সঙ্গে আলাপকালে সাজ্জাদ আহমেদ বলেন, ‘‘আমার কাছে ধর্মের আগে মানবিকতা, মানবতা।’
তিনি বলেন, ‘‘পহেলগাঁও পনি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল ওয়াহিদ ওয়ান একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে এই ঘটনা জানালে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। বিকেল ৩টার দিকে সেখানে পৌঁছাই। আহতদের পানি খাওয়াই এবং যারা হাঁটতে পারছিলেন না তাদের কাঁধে তুলে নিয়ে আসি। তাদের অনেককে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’’
আরো পড়ুন:
নিয়ন্ত্রণ রেখাজুড়ে পাকিস্তানের ‘গুলিবর্ষণ’, ভারতের পাল্টা জবাব
ভারত সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করায় কতটা সংকটে পড়বে পাকিস্তান?
সাজ্জাদ বলেন, ‘‘পর্যটকদের কাঁদতে দেখে আমারও চোখ ভিজেছে। কারণ এরাই আমাদের অন্নসংস্থানে সাহায্য করে। এই পর্যটকদের ছাড়া আমাদের জীবন অসম্পূর্ণ।’’
সূত্র: এবিপি আনন্দ
ঢাকা/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
হামলাকারীদের ‘পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত’ তাড়া করে খুঁজে বের করব: নরেন্দ্র মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, হামলাকারী ও তাদের মদদদাতাদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হবে। ওই হামলায় অংশ নেওয়া বন্দুকধারীদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক বলে শনাক্ত করেছে ভারতীয় পুলিশ।
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য বিহারে এক সমাবেশে মোদি কাশ্মীরের পেহেলগামে নিহত ২৬ জনের স্মরণে হাত জোড় করে প্রার্থনা করেন। তিনি উপস্থিত হাজারও মানুষকে নিহত ব্যক্তিদের জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানান।
হামলাকারীদের পরিচয় বা পাকিস্তানের নামোল্লেখ না করে মোদি বলেন, ‘আমরা হামলাকারীদের “পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত” তাড়া করে খুঁজে বের করব।’
কাশ্মীরের পেহেলগাম এলাকায় পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলায় জড়িত সন্ত্রাসবাদীদের এবং তাদের সহযোগীদের শাস্তি দিতে ভারত সব জায়গায় খুঁজে বের করবে। পুলিশের তথ্যে জানা গেছে, ‘হামলাকারীদের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি। আমরা তাদের পৃথিবীর শেষ প্রান্ত পর্যন্ত তাড়া করব।’ যদিও তিনি হামলাকারীদের পরিচয় বা পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করেননি।
তবে মোদির এমন মন্তব্য পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে ভারত বুধবার রাতে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক সংকুচিত করার পর। ওই দিন ভারত ছয় দশকের পুরোনো পানিচুক্তি স্থগিত এবং দুই দেশের একমাত্র স্থলসীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের বিদ্যুৎমন্ত্রী আওয়াইস লেখারি ভারতের সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করাকে ‘জলযুদ্ধ ঘোষণা’র শামিল বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এ পদক্ষেপ ‘কাপুরুষোচিত ও অবৈধ’।
কাশ্মীর পুলিশের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে হামলার সঙ্গে জড়িত দাবি করে তিনজন সন্দেহভাজন হামলাকারীর নাম ও স্কেচ প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে।
পুলিশের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এ তিনজনের মধ্যে দুজন পাকিস্তানি নাগরিক। তবে কীভাবে তাদের শনাক্ত করা হয়েছে, তা তারা উল্লেখ করেনি।
ভারত কাশ্মীরের একাংশ ও পাকিস্তান আরেকাংশ নিয়ন্ত্রণ করলেও দুই দেশই পুরো অঞ্চলটি নিজেদের বলে দাবি করে থাকে।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বুধবার বলেন, বুধবার মন্ত্রিসভা নিরাপত্তা কমিটিকে ওই হামলায় আন্তসীমান্ত সংযোগের বিষয়টি সম্পর্কে ব্রিফ করা হয়েছে। এই হামলাকে গত দুই দশকে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই কর্মকর্তা এসব সংযোগের কোনো প্রমাণ বা বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেননি।
মিশ্রি আরও বলেন, ইসলামাবাদ থেকে তাদের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাদের প্রত্যাহার করে নিচ্ছে ভারত। একই সঙ্গে দূতাবাসের কর্মী সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের মতে, ভারত নয়াদিল্লির পাকিস্তানি দূতাবাসের প্রধান কূটনীতিককে তলব করেছে। মিশ্রি ঘোষিত পদক্ষেপগুলোর একটিতে পাকিস্তানি দূতাবাসে থাকা সব প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাকে অবাঞ্ছিত ব্যক্তি (পারসোনা নন গ্রাটা) ঘোষণা করে এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মোদি আজ বৃহস্পতিবার সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছে। এতে হামলার জবাবে মোদি সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো সম্পর্কে বিরোধী সব দলকে জানানো হবে।